গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
গোলাপগঞ্জ উপজেলার কায়স্থগ্রাম নাশাগঞ্জ এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া ওয়াদুদ মিয়া (৩৫) এর ময়না তদন্ত শেষে জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনার দিন রাতেই নিহতের ময়না তদন্ত শেষে পুলিশ স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। সোমবার দুপুর দুইটায় রানাপিং উত্তরভাগ জামে মসজিদে জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। প্রায় ৫ বছর আগে বিয়ানীবাজার থানার খাখরদি এলাকায় বিয়ে করেন নিহত ওয়াদুদ মিয়া। তিনি ৯ ভাই বোনের মধ্যে সকলের ছোট ছিলেন। তার দীর্ঘ ৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে ছিল না কোন সন্তানাদি। প্রায় ১ সপ্তাহ আগে তার অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী বিভাগে ভর্তি করেন। ১ সপ্তাহ থেকে নিজের স্ত্রীকে দেখা শোনার জন্য সাথেই ছিলেন নিহত ওয়াদুদ। ঘটনার দিন বিশেষ প্রয়োজনে অসুস্থ স্ত্রীর পাশে স্বজনদের রেখে সিএনজি যোগে বাড়ী আসছিলেন। উপজেলার কায়স্থগ্রাম এলাকায় পৌছা মাত্র দ্রুত গতীতে আসা বাস তার প্রাণটি কেড়ে নেয়। সন্ধ্যার পর নিহত ওয়াদুদের কফিনবাহী এ্যাম্বুলেন্স বাড়ীতে পৌছলে স্বজনদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। সোমবার সকালে ওসমানীতে চিকিৎসারত স্ত্রীকে স্বজনরা জানান তার স্বামী বাড়ীতে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছে এবং তোমাকে কষ্ট করে বাড়ীতে যেতে হবে। খবর পেয়ে প্রিয় স্ত্রী স্বামীর বাড়ীতে পৌছান। বাড়ীতে পৌছার পর নিহতের স্ত্রী বুজতে পারছিলেন বাড়ীতে বড় ধরণের কিছু একটা হয়েছে। পরে জানতে পারেন তার প্রিয় স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে চলে গেছে। স্বামীর লাশ দেখে তার অশ্র“ ঝরা চোখের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। নিহতের প্রতিবেশিরা জানান, ওয়াদুদের অকাল মৃত্যুতে নিহতের পরিবারের লোকজন নিরব নিস্তব্ধ পয়ে পড়েছে। এই কথাগুলো বলছিলেন, নিহত ওয়াদুদের ভাগনা জাকির হোসেন। গতকাল দুপুরে নিহতের বাড়ীতে গেলেও আর কারো সাথে আলাপ করা সম্ভব হয়নি। এদিকে একই ঘটনায় আহত হওয়া সিএনজি চালক লিটন আহদ (২০) এখনও মৃত্যুর সাথে। সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তার শরিরে রক্ত দেয়া হচ্ছে। তবে এখনও জ্ঞান ফিরেনি। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন সে এখনও সংকটাপন্ন। জ্ঞান ফিরেনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্ঘটনাকবলিত সিএনজির মালিক দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার থানার কুছাইর আব্দুস ছামাদ। রাত ১০টায় সিএনজি মালিকের সাথে আলাপ করা তিনি জানান,তাকে আই.সিসিউতে রাখা হয়েছে। সে সুনামঞ্জ জেলার দিরাই থানার দুধের হাট গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে। দীর্ঘদিন থেকে সে সিলেটের গোটাটিকর এলাকায় স্ব-পরিবার নিয়ে বসবাস করছে। তবে ওই ঘটনায় আহত হওয়া অন্যান্য যাত্রীদের নাম ঠিকানা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তারা বেঁচে আছে না মরে গেছে পুলিশসহ কেউই কিছু বলতে পারছে না।