স্টাফ রিপোর্টার :
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র শিশু ইমন হত্যা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার যুক্তিতর্ক শেষে সিলেটের দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রেজাউল করিম রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন বলে জানিয়েছেন আদালতের স্পেশাল পিপি এডভোকেট কিশোর কুমার কর।
চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র শিশু ইমন হত্যা মামলায় গত ২৪ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুরু হয়। সোমবার সকাল ১১ টা থেকে আবার অসমাপ্ত যুক্তিতর্ক শুরু হয়। বিকালে যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন বিচারক মো. রেজাউল করিম।
দ্রুত সময়ে রায়ের তারিখ ঘোষণা করায় খুশি মামলার বাদি প্রবাস ফেরত জহুর আলী। আলোচিত এই মামলায় ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, বর্তমানে হবিগঞ্জের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শহীদুল আমিন ও সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যাম কান্ত সিনহা, ডাক্তার, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নিহতের মা বাবাসহ ২৩ জন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের বাতিরকান্দি গ্রামের সৌদি প্রবাসী জহুর আলীর পুত্র ও লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কারখানার কমিউনিটি বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণীর ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান ইমনকে ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপনের টাকা পাওয়ার পরও অপহরণকারীরা শিশু ইমনকে হত্যা করে। ৮ এপ্রিল মোবাইল ট্যাকিংয়ের মাধ্যমে নগরীর দক্ষিণ সুরমা কদমতলী বাসষ্ট্যান্ড থেকে শিশু ইমনের হত্যাকারী স্থানীয় মসজিদের ইমাম সুয়েবুর রহমান সুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি, বিষের বোতল ও রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করে। এমনকি বাতিরকান্দি হাওর থেকে ইমনের মাথার খুলি ও হাতের হাড় উদ্ধার করে এবং জড়িতদের গ্রেফতার করে পুলিশ। অপহরণ ও মামলা দায়েরের প্রায় সাড়ে ৭ মাস পর ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অভিযুক্তদের মধ্যে ছাতক থানার নোয়ারাই গ্রামের বাচ্চু, নূরুল ও বাহারকে বাদ দেন আদালত।
অপর অভিযুক্ত ৪ আসামীরা হচ্ছে- ছাতক থানার ব্রাহ্মণজুলিয়া গ্রামের মৃত মখলিছ আলীর পুত্র ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম সুয়েবুর রহমান সুজন (২৮), একই থানার নোয়ারাই গ্রামের আব্দুস সালামের পুত্র জায়েদ (২৭), একই গ্রামের মৃত আব্দুল মুক্তাদিরের পুত্র রফিকুর রহমান (৩৩) ও উপজেলার বাতিরকান্দি গ্রামের আব্দুল কাবিরের পুত্র সালেহ আহমদ (২৪)। বর্তমানে সালেহ আহমদ পলাতক থাকলেও বাকী ৩ অভিযুক্ত আসামী কারাগারে রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পিপি এডভোকেট কিশোর কুমার কর বলেন, ইমন হত্যা মামলা একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। লোমহর্ষক এই হত্যার বিষয়ে আমরা আদালতে আসামীদের অপরাধ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি আদালত সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করবেন।