কাজিরবাজার ডেস্ক :
বেশিরভাগ আসনে একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। যদিও এখন পর্যন্ত ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন বণ্টন চূড়ান্ত হয়নি। ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে তা পরিষ্কার হবে। প্রশ্ন হলো একই আসনে একধিক প্রার্থী কেন। বিগত আর কোন নির্বাচনে এমন দেখা যায়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে শুরু করে নেতারা বলছেন, বিএনপির পরিচিত নেতাদের মধ্যে বেশিরভাগের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দন্ডিত ব্যক্তিরাও প্রার্থী হয়েছেন এবারের নির্বাচনে। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ও আজীবন দন্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের সদস্যরাও প্রার্থিতার দৌড়ে পিছিয়ে নেই। এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প প্রার্থী রাখা হয়েছে বেশিরভাগ আসনে। এছাড়া পরিবারতন্ত্রের কারণেও অনেকেই ভাই, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, পুত্রবধূ কিংবা নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী করেছেন। মামলা কিংবা অন্য কোন কারণে বিএনপি মূল ধারার নেতারা নির্বাচনে অংশ না নিলে বিকল্প প্রার্থীরাই দলের ভরসা।
তাছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ দন্ডিত ব্যক্তিরা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। দুই বছরের বেশি দন্ডিতদের ভোটে আসার সুযোগ মেলেনি আপীল বিভাগেও। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেনের আবেদনে সাড়া দেয়নি সর্বোচ্চ আদালত। ফলে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না এটা একেবারেই পরিষ্কার। আইনজীবীরা বলছেন, আদালতের রায়ের ফলে বিএনপি খালেদা জিয়াসহ প্রায় দুই ডজন দন্ডিত নেতা নির্বাচন করতে পারবেন না। এই আদেশের ফলে খালেদা জিয়াসহ বেশকিছু প্রার্থীর আসনে বিকল্প প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খোরশেদ আলম খান বলেছেন, সর্বোচ্চ আদালতের আদেশের ফলে খালেদা জিয়াসহ ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, মীর মোঃ নাসির, মীর মোঃ হেলাল উদ্দিন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আমান উল্লাহ আমান, গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, জয়নাল আবেদীন হাজারী, আলহাজ মকবুল আহম্মেদ, হাজী মোঃ সেলিম, ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ওয়াদুদ ভূঁইয়া, আবদুল ওহাব, ব্যারিস্টার একেএম ফখরুল ইসলাম প্রমুখ নির্বাচন করতে পারবেন না।
বিএনপির পক্ষ থেকে এবার মনোনয়নপত্র বিক্রির রেকর্ড হয়েছে। চার হাজার ৫৮০টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে দলটি। সব দল মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। ২৮ নবেম্বর শেষ দিনে ৩০০ আসনে সব দলের মনোনয়নপত্র জমা পরেছে তিন হাজার ৫৬টি।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার তিন আসনেও ছয় বিকল্পপ্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। বগুড়া-৬ খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন দলের নেতারা। এছাড়াও এই আসনে রয়েছে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মাহবুবুর রহমান ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাইল করিম। বগুড়া-৭ আসনে খালেদা জিয়ার বিকল্প হিসেবে গাবতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদ মিল্টন মনোনয়ন দাখিল করেছেন। ফেনী-১ আসনে খালেদা জিয়ার বিকল্প হিসেবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম ও ছাগলনাইয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূর আহমেদ মজুমদার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, আগে ভাগেই হয়ত বিএনপি টের পেয়েছিল নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে মামলা একটি বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাদের ভবিষ্যতের ভাবনা বাস্তবে রূপ নিয়েছে সত্যি। মামলার কারণে দলটির অনেক নেতাই নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হচ্ছেন। তাই বিকল্প প্রার্থীরাই এবারের নির্বাচনে বিএনপি মূল হাতিয়ার। যদিও তাদের মধ্যে অনেকেই রাজনীতির মাঠে নবীন। কিন্তু পরিবারের রাজনৈতিক ইমেজ, দলীয় প্রতীক, জোটের সমর্থন সব মিলিয়ে আশার আলো দেখছে বিএনপি।
বিএনপির বিকল্প আয়োজন : পঞ্চগড়-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্পীকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের ছেলে ব্যারিস্টার নওশাদ জমির। তিনি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। সম্প্রতি পঞ্চগড়ে এক অনুষ্ঠানে নিজের ছেলেকে প্রার্থী হিসেবে নেতাকর্মীদের কাছে পরিচয়ও করিয়ে দেন ব্যারিস্টার জমির। এবারের নির্বাচনে নওশাদও মনোনয়ন দাখিল করেছেন। ঠাকুরগাঁও-২ আসনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভাই বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মির্জা ফয়সাল আমিন মনোনয়নপ্রত্যাশী। নাটোর-১ আসন থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে নির্বাচন করতে পারেন বিএনপি জোট সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ফজলুর রহমান পটলের সহধর্মিণী অধ্যক্ষ শিরিন সুলতানা।
নাটোর-২ আসনে (সদর) বিএনপি থেকে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী এডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। মামলা সংক্রান্ত বা অন্য কোন কারণে তিনি প্রার্থী হতে না পারলে ‘বিকল্প প্রার্থী’ হিসেবে তার সহধর্মিণী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবিনা ইয়াসমিন ছবি নির্বাচন করতে পারেন।
এছাড়া ঢাকা-১ আসন থেকে লড়বেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান। তার মেয়ের জামাই বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম ঢাকা-৮ আসন থেকেও মনোনয়নপ্রত্যাশী। ঢাকা-২ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান। মামলা-সংক্রান্ত বা অন্য কোন কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারলে তার সহধর্মিণী সাবেরা আমান কিংবা তার ছেলে ব্যারিস্টার ইফরান ইবনে আমান নির্বাচন করতে পারেন।
ঢাকা-৩ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। মামলা বা অন্য কোন কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারলে সেখানে তার পুত্রবধূ বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় ওই আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। ঢাকা-৫ আসনে বিএনপির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ। তার ছেলে তানভীর আহম্মেদ রবিনও ঢাকা-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী। সিরাজগঞ্জ সদর আসন থেকে বিএনপির একক প্রার্থী দলের ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। মামলা বা অন্য কোন কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারলে তার সহধর্মিণী রোমানা ইকবাল মাহমুদও ওই আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও অংশ নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন রোমানা মাহমুদ। কক্সবাজার-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য একক প্রার্থী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। মামলা সংক্রান্ত বা অন্য কোন কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারলে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ নির্বাচন করবেন। ২০০৮ সালেও হাসিনা আহমেদ এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ময়মনসিংহ-৫ আসনে নির্বাচন করতে পারেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ কে এম মোশাররফ হোসেন। তিনি কোন কারণে নির্বাচন না করতে পারলে তার ছোট ভাই জাকির হোসেন বাবলু নির্বাচন করবেন। টাঙ্গাইল-২ আসনে বিএনপি থেকে দলের কারাবন্দী ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু মনোনয়ন চেয়েছেন। তিনি ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি। কোন কারণে তিনি নির্বাচন না করতে পারলে তার ভাই যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু কিংবা তার আরেক ভাই জেলা বিএনপির সভাপতি কৃষিবিদ শামসুল আলম তোফা দলের সম্ভাব্য প্রার্থী। ঢাকা-৬ আসন থেকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা। মামলায় সাজার কারণে তার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন মনোনয়ন চেয়েছেন। ঢাকা-৭ আসনে বিএনপির প্রয়াত নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা নির্বাচন করছেন।
ঢাকা-৮ আসন থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস নির্বাচন করতে পারেন। একইভাবে তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস ঢাকা-৯ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। স্বামী স্ত্রী দু’জন দুই আসনে নির্বাচন করবেন। এর কারণ হিসেবে নেতাকর্মীরা বলছেন, মামলার কারণে একজন যদি নির্বাচনের অযোগ্য হন তাহলে অন্যজন সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ পাবেন। অর্থাৎ পরিবার থেকে সংসদ সদস্য পদ কোন ভাবেই হাতছাড়া করতে রাজি নয় আব্বাস পরিবার। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন নরসিংদী সদর থেকে নির্বাচন করবেন। তার স্ত্রী বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা ঢাকা-৯ কিংবা নারায়ণগঞ্জের একটি আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী।
যশোর-৩ থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম মারা যাওয়ায় ওই আসন থেকে তার ছেলে দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত মনোনয়ন পেয়েছেন। নোয়াখালী-২ আসন থেকে নির্বাচন করবেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক। মামলা সংক্রান্ত বা অন্য কোন কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারলে ওই আসনে তার মেয়ে তামান্না ফারুক নির্বাচন করবেন। একই অবস্থা নোয়াখালী-৩ আসনেও। সেখানে নির্বাচন করবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলু। কোন কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারলে তার সহধর্মিণী শামীমা বরকত লাকী নির্বাচনে লড়বেন। বরকত উল্লা বুলুর পাশাপাশি নিয়মিত এলাকায় যাতায়াত করছেন শামীমা বরকত লাকী। মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে নির্বাচনে লড়তে চান বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব এডভোকেট খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের আলোচিত দুই ছেলে খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু ও খোন্দকার আবদুল হামিদ বাবলু। মানিকগঞ্জ-২ আসনে প্রয়াত শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খানের ছেলে ও জেলা সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল ইসলাম খান শান্ত নির্বাচন করবেন।
মানিকগঞ্জ-৩ আসনে নির্বাচন করতে পারেন বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ খান মুন্নুর মেয়ে আফরোজা খান রিতা। নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি থেকে ২০০৮ সালে মনোনয়ন পান এ এম বদরুজ্জামান খান খসরু। তিনি সম্প্রতি মারা যান। মারা যাওয়ার আগেই ওই আসনে তার ছেলে মাহমুদুর রহমান সুমন আটঘাট বেঁধে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশীদ। আবার তার স্ত্রী আসিফা আশরাফী পাপিয়াও নাটোরের লালপুর থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী।
জয়পুরহাট-১ আসনে বিএনপির এমপি ছিলেন আবদুল আলিম। তিনি মারা যাওয়ায় ওই আসনে তার ছেলে ফয়সল আলীম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে এমপি ছিলেন ডাঃ আবদুল মতিন। তিনি মারা যাওয়ায় ওই আসনে তার ছেলে ডাঃ এমএ মুহিত নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নেত্রকোনা-৪ এ এমপি ছিলেন লুৎফুজ্জামান বাবর। বর্তমানে তিনি ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় কারাগারে। তার পরিবর্তে স্ত্রী তাহমিনা জামান নির্বাচন করবেন। ঢাকা-১৪ আসনে এমপি ছিলেন এস এ খালেক। বর্তমানে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি নির্বাচন না করলে তার ছেলে সৈয়দ সিদ্দিক সাজু নির্বাচন করবেন।
কুমিল্লা-১ আসন থেকে লড়তে চান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছেলে ড. খন্দকার মারুফ হোসেন। কুমিল্লা-২ আসন থেকে লড়বেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন নিজেই। তবে সেখানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম এম কে আনোয়ারের ছেলে মাহমুদ আনোয়ার কায়জারও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে নির্বাচনে লড়তে চান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত শামসুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম বাবু। চাঁদপুর-১ আসনে লড়বেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন। কোন কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারলে ওই আসনে মনোনয়ন চাইবেন তার স্ত্রী নাজমুন্নাহার বেবী। চট্টগ্রাম-২ আসনের এমপি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। যুদ্ধাপরাধের দায়ে তার মৃত্যুদ- হওয়ায় ওই আসনে তার স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী অথবা ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী রয়েছেন মনোনয়ন তালিকায়। সিলেট-২ আসনে এমপি ছিলেন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী। তার নিখোঁজ হওয়ার পর নির্বাচনে লড়বেন তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হান্নান শাহ মারা যাওয়ায় গাজীপুর-৪ আসনে তার ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ফরিদপুর-২ আসনে কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শামা ওবায়েদ রিংকু নির্বাচন করবেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর আসন পাবনা-১। এ আসনে তার ছেলে ব্যারিস্টার নাদিম মোমেনকে জামায়াতের মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের অন্য দলগুলোর নেতাদের মধ্যে দিনাজপুর-১ আসনে জাগপা নেতা প্রয়াত শফিউল আলম প্রধানের স্ত্রী রেহানা প্রধান অথবা তার মেয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানকে ছেড়ে দিতে পারে বিএনপি। কুমিল্লা-১১ আসনে প্রয়াত কাজী জাফর আহমদের মেয়ে কাজী জয়া আহমদ নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পিরোজপুর-১ আসনে যুদ্ধাপরাধের দায়ে আজীবন কারান্তরীণ জামায়াতের সাবেক এমপি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বর্তমানে কারাগারে। ওই আসনে তার ছেলে মাসুদ সাঈদী মনোনয়নপ্রত্যাশী।