কাজিরবাজার ডেস্ক :
শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ছাত্রদের হত্যা ও ধর্ষণের গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে দেয়ার ঘটনায় আরও ৩০ জন শনাক্ত হয়েছে।
সচেতন মানুষদের পক্ষ থেকে এদের নাম ও ছবি পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। তবে সেই তালিকায় সবাইকে দোষী হিসেবে দেখছে না সংস্থাটি। যাচাই বাছাই শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম।
২৯ জুলাই দুপুরে বিমানবন্দর সড়কে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাস চাপায় নিহতের পরদিন থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনের তৃতীয় দিনেই সরকার তৃতীয় পক্ষের অন্তর্ঘাতের বিষয়ে সতর্ক করে।
এর মধ্যে আবার স্কুল ড্রেস বিক্রির চাহিদা হঠাৎ তুঙ্গে উঠে, তৈরি হতে থাকে লেমিনেডেট আইডি কার্ড। এটা স্পষ্ট যে অছাত্ররাও ছাত্রের পোশাক পরে রাস্তায় নামে। এর মধ্যে এক ছাত্রের হাতে চাপাতির ছবিও দেখা গেছে।
এর মধ্যে গত ৪ আগস্ট গুজব ছড়িয়ে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা হয়। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ছাত্রবেশে হামলা করেছে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা।
এর আগে ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়ানো হয় গুজব। ঘটনাস্থল, ঘটনাস্থলের বহু দূর থেকে এমনকি বিদেশ থেকেও ভিডিও প্রচার করে এই বক্তব্য ছড়ানো হয়েছে। তবে সেদিন বিকালের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যায় সব কিছু।
এর মধ্যে ৪ আগস্ট রাতে আটক হন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। মামলা হয় ২৮টি আইডি ও ফেজবুক পেজের বিরুদ্ধে।
আর যারা যারা সাক্ষাৎকারের মতো করে বানিয়ে বা ফেসবুক লাইভে এসে সেই কথা ছড়িয়েছেন তাদের পরিচয় এরই মধ্যে প্রকাশ হতে শুরু করেছে।
এর মধ্যে গুজব ছড়িয়ে উস্কানি দেয়ার চেষ্টা করেছেন, এমন ব্যক্তিদের ছবি প্রকাশ করে পুলিশকে বিস্তারিত তথ্য দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকেই প্রকাশ করা হয়েছে তালিকা। সেখানে তথ্য দিতে ফোন নম্বর হিসেবে ০২৯৩৪২৯৮৯ উল্লেখ আছে।’
তালিকায় সন্দেহভাজন যাদের নাম : তালিকায় নাম রয়েছে পার্থ চৌধুরী, আনুশকা পারিশা, সাফায়েত জাহান চৌধুরী, হুমায়রা মাহ্জাবীন প্রমা, তারিকুল নাঈম (তমাল) জুবায়ের আহমেদ শুভ, ওয়াকি আবদুল্লাহ, কে এম নাজমল হক, সোনালী রহমান, ফারহানা ক্যামেলিয়া, রকিবুল ইসলাম নাবিল, রুপন্তী দীপা মল্লিক, শেহজাদ আরেফিন, তারেক আজিজ, ইফতেখার আহমেদ, আঞ্জুমান কাজী, আফসার আহমেদ স্বাধীন, খাদিজা ইমলাম কবির, আব্দুল কাইয়ুম খান, রাজু রহমান, মজ্ঞিল মোর্শেদ সাব্বির, সাঈদ ইসলাম, সানজিদা শিমু, মেহরান সানজাদা, মেহেদী হাসান রাশেদ, তাসকিন আল আসাম, রিয়াদ রহমান রকি, সেকুল ইসলাম আছকা, ফাতেমা তুজ জহুরা ও রাফসান।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল বলেন, ‘সহিংসতার পর সিআইডির পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে আহবান করেছিলাম উস্কানি দাতাদের নাম ও ছবির৷ পরে কোন সচেতন নাগরিক সেটা দিয়েছে। আমরা সেই তালিকা নিয়ে আগাচ্ছি।’
‘এখনও কাউকে অভিযুক্ত বলছি না। তবে তদন্ত চলছে কিছুটা সময় লাগবে। এই তালিকা আরো বড় হতে পারে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সকল আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’