কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিগত বছরগুলোতে কৃষকরা ধান না পেলেও এ বছর সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে বোর ধানের অধিক ফলন হয়েছে। অধিকাংশ হাওরে ধান পেকে গেছে। কোনো প্রকার দুর্যোগ না থাকায় এখনও পর্যন্ত কৃষকের জমিতে ধান রয়েছে।
কিন্তু সংকট দেখা দিয়েছে ধান কাটা শ্রমিকের। মজুরি কম হওয়ায় এ বছর শ্রমিকেরা ধান কাটতে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না। প্রতি বছর জেলার বাইরের অনেক শ্রমিক সুনামগঞ্জে ধান কাটার জন্য এলেও এ বছর না আসায় বিপাকে পড়েছে গৃহস্থরা।
আর যারা কিছু শ্রমিক পাচ্ছে তারা একজন শ্রমিককে মাথাপিছু দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরি, দুই বেলা খাবার ও বিড়ি নাস্তার টাকা দিতে হচ্ছে। এতে করে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় ক্রমেই বেড়ে চলছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ঝাওয়ার হওরের অনেক কৃষক হতাশা নিয়ে বলেন, আমরা কোন দিকে যাবো। বিগত দুই-তিনবার আমাদের ফসল পানিতে গেল। আর গত বছর তো একটি ধানও পাইনি। এখন পাকা ধান কাটতে পারছি না। ফসল মাঠে পড়ে আছে। আর যা পাচ্ছি মজুরি অনেক বেশি চায়। তারপরও শ্রমিকের ভয়াবহ সংকট।
বিষয়টি নজরে আসায় অন্য পেশার শ্রমিকদের যাতে ধান কাটার কাজে লাগানো যায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও কৃষি সচিব বরাবরে চিঠি দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ঝাওয়ার হাওরের কৃষক মাহতাব উদ্দিন বলেন, আমি এবার ৬০ কেদার জমিতে ধান চাষ করেছি। অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। সরকার বলেছিল ঋণ দেবে তবে আমি কোনো ঋণ পাইনি। ঋণের জন্য ব্যাংকে গেলে ব্যাংক (জামানত) চায়। কিন্তু তারপরও অনেক কষ্ট করে ধার-দেনা নিয়ে টাকা জোগাড় করে ধান চাষ করেছি। কিন্তু পাকা ধান কাটার শ্রমিক পাচ্ছি না। পেলেও তারা অনেক বেশি টাকা মজুরি চায়। এতে করে ধানের দামের চেয়ে উৎপাদন ব্যয় বেশি হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন টিপু বলেন, আমরা শ্রমিক সংকটের বিষয়টি জানি। এজন্য আমরা আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আর বড় কৃষকরা এই মেশিনটি কেনার জন্য চেষ্টা করছেন। আমাদের কৃষি বিভাগের যে মেশিন আছে সেটি দিয়েও আমরা অনেক কৃষককে সহযোগিতা করছি। আশা করছি মেশিনের ব্যবহার বাড়লে এ সংকট আর থাকবে না।