জেড এম শামসুল :
আজ ১২ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালিরা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর প্রতিটি আস্তানা এবং বিভিন্ন স্থানে চতুর্মুখী আক্রমণ চালিয়ে হানাদার বাহিনীর পরাজয় অবশ্যম্ভাবী করে তুলে। সাথে সাথে পাকিস্তানের পক্ষের আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সদস্যদের সম্পর্কের মুখ থুবড়ে পড়ে। এদিন সারা বাংলায় সৃষ্ট রণক্ষেত্রে বিজয়ের খবর দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছিল। এদিন মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথ একের পর একেকটি হামলায় হানাদারদের সকল আস্তানা তছনছ করে তুলেছিল। চতুর্মুখী হামলা আর মিত্রবাহিনীর বিমান হামলায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের প্রেক্ষাপট তৈরি হতে থাকে। এই দিন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তানী চীফ অব স্টাফের কাছে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর এক বার্তা সিলেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় ‘তোমরা চারিদিক দিয়ে অবরুদ্ধ’ আত্মসমর্পণ করো, নতুবা তোমাদেরকে আটক করে মুক্তিবাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হবে। তোমরা যে অন্যায় করেছ তার প্রতিদান তোমাদেরকে নৃশংস মৃত্যু উপহার দেবে। এরূপ খবর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এ লিফলেট পেয়ে দ্রুত গভর্ণরকে জানালে পাকিস্তানী গভর্ণর আরো কিছুদিন টিকে থাকার জন্য হানাদার বাহিনীকে আশ্বস্ত করে। এ ছাড়াও আমেরিকান সপ্তম নৌবহর দ্রুত বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে বঙ্গোপসাগরের দিকে এগুচ্ছে। চীন সামরিক সহায়তা প্রদানে এগিয়ে আসবে। এদিকে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর তীব্রতর হামলায় হানাদার বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী হানাদার বাহিনীর সকল আস্তানা অবরুদ্ধ করে ফেলে। এদিন হানাদারদের পালানোর সকল রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়ে। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে রক্ষায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদের সভা আহ্বান করলেও এ সময়ের মধ্যে মুুক্তিযুদ্ধের ফলাফল নির্ধারণ হতে থাকে। এবং ইতোমধ্যে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের অনেক পথ এগিয়ে যায়। ক্যান্টনমেন্ট সম্মুখে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী অবরুদ্ধ করে রাখে।