কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট গাছবাড়ী বাজারের এক হাতুড়ে ডাক্তারের অপচিকিৎসার শিকার হয়ে শাকিরা বেগম (২১) নামে এক প্রসূতি মা বর্তমানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এ ঘটনায় শাকিরার পিতা কানাইঘাট বাণীগ্রাম ইউপির সর্দারমাটি গ্রামের রফিক আহমদ কানাইঘাট থানায় গত ১৪ জুলাই গাছবাড়ী বাজারের কামাল ফার্মাকো নামক ফার্মেসীর মালিক হাতুড়ে ডাক্তার কামরুল ইসলাম (৩৫) এর বিরুদ্ধে বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করলেও অদ্যাবধি পর্যন্ত এই পল্লীচিকিৎসক নামধারী ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে রফিক আহমদ সহ আরো অনেকে জানিয়েছেন। থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সর্দারীমাটি গ্রামের রফিক আহমদের মেয়ে শাকিরা বেগমের প্রসব ব্যথা শুরু হলে গত ২ মার্চ হাতুড়ে ডাক্তার কামরুল ইসলামের স্মরণাপন্ন হন তার পিতা রফিক আহমদ। কামরুল ইসলাম রফিক আহমদকে বলেন আপনি কোন চিন্তা করবেন না আপনার মেয়ের আমি যাবতীয় ডেলিভারীর কাজ করে দিবো। এই বলে হাতুরে ডাক্তার রফিক আহমদের বাড়ীতে গিয়ে অন্ত:সত্ত্বা শাকিরা বেগম কে চেকআপ করে স্বজনদের বলে স্বাভাবিক ডেলিভারী সম্ভব নয়। অপারেশন করা লাগবে বলে শাকিরা বেগমের তলপেট ও গোপনাঙ্গ কেটে সিজারিয়ান অপরেশন করে এই হাতুড়ে ডাক্তার। অপচিকিৎসার কারণে বাচ্চা ডেলিভারীর পর থেকে শাকিরা বেগমের প্রচুর রক্তকরণ অব্যাহত থাকলে তার পরিবার ও স্বামীর বাড়ীর লোকজন বিভিন্ন জায়গায় ডাক্তার দ্বারা তার চিকিৎসা করান। কিন্তু তার রক্ত ক্ষরণ বন্ধ না হলে সিলেট শহরস্থ ইবনেসিনা হাসপাতালে নিয়ে শাকিরা কে চিকিৎসা করালে তার রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়। কিন্তু কিছুদিন সুস্থ থাকার পর শাকিরা বেগমের তলপেট পচন ধরলে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১০ জুলাই তাকে সিলেট রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে ১২ দিন চিকিৎসা প্রদানের পর সপ্তাহ খানেক পূর্বে বাড়ীতে নিয়া আসেন স্বজনরা। শাকিরা বেগমের পিতা রফিক আহমদ জানিয়েছেন, তার মেয়েকে সুস্থ করতে চিকিৎসা বাবদ এ পর্যন্ত প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা খরচ করেছেন তারপর তার মেয়ে বর্তমানে সুস্থ হয়নি। বাড়ীতে অসুস্থ অবস্থায় তার চিকিৎসা চলছে। তিনি বলেন, গত ১৪ জুলাই থানায় অভিযোগ দায়েরের সংবাদ পেয়ে হাতুড়ে ডাক্তার কামরুল ইসলাম সম্প্রতি তার মালিকানাধীন ফার্মেসী বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়ে তার দেশের বাড়ী মৌলভীবাজারে চলে যায়। কয়েক দিন ধরে ফার্মেসী খুলে পুনরায় চিকিৎসা করে যাচ্ছে সে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, গাছবাড়ী বাজার এখন হাতুড়ে ডাক্তারে ভরে গেছে তাদের মধ্যে কামরুল ইসলাম হাতুড়ে চিকিৎসক একজন তার কোন ডাক্তারী সনদপত্র নেই। সে এলাকায় প্রসূতি মহিলাদের ভুল চিকিৎসা সহ সর্বরোগের চিকিৎসা করে যাচ্ছে। চিকিৎসার কোন সনদপত্র ও ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়াই পল্লীচিকিৎসকরা প্রসূতি মায়েদের ডেলিভারী, সিজারিয়ান অপারেশন সহ অন্যান্য সব ধরনের রোগের চিকিৎসা করে আসছে। এদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এলাকায় প্রতিনিয়ত লোকজন অপচিকিৎসার শিকার হয়ে জীবন বিপন্ন সহ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। হাতুড়ে ডাক্তার কামরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে।