পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ

34
পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলাকালে আন্দোলনরত শ্রমিকরা আটকিয়ে দিয়েছে একটি যানবাহনকে। ছবি- মো: করিম মিয়া

স্টাফ রিপোর্টার :
গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টি আর যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজি অটোরিকশা বন্ধ থাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে সিলেটের পরিবহন শ্রমিকরা প্রথমদিনের কর্মবিরতি পালন করেছে। ব্যক্তিগত ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যানবাহন চলাচলেও বাধা দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। গতকাল রবিবার নগরীর হুমায়ূন রশীদ চত্বরে বেশ কয়েকটি ব্যক্তিগত যান আটকে দেয় শ্রমিকরা। এতে মানুষের দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়া হয়। এমনকি এ্যাম্বুলেন্স চলাচলেও বাধা দেওয়া হয়।
গতকাল রবিবার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা কর্মবিরতির ডাক দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। ৮ দফা দাবিতে তাদের এ কর্মবিরতির ফলে সিলেটে সকল ধরনের বাস চলাচল বন্ধ ছিল। সকালে নগরীর কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে কোন বাস ছেড়ে যায়নি। ফলে ভোগান্তিতে ছিলেন দূর দূরান্তের যাত্রীরা।
এদিকে, শ্রমিক কর্মবিরতির পাশাপাশি দিনভর গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। বৃষ্টির মধ্যে নগরী যাত্রীদের চলাচলের বাহন হিসেবে অতিরিক্ত ভাড়ায় রিকশাই ছিল একমাত্র শেষ ভরসা।
জানা যায়, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর কয়েকটি ধারাকে শ্রমিকদের ‘স্বার্থবিরোধী’ উল্লেখ করে আন্দোলন করছে বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। তাদের দাবি, শ্রমিকদের ‘স্বার্থবিরোধী’ ধারাগুলো বাতিল করতে হবে। গত ২০ অক্টোরব শনিবার সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সমাবেশ করে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে ৮ দফা দাবি মানতে সরকারের প্রতি আলটিমেটাম দেয় পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক উছমান আলী এই সমাবেশে ঘোষণা দেন, দাবি না মানা হলে ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতির পর ৯৬ ঘণ্টা কর্মবিরতিতে যাবেন শ্রমিকরা। এরপরও আইন বাতিল না হলে রাষ্ট্রের ভাল-মন্দ বিবেচনায় না করে অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘট আহ্বান করা হবে।
সাধারণ মানুষরা বলছেন, কয়দিন পর পর পরিবহন শ্রমিকরা নানা অজুহাতে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ধর্মঘট ও কর্মবিরতি পালন করে। এতে চরম দুর্ভোগ আর ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন কোষাধ্যক্ষ মানিক মিয়া বলেন, ৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যেই তাদের এ কর্মবিরতি। সকাল ৬টা থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। আজ সোমবার পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে। কর্মবিরতির ফলে সিলেটের সকল রুটেই বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক বলেন, আইনে ৩০২ ধারাসহ ৮ দফা দাবিতে গত ২০ অক্টোবর সিলেটে শ্রমিক সমাবেশ থেকে কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। একই দাবিতে স্মারকলিপিও দিয়েছি। অদ্যবেদি সেসব দাবি না মানায় কর্মসূচী অব্যাহত রাখা হবে।