একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনী উত্তাপ। দেশের নির্বাচন যখন রাজনৈতিক দল-জোটের অংশগ্রহণে হতে যাচ্ছে, তখনই এই নির্বাচনে বাইরের একটি অশুভ শক্তির নাক গলানোর খবর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে সত্যিকার অর্থেই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে আইএসআইয়ের সঙ্গে এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন নেতা ঢাকায় পাকিস্তানের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এসব বৈঠককে গোপন ষড়যন্ত্রের আভাস বলেই উল্লেখ করেছে।
পাকিস্তানি সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠকের বিষয়টি একটি দেশের যেকোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যেকোনো হাইকমিশন-দূতাবাসের সম্পর্ক থাকতে পারে। অনেক সময় কারো কারো সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে ওঠাও অসম্ভব নয়। কিন্তু বিজয়ের মাসে, নির্বাচনের আগে এ ধরনের বৈঠক নানা প্রশ্নের জন্ম দেবে এটাই স্বাভাবিক।
জানা যায় কয়েক দিন আগে আসাম থেকে প্রকাশিত একটি সংবাদপত্রের খবরে সন্দেহ নতুন করে দানা বাঁধছে। ওই খবরে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে যে নির্বাচনটি হতে যাচ্ছে, তা সত্যিকার অর্থেই একটি যুদ্ধ। এই যুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তাদের দীর্ঘদিনের বন্ধু জামায়াত। টাইমস অব আসাম পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে আরো বলা হয়েছে, বিএনপি ও জামায়াতকে ক্ষমতায় আনতে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই নতুন করে খেলা শুরু করেছে। এরই মধ্যে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রেজ্জাকের সঙ্গে বৈঠক করেছে তারা। জামায়াত-বিএনপিকে সহযোগিতা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ও কংগ্রেসেও তারা যোগাযোগ করেছে বলে টাইমস অব আসামে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে। নির্বাচনের আগে এ ধরনের খবরে আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলে জামায়াতের ভিন্ন পরিচিতি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে জামায়াত এখন একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে পরিচিত। দলটির সঙ্গে বিএনপির সখ্য সবারই জানা। এই অবস্থায় পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই বাংলাদেশের নির্বাচনে ‘খেলোয়াড়ের’ ভূমিকায় অবতীর্ণ হলে নানা অঘটনের জন্ম হতে পারে। জননিরাপত্তা নিয়েও আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। আইএসআই সম্পৃক্ত হওয়া মানেই দেশে জঙ্গি-সন্ত্রাস বেড়ে যাবে। বাড়বে টার্গেট হত্যাকাণ্ড, যার নজির এখনই পাওয়া যাচ্ছে। কাজেই আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যথেষ্ট সতর্ক হতে হবে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বশক্তি নিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। সব ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে এবং অঙ্কুরেই সেসবের বিনাশ ঘটাতে হবে।