ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
বালাগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেবরের হাতে নির্মম ভাবে খুন হয়েছেন এক গৃহবধূ। হত্যার শিকার শারমিন বেগম (১৯) উপজেলার নতুন সুনামপুর গ্রামের শিপন মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় নিহতের বোন নাঈমা আক্তার (৭) ও মামা বারই মিয়া (৪০) আহত হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে উপজেলার নতুন সুনামপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। শনিবার সকালে নিহতে মা রুশনা বেগম বাদি হয়ে নতুন সুনামপুর গ্রামের সমছু মিয়ার পুত্র রুহুল আমিন, রিপন মিয়া, মিন্টু মিয়া ও তার স্ত্রীরসহ চার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪জন কে আসামী করে বালাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১। শনিবার সকালে উপজেলার শিরিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে রিপন মিয়া (২৫ কে আটক করেছে পুলিশ। সে উপজেলার নতুন সুনামপুর গ্রামের সমছু মিয়ার পুত্র।
জানা যায়, বালাগঞ্জ উপজেলার নতুন সুনামপুর গ্রামের শিপন মিয়ার সাথে পারিবারিকভাবে ভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন উপজেলার গৌরীনাথপুর গ্রামের তুরণ মিয়ার মেয়ে শারমিন বেগম। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে স্বামী শিপন মিয়ার চাচাতো ভাই মন্টু মিয়ার সাথে কথা কাটাকাটি হয় নিহত শারমিন বেগমের। এক পর্যায়ে মিন্টু তার ভাই রুহুল আমিন ও রিপন কে নিয়ে অস্ত্র নিয়ে ভাবি শারমিন বেগমের উপর হামলা চালায়। হামলাকারীদের চুরির আঘাতে শারমিনের একটি স্তন কেটে যায় এবং রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এ সময় তাকে বাঁচাতে বাড়িতে আসা মেহমান তারই বোন নাঈমা আক্তার ও মামা বারই মিয়া এগিয়ে আসলে তারও আহত হন। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে শারমিন বেগম সহ অন্যান্য আহতদের উদ্ধার করে বালাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে এলে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় শারমিন বেগম ও বারই মিয়াকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রের্ফাড করলেও এ্যাম্বুলেন্স যোগে নিয়ে যাওয়ার পথে আহত শারমিন বেগমের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে রাতে বালাগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় নিহতের মা রুশনা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিত্বে শনিবার মামলা রেকর্ড করে থানা পুলিশ। মামলা রেকর্ডের পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিরিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনা সাথে জড়িত থাকা রিপন মিয়াকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এদিকে নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনার মূল হোতা মিন্টু মিয়ার বিরুদ্ধে এর পূর্বে এলাকায় নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। বিগত সময়ে সে বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত এক চিকিৎসকের উপর ও হামলার চেষ্টা চালিয়ে ছিল। খুনের ঘটনার মূল হোতা মিন্টুকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জালাল উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। শনিবার সকালে অভিযুক্ত রিপনকে আটক করা হয়েছে। অন্যান্য অভিযুক্তদের আটকের ব্যাপারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।