কাজিরবাজার ডেস্ক :
রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ‘খুলনা মডেলের’ পুনরাবৃত্তির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থাহীনতা বৃদ্ধি, জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে বলে মনে করছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
তবে আগামী সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে সরকার, রাজনৈতিক দল, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা নিতে নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছে সুজন।
বুধবার (৫ সেপ্টম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনে কেমন জনপ্রতিনিধি পেলাম’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।
তিনি বলেন, উন্নয়নের নামে ভোটারদের জিম্মি করা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সহায়তায় ক্ষমতাসীনদের প্রধান প্রতিপক্ষকে মাঠ ছাড়া করা, বিএনপি প্রার্থীও পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করা, নির্বাচনের দিন জোর-জবর দস্তি করা ও কমিশনের নিরব থাকার মতো সবকিছুই হয়েছে রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। তার আগে এসব কৌশল অবলম্বন করা হয়েছিল খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশকে ব্যবহার করে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঠ ছাড়া করার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে নির্বাচন কমিশন। তফসিল ঘোষণা পর আদালতের নির্দেশে তিন সিটি নির্বাচনের আগে মামলা বা গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া কাউকে গ্রেফতার না করার নির্দেশ দেওয়া হলেও তা কাজ করেনি। নির্দেশনা জারির পর বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুরাতন মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিন সিটির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে কিনা জানতে চেয়ে সুজনের ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে মতামত প্রকাশ করেছেন ১ হাজার ১০৩ জন। এরমধ্যে ৯৯৮ জন লিখেছেন শান্তিপূর্ণ হয়নি, আর ১০৫ জন লিখেছেন শান্তিপূর্ণ হয়েছে।
দিলীপ কুমার সরকার বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিন সিটির নির্বাচন সর্বশেষ সবচেয়ে বড় নির্বাচন। এ নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে জনগণের কাছে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছাবে। সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ও সংশয় দেখা দিবে। আমরা বলবো তিনসিটির নির্বাচন নিয়ে সচেতন নাগরিকদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সুজন মনে করে আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সরকার, রাজনৈতিক দল, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব অস্বীকারকারী সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি জাতীয় সনদ বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে হবে। সনদে নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময়, নির্বাচনের কখন কী ধরনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কার কী ভূমিকা হবে, সনদের শর্ত ভঙ্গ করলে কী হবে তা উল্লেখ থাকবে। এসব কিছুর পাশাপাশি আইনি ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে নৈতিকতা ও সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। নির্বাচন সংক্রান্ত সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
অনুষ্ঠানে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, মহানগর কমিটির সমন্বয়ক নাজিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।