গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
গোলাপগঞ্জে দেলোয়ার হোসেন (৩৫) নামে এক রাজমিস্ত্রি ঠিকাদার এক সপ্তাহ থেকে নিখোঁজ রয়েছে। স্বজনরা রয়েছেন চরম উৎকণ্ঠায়। নিখোঁজ হওয়া দেলোয়ারের পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন দিলু নির্মাণ কাজের (পাকা কাজ) ঠিকাদারী করে আসছিলেন দীর্ঘদিন থেকে। তিনি উপজেলা ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় কাজ রেখে মিস্ত্রি দিয়ে করাতেন। সর্বশেষ সিলেট নগরীর মাছিমপুর এলাকায় তিনি কাজ রেখে করছিলেন। এর সুবাধে তার পরিচিত দুই ব্যক্তি তাকে ফুঁসলিয়ে শুক্রবার (১৫ মার্চ) কাজের কথা বলে সিলেট থেকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এর পর তার বাড়ীর লোকজনদের সাথে প্রথমে দুইবার ফোনে কথা বলেলও বর্তমানে বন্ধ রয়েছে তার ব্যবহ্নত মোবাইল ফোনটি। তার পরিবারের লোকজন অনেক চেষ্টা করেও তার সাথে কোন ধরণের যোগাযোগ করতে পারছেন না। বর্তমানে সে কোথায় আছে, বিভাবে আছে- এনিয়ে তার পরিবারের লোকজন রয়েছেন চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে দেলোয়ার হোসেন দিলুর পরিবারের লোকজন খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে এখন শুধু কান্নাকাটি করছেন। যেকোন উপায়ে তারা দেলোয়ারকে জীবিত অবস্থায় ফেরৎ চায়। নিখোঁজ দেলোয়ার হোসেনের সাহাদাত হোসেন নামে ৭ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছেন। দেলোয়ার হোসেন নিখোঁজের পর থেকে তার মা সুফিয়া বেগম ও বাবা আব্দুল করিম সহ পরিবারের লোকজনদের কান্নায় এলাকার আকাশ-বাতাশ ভারী হয়ে উঠছে। তার স্ত্রী ছাবিনা বেগম বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। বর্তমানে এ পরিবারের লোকজন অনেকটা বন্ধ করে দিয়েছেন খাওয়া-দাওয়া। ছুলোয়ও জ্বলছেনা আগুণ। বৃহস্পতিবার রাতে নিখোঁজ দেলোয়ার হোসেনের গ্রামের বাড়ী কদমরসুলে গিয়ে দেখা যায়, এ ঘটনার পর গোটা এলাকায় নেমে এসেছে নিরব-নিস্তব্ধতা। কোন অপরিচেত লোক দেখলেই এলাকার লোকজন জিজ্ঞাস করেন ’ভাই দেলোয়ারকে পাওয়া গেছে নাকি?’ তার বড়ীতে গিয়ে দেখা গেছে পরিবারের লোকজন একেবারে ভেঙ্গে পড়েছেন মানুষিকভাবে। ঠিকমতো তারা কথাও বলতে পারছেননা। ঘটনার পর থেকে তারা হয়ে পড়েছে বাকরুদ্ধ। এখন শুধু কান্নাকাটি করছেন পরিবারের লোকজন। নিখোঁজ দেলোয়ারের পিতা আব্দুল করিম জানান, শুক্রবার (১৫ মার্চ) সে সিলেট থেকে নিখোঁজ হয়। এর পর আমরা তার সাথে দুইবার ফোনে কথা বললেও এখন তার মোবাইলটি বন্ধ রয়েছে। সে এখন কি জীবিত আছে কি-না আমরা জানিনা। আমাদের সন্তানকে জীবিত ফেরৎ চাই। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় তার দু’চোখ থেকে অবিরাম ঝরছিল অশ্রু। তার বায়োবৃদ্ধ মা সুপিয়া বেগমকে ছেলের কথা জিজ্ঞেস করতেই তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এর পর বলেন আমি কিছু চাইনা, আমার ছেলে আমার কোলে ফিরে আসুক, সেটা চাই। কথা বলার সময় তার দু’চোখ থেকে অবিরাম অশ্র“ ঝরতে দেখা গেছে। এসময় পাশের রুমে তার স্ত্রী ছাবিনা বেগম শুধু আহাজারি করছিলেন পুত্র সন্তানকে বুকে নিয়ে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুক্রবার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম ফজলুল হক শিবলী বলেন, আমরা তাকে উদ্ধার করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জানতে চাইলে এএসপি (দক্ষিণ সার্কেল) রাশেদুল হক চৌধুরী শুক্রবার বলেন, আমি এ বিষটি অবগত আছি। নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে সব ধরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।