পিন্টু দেবনাথ কমলগঞ্জ থেকে :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার উপর বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড়ে উপজেলার আদমপুর, ইসলামপুর ও মাধবপুর ইউনিয়নের শতাধিক ঘর বিধস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে হাজারো গাছ পালা। ১১ কেভির ৩০টি খুঁটি ভেঙ্গে বিদ্যুত ব্যবস্থা লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে। কমলগঞ্জ -শ্রীমঙ্গল সড়কে গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৮ ঘন্টা পর দুপুর ১২ টায় সড়ক যোগাযোগ চালু করা হয়। বিদ্যুত লাইন লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার কারণে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিকাল ৪টা পর্যন্ত পুরো কমলগঞ্জ অধন্ধাকারে নিমজ্জিত। ৮ মে মঙ্গলবার ভোর রাত ৪টায় প্রচন্ড কাল বৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ের সাথে সাথে আলোর ঝলকানীর সাথে সাথে প্রচন্ড শব্দ করে বজ্রপাত ঘটে। এত করে বৈার রাতে ঘরবাড়ীতে অবস্থানকারী মানুষরা আতংকিত হয়ে পড়ে। লাউয়াছড়ায় রেল লাইনের উপর গাছ ভেঙ্গে পড়ায় ২ দফায় (উদয়ন ও কালনী ট্রেন) সিলেটের সাথে সাড়ে ৬ ঘন্টা ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ ছিল। পরে গাছ কেটে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক করা হয়। জানা যায়, বুধবার ভোর ৪টায় কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর, ইসলামপুর ও মাধবপুর ইউনিয়ের উপর দিয়ে প্রচন্ড বেগে কাল বৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ে আদমপুর ইউনিয়ের আদখানি, জালালপুর কানাইদাসী, উত্তর ভাগ সহ প্রায় ১০টি গ্রামে ব্যাপক বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাস্তার গাছপালা উপড়ে পড়ে। আদমপুরের বিভিন্ন এলাকায় পল্লী বিদ্যুত এর ১১ কেভি ৫টি খুঁটি ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়া উত্তরভাগ গ্রামের আব্দুল গনি,শামু মিয়া,গোলজান বেগম, মধ্যভাগ গ্রামের আলীবোন বেগম ,জালারপুর গ্রামের খালিক মিয়া ও আদকানি গ্রামের সুরজান বিবি’র ঘর সম্পূর্ণ বিধসস্ত হয়। অপর দিকে একই সময় মাধবপুর ইউনিয়নে ঝড়ে প্রায় ৩০ টি ঘর সম্পূর্ণ সহ শতাধিক বাড়ি ঘর বিধস্ত হয়। চা বাগান এলাকায় টিনের ঘরে চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। কয়েক শতাধিক গাছ পালা উপড়ে পড়েছে। মাধব চাবাগান, মাঝের ছড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে ২৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে পড়েছে। মাধবপুরে দুহারিকা বট,গোপালবট,শ্রী নারায়ন দাশ,আজগর আলী, ধলাইপাড় গ্রামের হেলিমা বেগম, বাঘবাড়ী গ্রামে সুরেন্ড কুমার সিংহের ঘর সম্পূর্ণ বিধস্ত হয়। এছাড়া ইসলামপুর ইউনিয়নের ১১ টি ঘর সম্পূর্ণ ও অর্ধশতাধিক ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ২ শতাধিক স্থানে বিদ্যুত লাইনে তার ছিড়ে পড়েছে। বুধবারের ঝড়ে ৩৩ কেভির লাইনের মাগুরছড়া নামক স্থানে খুঁটি ভেঙ্গে পড়েছে। পাহাড়ের ভিতরে বেশ কয়েকটি গাছ পড়ায় কমলগঞ্জ শ্রীমঙ্গল সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। কমলগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম মোবারক হোসেন জানান, ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে প্রায় ৩০টি খুঁটি ও ২ শতাধিক স্থানে তার ছিড়ে গেছে। বিদ্যুত ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে ২ দিন লেগে যাবে। কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মর্কতা মোঃ আছাদুজ্জামান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের তালিকা দেয়ার জন্য চেয়ারম্যান দের বলা হয়েছে। মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পুস্পকুমার কানু ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়ে বলেন, তার ইউনিয়নে ৬০টি ঘর বিধস্ত হয়েছে।
অন্যদিকে কালবৈশাখী ঝড় ও অব্যাহত ভারী বর্ষণে কমলগঞ্জ উপজেলা কয়েক হাজার হেক্টর বোরো ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।