স্টাফ রিপোর্টার :
ওসমানী নগরে পুলিশের বিরুদ্ধে এক মাদরাসা ছাত্রকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ওই ছাত্রের পিতা ইছামতি গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ উমর আলী। উমর আলী দাবি করেন, তার ছেলে সুলতান আহমদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না, শুধুমাত্র বিরোধী মতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার কারণে পুলিশ হয়রানি করছে।
লিখিত বক্তব্যে উমর আলী বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর দয়ামীর বাজারস্থ নৌশিন টেইলার্স এন্ড ফেব্রিক্স নামক দোকান থেকে তার ছেলে সুলতান আহমদকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক করে ওসমানী নগর থানা পুলিশ। তিনি বলেন, তার ছেলে একজন কুরআনে হাফেজ ও আলিম ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত। ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে সে সম্পৃক্ত থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। এরপরও পুলিশ তাকে আটক করে। আটকের ঘটনা জানার পর থানায় পরিবারের সদস্যরা তাকে দেখতে গেলে পুলিশ সাক্ষাৎ করতে দেয়নি।
উমর আলী বলেন, মধ্যরাতে তার ছেলে সুলতান আহমদকে পুলিশ চোখ বেঁধে বাড়িতে নিয়ে আসে। ঘুম থেকে আমাকে জাগিয়ে তোলে থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা আমার ছেলের শয়ন কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় সুলতানের বিছানাপত্র এবং শয়ন কক্ষের আসবাবপত্র তছনছ করেও পুলিশ কোনো কিছু পায়নি। তখন থানার ওসি আমাকে বলেন, চলেন একটু বাইরে যাই। আমি ও ওসি ঘর থেকে বেরিয়ে আসলে এর একটু পর এক পুলিশ সদস্য ঘরের ভেতর থেকে বলেন, পাওয়া গেছে। তখন ওসি আমাকে নিয়ে আবার সুলতানের শয়ন কক্ষে প্রবেশ করলে পুলিশ সদস্য বিছানার তোষক উল্টিয়ে দেখান একটি রিভলবার ও ২টি রামদা রয়েছে। অথচ এর আগে তল্লাশিকালে তারা অস্ত্র অথবা অন্য কোনো কিছুই পায়নি।
উমর আলী অভিযোগ করেন, পুলিশ তার ছেলের বিছানার নিচে অস্ত্র রেখে নিরপরাধ ছেলেকে ফাঁসিয়েছে। সাজানো এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তার ছেলে সুলতানের বিরুদ্ধে ৯ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনে একটি মামলা (নং- ৫) দায়ের করে। পরে তাকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়।
উমর আলী আরও বলেন, দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছেন। তার ছেলে সুলতান আহমদও নৌশিন টেইলার্স এন্ড ফেব্রিক্স’র ব্যবসায়িক সহযোগী। এলাকায় তার পরিবারের সুনাম রয়েছে। তার পরিবারের কোনো সদস্য অস্ত্রবাজ নয়। এলাকাবাসী অবগত রয়েছে তার ছেলে সুলতান একজন শান্ত ও ন¤্র স্বভাবের। অস্ত্র মামলা দিয়ে পুলিশ তার ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উমর আলী তার ছেলের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে সুলতান আহমদের ওপর দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে প্রশাসনের ঊধর্বতন মহলের প্রতি অনুরোধ জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন মো. সিরাজ উদ্দিন, ডা. শামছুদ্দিন শিকদার, মো. আলতাফ আলী, মো. মইন উদ্দিন, মাওলানা খালেদ আহমদ, মাওলানা এহসান আল করিম, মুফতি মুস্তাক আহমদ, হাফিজ এবাদ মোহাম্মদ, মারজান আহমদ, মিজান আহমদ প্রমুখ।