বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদা :
অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে বিশ্বনাথ সরকারি ডিগ্রি কলেজে পড়–য়া সাহেদা বেগম নামের এক তরুণীকে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন বিশ্বনাথ থানা পুলিশের এএসআই কামরুজ্জামান। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টারদিকে এমন অভিযোগ এনে সিলেটের ওসমানীনগর সার্কেলের এএসপি সাইফুল ইসলামের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দ্বাদশ শ্রেনীতে পড়–য়া ওই তরুণী। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে তাকে সিলেট পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে কলেজ ছাত্রীর সৎ-মা মনোয়ারা বেগমের দেওয়া অভিযোগ তদন্তে বিশ্বনাথ উপজেলার সদর ইউনিয়নের জানাইয়া (মশুলা) গ্রামের বাড়িতে সাদা পোষাকে যান এএসআই কামরুজ্জামান। সেখানে অভিযোগকারীর পক্ষ নিয়ে অশালীন আচরণসহ কলেজ ছাত্রীকে বখাটে ছেলেদের দিয়ে ধর্ষণের হুমকিও দেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম এ প্রতিবেদককে বলেন, কলেজ ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার ভোর থেকে এএসআই কামরুজ্জামানকে সিলেট পুলিশ লইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
এএসাই ক্লোজড হওয়ার ব্যাপারে এসপি অফিসের কোন লিখিত আদেশ না পেলেও অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন সিলেটের ওসমানীনগর সার্কেলের এএসপি সাইফুল ইসলাম। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কলেজ ছাত্রীর পুরো পরিবারের লোকজন তার কাছে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাহেদার অভিযোগ, বাড়িতে প্রবেশ করেই অশ্লীল গালাগাল করে স্থানীয় কিছু বখাটেদের নিয়ে তিনি কাউকে কিছু না বলে তাদের ঘরে প্রবেশ করেন। কারণ জানতে চাইলে তার (সাহেদার) উপর চড়াও হয়ে কনস্টেবলের হাতে থাকা লাঠি নিয়ে তাকে মারতে উদ্যত হন। পরে বিশ্রামে থাকা তার মা ও বোনের ঘরে কামরুজ্জামান প্রবেশ করতে চাইলে বাঁধা দেন কলেজ ছাত্রী সাহেদা। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে এএসআই কামরুজ্জামান তাকে ‘বিবস্ত্র করে পেঠানোসহ সাথে থাকা ছেলেদের দিয়ে ধর্ষণ করানোর হুমকি দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, সাহেদা বেগমের মা-রাহেলা বেগমের অনুমতি ছাড়াই তার পিতা আশিক আলী ২০১০ সালে সিলেটের বাদাঘাটে ৪ সন্তানের জননী মনোয়ারা বেগমকে ২য় বিয়ে করেন। এরপর থেকে পারিবারিক কলহসহ নানা বিষয়াদি নিয়ে শত্র“তার সৃষ্টি হয়। পবর্তিতে একই বাড়িতে পৃথক ঘরে বসবাস করে আসছেন তারা। সম্প্রতি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলে গত ৫ সেপ্টেম্বর সাহেদা ও তার মা-ভাই-বোনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত দেন সৎ-মা মনোয়ারা। আর ওই অভিযোগ তদন্তে গিয়ে অশালীন আচরণসহ বখাটেদের দিয়ে ধর্ষণের হুমকি দেন এএসআই কামরুজ্জামান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এএসআই কামরুজ্জামান প্রথমে কোন মন্তব্য করতে রাজি না হলেও পরক্ষণে তার উপর আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, কলেজ ছাত্রীর বাড়িতে যা করেছেন সেটা তাদের ভালোর জন্যই করেছেন। কিন্তু তারা ভুল বুঝে উল্টো তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছন।