প্লে-অফে চিটাগং ভাইকিংস

49

স্পোর্টস ডেস্ক :
ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়ে তৃতীয় দল হিসাবে প্লে-অফ নিশ্চিত করল চিটাগং ভাইকিংস। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) বুধবার দিনের প্রথম ম্যাচে ঢাকাকে ১১ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম। ১১ ম্যাচ খেলে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে এখন তিন নম্বর অবস্থানে আছে চট্টগ্রাম। এর আগে প্লেÑঅফ নিশ্চিত করেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও রংপুর রাইডার্স।
হোম ভেন্যু চট্টগ্রামে প্রথম তিন ম্যাচে হারলেও শেষ দিন জয় পেল মুশফিকুর রহিমের দল। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে সিলেট সিক্সার্সের মুখোমুখি হবে চিটাগং ভাইকিংস। অন্যদিকে, ঢাকা ডায়নামাইটস এই ম্যাচে হারলেও তাদের প্লে-অফে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। দশ ম্যাচ খেলে তাদের মোট পয়েন্ট ১০। লিগ পর্বে ঢাকার এখনো দুইটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। মিরপুরে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার বিপক্ষে ও ২ ফেব্রুয়ারি খুলনার বিপক্ষে মাঠে নামবে ঢাকা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে চিটাগং ভাইকিংসের দেয়া ১৭৫ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬৩ রান সংগ্রহ করে ঢাকা ডায়নামাইটস। দলের পক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ৪২ বলে ছয়টি চারের সাহায্যে ৫৩ রান করেন তিনি। ২৩ বলে দুইটি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৩৩ রান করেন নুরুল হাসান সোহান। ২৩ বলে চারটি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৩৯ রান করেন আন্দ্রে রাসেল। চিটাগং ভাইকিংসের বোলারদের মধ্যে আবু জায়েদ রাহি ৩টি, নাঈম হাসান ১টি, ক্যামেরন দেলপোর্ট ১টি ও দাসুন শানাকা ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ঢাকা। ইনিংসের প্রথম ওভারে আবু জায়েদের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন সুনিল নারিন। তিন বলে শূন্য রান করেন তিনি। তৃতীয় ওভারে রনি তালুকদারকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন আবু জায়েদ। তিন বলে ছয় রান করেন রনি।
চতুর্থ ওভারে রান আউট হন মিজানুর রহমান। এরপর ৫০ রানের জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহান। দশম ওভারে পরপর দুই বলে দুইটি উইকেট হারায় ঢাকা। দেলপোর্টের করা এই ওভারের চতুর্থ বলে এলবিডব্লিউ হন সোহান। পঞ্চম বলে রান আউট হয়ে ফেরেন কাইরন পোলার্ড। এক বল খেলে কোনো রান করতে পারেননি পোলার্ড।
এরপর সাকিব ও রাসেলের ব্যাটে স্বপ্ন দেখতে থাকে ঢাকা। দুজনে মিলে ৬৬ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১৩৯ রানে শানাকার বলে দেলপোর্টের হাতে ধরা পড়েন রাসেল। এরপর ম্যাচটি আবার হেলে পড়ে চট্টগ্রামের দিকে। ১৮তম ওভারে বোলার নাঈমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শুভাগত হোম। ১৯তম ওভারে শানাকার বলটি তুলে মারতে গিয়ে নাঈমের হাতে ক্যাচ হন সাকিব। শেষ ওভারে মাহমুদুলকে ফেরান রাহি।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৪ রান সংগ্রহ করে চিটাগং ভাইকিংস। দলের পক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেন ক্যামেরন দেলপোর্ট। ৫৭ বলে পাঁচটি চার ও চারটি ছক্কার সাহায্যে ৭১ রান করেন তিনি। ২৪ বলে চারটি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৪৩ রান করেন মুশফিকুর রহিম। ১৫ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ২১ রান করেন মোহাম্মদ শাহজাদ।
ঢাকা ডায়নামাইটসের আন্দ্রে রাসেল হ্যাটট্রিক করেন। চার ওভারে ৩৮ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তিনি। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে শুভাগত হোমের হাতে ধরা পড়েন মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় বলে দেলপোর্টও ফেরেন শুভাগতর হাতে ক্যাচ দিয়ে। তৃতীয় বলে মিজানুর রহমানের হাতে ক্যাচ হন দাসুন শানাকা।
এবারের বিপিএলে এটি তৃতীয় হ্যাটট্রিক। এর আগে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ঢাকা ডায়নামাইটসের আলিস আল ইসলাম। খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ওয়াহাব রিয়াজ। সবমিলিয়ে বিপিএলে এখন পর্যন্ত মোট পাঁচটি হ্যাটট্রিক হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ১১ রানে জয়ী চিটাগং ভাইকিংস।
চিটাগং ভাইকিংস ইনিংস: ১৭৪/৫ (২০ ওভার)
(শাহজাদ ২১, দেলপোর্ট ৭১, ইয়াসির ১৯, মুশফিকুর ৪৩, শানাকা ০, সিকান্দার ৬*, মোসাদ্দেক ১*; বার্চ ০/৩৫, রাসেল ৩/৩৮, সাকিব ০/২৪, নারিন ২/২০, রুবেল ০/৪২, মাহমুদুল ০/৮)।
ঢাকা ডায়নামাইটস ইনিংস: ১৬৩/৯ (২০ ওভার)
(মিজানুর ১১, নারিন ০, রনি তালুকদার ৬, সাকিব ৫৩, নুরুল ৩৩, পোলার্ড ০, রাসেল ৩৯, শুভাগত ৫, বার্চ ৭*, মাহমুদুল ২, রুবেল ০*; আবু জায়েদ ৩/২৫, খালেদ ০/৩৫, নাঈম হাসান ১/৩৭, দেলপোর্ট ১/৩১, শানাকা ২/৩৪)।
ম্যাচ সেরা: ক্যামেরন দেলপোর্ট (চিটাগং ভাইকিংস)।