স্পোর্টস ডেস্ক :
সিলেট সিক্সার্সকে বিদায় করে প্লে-অফের আশা বাঁচিয়ে রাখল রাজশাহী কিংস। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) বুধাবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেটকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। এই ম্যাচের মাধ্যমে শেষ হলো চট্টগ্রাম পর্ব। সেই সাথে শেষ হলো রাজশাহীর লিগ পর্বের খেলা। লিগ পর্বে ১২ ম্যাচ খেলে ছয়টিতে জিতেছে রাজশাহী। ১২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে রাজশাহী এখন আছে চতুর্থ অবস্থানে। ১০ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে আছে ঢাকা ডায়নামাইটস। লিগ পর্বে ঢাকার আর দুইটি ম্যাচ বাকি আছে। ঢাকা যদি এই দুই ম্যাচেই হেরে যায় তাহলে প্লে-অফে খেলবে রাজশাহী। আবার ঢাকা যদি একটিতে জয় পায় এবং একটিতে হারে এবং রাজশাহীর চেয়ে নেট রান রেটে পিছিয়ে থাকে তাহলে মিরাজরা প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে।
কিন্তু ঢাকা যদি দুই ম্যাচে জিতে যায় তাহলে ঢাকা প্লে-অফে খেলবে। আবার ঢাকা যদি একটিতে জয় পায় এবং একটিতে হারে এবং রাজশাহীর চেয়ে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকে তাহলে ঢাকা শেষ চারে খেলবে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে এবং ২ ফেব্রুয়ারি খুলনা টাইটান্সের মুখোমুখি হবে ঢাকা।
অন্যদিকে, সিলেটের প্লে-অফে খেলার কোনো সম্ভাবনা নেই। ১১ ম্যাচ খেলে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে তারা ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। লিগ পর্বে তাদের আর একটি ম্যাচ বাকি আছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে চিটাগং ভাইকিংসের মুখোমুখি হবে সিলেট। ইতোমধ্যে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, রংপুর রাইডার্স ও চিটাগং ভাইকিংস।
বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে সিলেট সিক্সার্সের দেয়া ১৯০ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৮ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় রাজশাহী কিংস। দলের পক্ষে লরি ইভান্স হাফ সেঞ্চুরি করেন। ৩৬ বল খেলে ১০টি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৭৬ রান করেন তিনি। ১৮ বলে তিনটি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৪২ রান করেন রায়ান টেন ডেসকাট। ২৬ বলে সাতটি চারের সাহায্যে ৩৯ রান করেন জনসন চার্লস। সিলেট সিক্সার্সের পক্ষে সোহেল তানভীর ২টি, তাসকিন আহমেদ ১টি ও অলক কাপালি ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
রাজশাহীর ওপেনিং জুটি ভাঙে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে। তাসকিনের বলে ইবাদতের হাতে ক্যাচ হন জাকির হাসান। সাত বলে সাত রান করেন তিনি। সপ্তম ওভারে অলক কাপালির বলে আফিফের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শাহরিয়ার নাফিস। নবম ওভারে সাব্বিরের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরে যান জনসন চার্লস।
এরপর ঝড় তোলেন লরি ইভান্স ও রায়ান টেন ডেসকাট। প্রতিপক্ষ দলের বোলারদের তুলোধুনো করতে থাকেন তারা। দুজনে মিলে ১০৯ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১৭৩ রানে পুরানের হাতে ধরা পড়েন ডেসকাট। এই ওভারেই আফিফের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরে যান ইভান্স।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৮৯ রান সংগ্রহ করে সিলেট সিক্সার্স। দলের পক্ষে ৩১ বলে ৭৬ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেন নিকোলাস পুরান। তিনি ছয়টি চার মারেন ও ছয়টি বাউন্ডারি হাঁকান।
এছাড়া ৩৯ বলে চারটি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৪৫ রান করেন সাব্বির রহমান। ২৫ বলে দুইটি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ২৯ রান করেছেন আফিফ হোসেন। রাজশাহী কিংসের বোলারদের মধ্যে আরাফাত সানি ১টি, মেহেদী হাসান মিরাজ ১টি, কামরুল ইসলাম রাব্বী ২টি ও মোস্তাফিজুর রহমান ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
সিলেট ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট হারায়। আরাফাত সানির বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন লিটন দাস। পঞ্চম ওভারে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ বানিয়ে জ্যাসন রয়কে ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান।
এরপর আফিফ-সাব্বিরের জুটিতে এগিয়ে যেতে থাকে সিলেট। ১১তম ওভারে মিরাজের বলে মোস্তাফিজের হাতে ক্যাচ হন আফিফ। আফিফ ফিরে গেলে সাব্বির ও পুরান ৫৩ রানের জুটি গড়েন। ১৬তম ওভারে রাব্বীকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানার কাছে ডেসকাটের হাতে ক্যাচ হন সাব্বির। সাব্বির ফেরার পরের বলেই উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ হন নওয়াজ। ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলায় প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন রাজশাহী কিংসের লরি ইভান্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৫ উইকেটে জয়ী রাজশাহী কিংস।
সিলেট সিক্সার্স ইনিংস: ১৮৯/৫ (২০ ওভার)
(লিটন ১০, আফিফ ২৯, জ্যাসন রয় ১৩, সাব্বির ৪৫, পুরান ৭৬*, মোহাম্মদ নওয়াজ ০, অলক কাপালি ১০*; আরাফাত ১/৪৮, মিরাজ ১/৩২, কামরুল ২/৩০, মোস্তাফিজুর ১/৩১, সৌম্য ০/৪৭)।
রাজশাহী কিংস ইনিংস: ১৯০/৫ (১৮ ওভার)
(জনসন চার্লস ৩৯, জাকির হাসান ৭, শাহরিয়ার নাফিস ৯, ইভান্স ৭৬, ডেসকাট ৪২, জঙ্কার ৮*, সৌম্য ২*; সোহেল তানভীর ২/২৬, তাসকিন আহমেদ ১/৩৪, ইবাদত হোসেন ০/৩১, মোহাম্মদ নওয়াজ ০/৪৩, অলক কাপালি ২/৪১, নাবিল সামাদ ০/১৪)।
ম্যাচ সেরা: লরি ইভান্স (রাজশাহী কিংস)।