তাহিরপুরে বাড়ছে পানি হুমকিতে বোরো ফসল

17
তাহিরপুরের বদলা হাওর।

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
পাহাড়ি ঢলে নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত। হুমখির মুখে তাহিরপুরে একাধিক হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ।
ধান পাকতে আরো সময় লাগবে ১০ থেকে ১৫ দিন। এরই মধ্যে হঠাৎ নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হাওর পারের কৃষক চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। সোনালী ধান কেটে গোলায় তুলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
মঙ্গলবার উপজেলার শনির, মাটিয়ান ও বলদা হাওরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ ঘুরে দেখা যায়, কৃষক স্বেচ্ছাশ্রমে ফসল রক্ষায় বাঁধে মাটির কাজ করছেন। সে সময় বলদা হাওরের ধরুন্দ বাঁধে কথা হয় ইউনুসপুর গ্রামের কৃষক আবুল মিয়ার সাথে। তিনি জানান সোমবার দিনে ও রাতে প্রচুর পানি বাড়ে। তাই (মঙ্গলবার) সকাল থেকে বাঁধে কাজ করতে এসেছি। আমার মত আরো অনেকেই রাত থেকে বাঁধে কাজ করছেন।
বাঁধে কাজ করতে আসা কৃষকরা জানান, এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাঁধটি আরো হুমুখির মুখে পড়বে।
শুধু ধরুন্দ নয়, পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে হুমকিতে রয়েছে মাটিয়ান হাওরের কাউকান্দি আলমখালি, বড়দল মেশিনবাড়ি, মাটিয়ানের কুরি, আনন্দ নগর, শনির হাওরের নান্টুখালি, পুটিচুরা ও সাহেব নগর বাঁধ। উল্লেখিত বাঁধ গুলোর কোনটির মধ্যে নাম মাত্র বাঁশ বস্তা দেয়া আছে, কোনটিতে মাটি ছাড়া কোন কিছুই নেই। শনির হাওরের সাহেব নগর বাঁধে মাটি কম্প্যাকশন না হওয়ায় বাঁধের নীচ দিয়ে পাানি চুয়ে চুয়ে হাওরে ঢুকছে।
শনির হাওর পার উজান তাহিরপুর গ্রামের কৃষক বাদল মিয়া বলেন, শনির হাওরের সাহেব নগর বাঁধটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বাঁধের নীচ দিয়ে পানি চুয়ে চুয়ে হাওরের ভেতর ঢুকছে। ফলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
মাটিয়ান হাওর পার বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী ইউনুছ আলী বলেন, বলদার হাওরের ধরুন্দ বাঁধটি পাহাড়ি ঢলের পানিতে মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে। এ বাঁধটি কোন রকম হলে বৃহৎ বোরো ফসলি হাওর মাটিয়ান এর একাধিক বাঁধ আরো বেশি রকম হুমকিতে পড়বে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রায়হান কবির বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ইতিমধ্যে অনেকগুলো বাঁধ পানি বৃদ্ধির কারণে হুমকিতে রয়েছে। আকাশ মেঘলা থাকলে কৃষক আরো শংকিত হয়ে পড়েন। বোরো ফসল রক্ষায় তিনি সার্বক্ষণিক বাঁধের খোঁজ খবর নিচ্ছেন ও বাঁধে আছেন বলেও জানান।
উল্লেখ্য চলতি বছর উপজেলার ২৩টি ছোট বড় হাওরে ১৯ হাজার হেক্টরের মত জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছে। ইতি মধ্যে টাঙ্গুয়া হাওর ও লতিবপুরের হাওরেরর ফসল আগাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।