কাজিরবাজার ডেস্ক :
নারী কেলেঙ্কারি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান। মঙ্গলবার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে সকালে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনে বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
ডিআইজি মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ বছরের জানুয়ারিতে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।
ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত গুরুতর অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- তিনি মরিয়ম আক্তার ইকো নামে আনুমানিক ২৫ বছয় বয়সী এক নারীকে জোরপূর্বক তার পান্থপথের বাসা থেকে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়ে রাজধানীর তিনশ ফুট এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে তাকে মারধর করে চোখ বেঁধে রাতে বেইলি রোডের নিজ ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন।
তিন দিন আটকে রাখার পর মেয়ের মাকে সেই ফ্ল্যাটে এনে মেয়েকে ফিরিয়ে দেয়ার পরিবর্তে হত্যার হুমকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন। এরপর মরিয়ম আক্তার ইকোকে নিয়ে লালমাটিয়ার একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে চার মাস সংসার করেন। পরবর্তী সময়ে কাবিননামার কপি তোলার জন্য মেয়ের মা আবেদন করলে এবং ফেসবুকে স্বামী পরিচয় দিয়ে স্ত্রী মরিয়ম আক্তার ইকো ডিআইজি মিজানের ছবি আপলোড করায় মিজান ক্ষেপে যান।
পর পর দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে স্ত্রী ইকোকে কারাগারে পাঠান ডিএমপির ওই অতিরিক্ত কমিশনার। ২১ দিন কারাভোগের পর ১ জানুয়ারি ইকো কাশিমপুর কারাগার থেকে ছাড়া পান।
দ্বিতীয় বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রী মরিয়ম আক্তারকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনেরও অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের প্রমাণ পায় পুলিশের তদন্ত কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। সর্বশেষ মিজানের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকা প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ আনেন।
এদিকে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
এর অংশ হিসেবে গত ৩ মে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে ডিআইজি মিজানকে ৭ ঘণ্টা বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের পরিচালক কাজী শফিকুল আলম ও উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এরপর গত ১১ জুলাই এ পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রতœার সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার নোটিশ জারি করেছে দুদক।