তিতলির বিপদ কাটছে

20

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র প্রভাবে ভারী বৃষ্টি ছাড়া বাংলাদেশে আর কোনো ক্ষতির আশঙ্কা করছে না আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি বলছে, গোপালপুরের কাছ দিয়ে ভারতের ওডিশা-অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। পরবর্তী ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে তা উপকূল অতিক্রম করবে।
অধিদপ্তর বলছে, তিতলি হ্যারিকেনের তীব্রতা নিয়ে ভারতে আঘাত হানলেও সেটি আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পরছে, এর প্রভাববে বাংলাদেশে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাজধানীসহ সারা দেশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে, কাক ডাকা ভোর থেকেই আকাশ মেঘলা দেখা যায়। সাত সকালে বৃষ্টিও হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর অবশ্য এখনও সমুদ্র বন্দরগুলোতে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলছে। বিজ্ঞপ্তিতে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা, ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় তিতলি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আতঙ্ক বা ভয়ের কোনো কারণ নেই। ভোর থেকে ঘূর্ণিঝড়টি গোপালপুরের কাছ দিয়ে ভারতের ওডিশা-অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে আাগামী শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পরে। বিশেষ করে ফরিদপুরসহ দক্ষিনাঞ্চলে মেঘলা আবহাওয়াসহ মাঝারী থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
ওমর ফারুক বলেন, এই সাইক্লোনটির তীব্রপ্রভাব বাংলাদেশের ওপর তেমন পরবে না। কারণ সাইক্লোনটি হ্যারিকেনের তীব্রতা থাকলেও, সেটি সিনিয়র সাইক্লোন। এর পরে সাইক্লোন পরে স্থল নিম্নচাপ হয়ে পরবে। তিতলি এখন যে পজিশনে আছে বাংলাদেশের দিকে নিম্নচাপের প্রভাব থাকবে।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ওডিশা ও অন্ধ্র প্রদেশের উপকূলে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়ে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। সেখান থেকে দুর্বল হয়ে তিতলি বাংলাদেশের দিকে আসতে পারে।
ভারতের ওডিশার কাছাকাছি গোপালপুরে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে উপড়ে গেছে গাছপালা এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু বাড়ি-ঘর। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাণহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীকাকুলামে আছড়ে পড়ার সময় ‘তিতলি’র গতিবেগ ছিল ঘণ্টা ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত। উত্তরের দিকে এসে ওডিশায় আঘাত হানার সময় বাতাসের তীব্রতা কিছুটা কমে আসে। সেসময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০২ কিলোমিটার পর্যন্ত।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জরুরি বৈঠকে বসেছেন ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। গঞ্জাম, পুরী, খুরদা, কেন্দ্রাপড়া ও জগৎসিংহপুর থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার চার জেলার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।