জৈন্তাপুরে দু’গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ২ শতাধিক

49

জৈন্তাপুর থেকে সংবাদদাতা :
জৈন্তাপুরে দুই শিক্ষার্থীর কথা কাটাকাটির জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্রের আঘাতে কমপক্ষে ২ শতাধিক আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শতাধিক শর্ট গানের গুলি ও গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। ঘটনাস্থলে এখন পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০১৯ সনের এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা আয়োজনের লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের হল রুমে আলোচনা সভা আহবান করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় ১০ম শ্রেনীর ছাত্র বালিপাড়া গ্রামের আরিফ এবং হাউদপাড়া গ্রামের ছাত্র জামাল এর বক্তব্যের জের ধরে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের এনএসপি নিয়োগকৃত শিক্ষক ইয়াকুব আলী উস্কানীমূলক বক্তব্য দিলে ছাত্রদের মধ্যে সংর্ঘষের শুরু হয়। বিষয়টি বালিপাড়া ও হাউদপাড়া গ্রামবাসীর মধ্যে স্কুলে মারামারির সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে দুটি অঞ্চলে বিভক্ত হয়ে একটি পক্ষ বালিপাড়া গ্রাম অপর পক্ষ হাউদপাড়া, ভেলোপাড়া, নয়াগ্রাম, শ্যামপুর ও জুয়াইরটুক এলকাবাসী হরিপুর বাজারে অবস্থান নেয় এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সকাল ১০টা হতে সংঘর্ষ বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলে।
এ ঘটনায় পুলিশ সহ উভয় পক্ষের অন্তত ২ শতাধিক লোক আহত হয়েছে। এ দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ শতাধিক শর্ট গানের গুলি ও গ্যাস নিক্ষেপ করে। ঘটনার সংবাদ পেয়ে আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের সহযোগিতায় ১৭ পরগনার সালিশ ব্যক্তিগণ উভয় পক্ষের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের সম্মতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে উভয় পক্ষের সাথে পৃথক বৈঠক শেষে এলাকায় শন্তি ফিরে আসে। প্রায় ৫ঘন্টা পর সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে এবং উভয় পক্ষের লোকজন বাজার এলাকা ত্যাগ করে নিজ নিজ বাড়ীতে ফিরে যায়। সমঝোতা বৈঠকের জন্য আগামী রবিবার সকাল ১০ টায় বৈঠকের দিন নির্ধারন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হরিপুর বাজারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়ন রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন- হরিপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানোজিং কমিটির সভাপতি আলা উদ্দিন, ছালাম মিয়া, ফখরুল ইসলাম, নিজাম উদ্দিন, হারুন আহমদ, এনাম আহমদ, জালাল উদ্দিন, আশিকুর রহমান, সাহাবউদ্দিন, কবির আহমদ, আব্দুল খালিক, মোঃ জাকারিয়া, কিবরিয়া, কামাল উদ্দিন, কালা মিয়া, সাহাব উদ্দিন, ময়নুদ্দিন, জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোঃ ময়নুল জাকির, অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আনোয়ার জাহিদ, এস আই সুজন, এএসআই রায়হান সহ অন্যান্য আহতদের নাম জানা যায়নি।
সালিশ ব্যক্তিত্বরা হলেন- জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ জয়নাল আবেদীন, আব্দুল কাদির খাঁন, হরিপুর মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা ইউছুফ, ভাইস চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন, মুহতামিম হিলাল আহমদ, সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য মুহিবুল হক মুুহিব, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল আহমদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন, সাধারন সম্পাদক এম, লিয়াকত আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমদ বাবর, রহমত উল্লাহ মৌলভী, দরবস্ত ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, ফতেপুর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল কাহির (পাঁচা), রফিক আহমদ, কুতুব শিকদার, মুহিবুর রহমান মেম, হানিফ মোহাম্মদ, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মালিক, আব্দুল্লাহ মাষ্টার, মুফতি জিল্লুর রহমান। আইন শৃঙ্খলার সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোঃ মাইনুল জাকির, অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার জহিদ, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মুনতাসির হাসান পলাশ।