স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক পাসপোর্ট গ্রহিতাকে হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে সাক্ষর নেয়ার অভিযোগে সিলেট মেট্রোপলিটন জজ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সোমবার তাঁর বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন মোগলাবাজার থানার গোটাটিকর পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাহারা খানম (৫৩)। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য মোগলাবাজার থানাকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, নগরীর গোটাটিকর পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দা বায়োবৃদ্ধ সাহারা খানম পবিত্র হজ্ব পালন করার জন্য সৌদী আরবে যাওয়ার জন্য নতুন পাসপোর্ট তৈরির উদ্দেশ্যে নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংক চালানের টাকা জমা দিয়ে গত ১০ নভেম্বর সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে ফাইল জমা দেন। নিয়ম অনুযায়ী ফাইল জমা দিলেও অফিসের কর্তব্যরতরা ফাইলে বিশেষ চিহ্ন ‘মার্কা’ না থাকায় তা অনলাইনে নিবন্ধন করেননি বলে জানান। এজন্য পাসপোর্টের জন্য ফিঙ্গার না নিয়ে বারবার তাকে হয়রানি করতে থাকলে তিনি বিষয়টি গত ১৪ নভেম্বর সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের অফিসে গিয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে বিষয়টি অবগত করে পাসপোর্ট পেতে তাঁর সহযোগিতা চান। পরে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে তিঁনি সুপারিশ করেছেন জানানোর জন্য বললে যথারীতি সাহারা খানম তা জানান। তারপই তার উপর ক্ষেপে যান পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা। তারা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের চাকরি করেন না এবং তিনি কেন উনার কাছে গিয়েছেন বলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। তখন সাহারা খানম বাধ্য হয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহা পরিচালক উম্মে সালমা তানজিয়ার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোনে কল দিয়ে বিষয়টি জানালে তিনি তাকে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল ইসলামের কাছে গিয়ে তাঁর নাম বললে তিনি সাহারা খানমের পাসপোর্ট এর ফিঙ্গার নেওয়ার বিষয়ে সহায়তা করার ব্যবস্থা করে দিবেন।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ নভেম্বর সকাল অনুমান সকাল ১১টায় সময় সাহারা খানম সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালকের কক্ষে গিয়ে তাকে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহা পরিচালকের কথা বললে তিনি আমাকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেন। আনুমানিক ২ ঘন্টা পর সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল ইসলাম সাহারা খানমকে বলেন যে, আপনার পাসপোর্টের জন্য জনৈক ছেেফ খানকে ৮ হাজার টাকা দিয়েছেন মর্মে একটা লিখিত অভিযোগ দিলে আপনার ফিঙ্গার নেওয়াা হবে। এই কথা শুনে সাহারা খানম পাসপোর্ট করার জন্য কাউকে কোন টাকা দেই নাই এবং কোন লিখিত অভিযোগ দিতে অস্বীকার করলে পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল ইসলাম তাঁকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদান করেন। একপর্যায়ে তিনি তার অফিসে কর্মরত আরও ২ জন কর্মকর্তাকে ডেকে এনে কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। তখন যদি তার কথা মতো একটি লিখিত অভিযোগ না করি তাহলে তিনি সাহারা খানমকে শারিরিক লাঞ্ছনা ও প্রাণে মারার হুমকি দেন। তখন তিনি প্রাণ ভয়ে তার কথামতো একটা সাদা কাগজে ‘ছয়়েফ খানকে আমার পাসপোর্টের জন্য ৮ হাজার টাকা দিয়েছি লিখিয়া দিলে তিনি তার অফিসের কমরনআরও ২ জন কর্মকর্তার মাধ্যমে আমার পাসপোেেট ফিঙ্গার নেন।
পরে ভোক্তভোগী সাহারা খানম বাসায় ফিরে তার আত্মীয় স্বজনের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করে ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য তিনি মোগলাবাজার থানায় গত ১৬ নভেম্বর একটি সাধারণ ডায়েরী করেন এবং সোমবার সিলেট মেট্রোপলিটন জর্জ আদালতে মামলা দায়ের করেন।