জেএসসিতেও এমসিকিউ থাকছে না

43

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রাথমিক সমাপনীর পর এবার অষ্টম শ্রেণি সমাপনী জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট-জেএসসি, মাদ্রাসায়র জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট এবং সমমানের পরীক্ষায়ও নৈর্ব্যত্তিক বা এমসিকিউ তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। টিক চিহ্নের বদলে পরীক্ষায় সমান নম্বরের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন দেয়া হবে।
গত বেশ কয়েক বছর ধরে পরীক্ষার আগে আগে সামাজিক মাধ্যমে নৈর্ব্যক্তিকের প্রশ্ন ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে চলা আসার ঘটনায় এই পরীক্ষা পদ্ধতি তুলে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষার নিরাপত্তা সংক্রান্ত সভা শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
সচিব বলেন, ‘জেএসসি ও জেডিসিতে (মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষা) এমসিকিউ আর থাকছে না। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনে আমরা এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভবিষ্যতে অন্যান্য পরীক্ষায়ও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হবে।’
চলতি বছরের নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে এই দুই পরীক্ষা হতে পারে। এবারের পরীক্ষায় প্রায় ৩১ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেবে।
বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর এসএসসি পরীক্ষায় নৈর্ব্যত্তিক পরীক্ষা চালু হয়। এর আগে ১০০ নম্বরে লিখিত পরীক্ষা হলেও তখন থেকেই ৫০ নম্বরের লিখিত এবং ৫০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নেয়া হতে থাকে।
এই পদ্ধতিতে একটি প্রশ্নে বিপরীতে চারটি সম্ভাব্য উত্তর দেয়া থাকে। এর মধ্যে একটিকে বেছে নিয়ে টিক চিহ্ন দিতে হয়।
শুরুতে এমসিকিউ এর জন্য প্রতি বিষয়ে ৫০০ প্রশ্নের একটি বই ছিল। পরে এই প্রশ্নব্যাংক বাতিল করা হয়। আবার এমসিকিউ এর নম্বর ৫০ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হয়।
এই পদ্ধতি চালু হওয়ার পর পরীক্ষায় পাসের হার আগের চেয়ে বাড়তে থাকে। তবে গত ফেব্রয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষার দিন সকালে ফেসবুকে এমসিকিউয়ের প্রশ্ন আসার পর সমালোচনার মুখে এই পদ্ধতি বাতিলের বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে বলে সংসদে জানান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী।
এই সিদ্ধান্ত সবার আগে নেয় প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার জানান, চলতি বছরের শেষে হতে যাওয়া সমাপনী পরীক্ষায় এমসিকিউ আর থাকছে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আগেই এমকিসিউ পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে।
জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সভায় সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘চলমান পদ্ধতিতে পাবলিক পরীক্ষা হলে প্রশ্নফাঁস রোধ করা সম্ভব হবে না। এ কারণে আমরা পাবলিক পরীক্ষাগুলোয় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার আলোকে চলতি বছর শুরু হতে যাওয়া জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় পরিবর্তন আনা হবে।’
‘বিষয়টি চূড়ান্ত করতে সভা করা হবে। সেখানে অনেকের মতামত নিয়ে কী কী পরিবর্তন আনা যায়, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’