হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সরকার দেশের বিচার ব্যবস্থাকে ধংস করেছে। তার বড় প্রমাণ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবীদ বেগম খালেদা জিয়াকে ভূয়া মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে রেখে দেয়া হয়েছে। যে মামলায় তার ২৪ ঘন্টার মধ্যে জামিন হওয়ার কথা, সে মামলায় আড়াই মাস ধরে তার জামিন শুনানী হচ্ছেনা। এতেই প্রমাণ মিলে দেশে আদালতের কোন স্বাধীনতা নেই। আদালত সরকারের কথায় চলে। নিজের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মানহানি মামলায় সোমবার হবিগঞ্জের আদালতে হাজিরা দিতে এসে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে দেয়া আমার একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলায় জেলায় এরকম ৩৬টি মামলা দেয়া হয়েছে। তারপরও সরকারের জুলুম অত্যাচারের বিরুদ্ধে গত ১০ বছর ধরে অব্যাহতভাবে আমি বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছি। আমার বক্তব্য চালিয়ে যাব। এরকম ৩৬টি কেন ৩৬০টি মামলা দিলেও আমার বক্তব্য থেকে পিছপা হবনা। সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে আমার উচ্চকণ্ঠ চালিয়ে যাব। জেল, জুলুম কোন কিছুই আমি পরোয়া করিনা। আমার বিরুদ্ধে যে মামলা দেয়া হয়েছে সেটি আদালত বেআইনীভাবে আমলে নিয়েছেন। এ ধরণের মামলা আমলে নিতে পারেননা। বর্তমান সরকারের আমলে আদালতের কোন স্বাধীনতা নেই।
মাহমুদুর রহমান বলেন, গণআন্দোলনের মাধ্যমে এ ফ্যাসিবাদী সরকারের উৎখাত করতে হবে। এজন্য আমাদেরকে অব্যাহতভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। ইনশাআল্লাহ সে ন্যায্য লড়াইয়ে আমরা জয়ী হব। দেশের সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার আমরা ফিরিয়ে আনব ইনশাআল্লাহ।
এর আগে মাহমুদুর রহমান জেলা আইনজীবী সমিতির ২নং ভবনে অবস্থান নিলে বিএনপি নেতাকর্মীরা তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জি কে গউছ, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মঞ্জুর উদ্দিন আহমেদ শাহীন, অ্যাডভোকেট শামছু মিয়া চৌধুরী, নূরুল ইসলাম, ডা. আহমুদুর রহমান আবদাল, শাম্মি আক্তার শিফা, কামাল উদ্দিন সেলিম, তাজুল ইসলাম চৌধুরী ফরিদ, সাহাব উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল কাইয়ূম, ইমদাদুল হক ইমরান, রুবেল চৌধুরী। মামলায় তার পক্ষে শুনানী করেন বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মঞ্জুর উদ্দিন আহমেদ শাহীন। পরে তিনি বের হওয়ার সময় নেতাকর্মীরা মিছিল করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তার দেয়া বক্তৃতাকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ৫০০ কোটি টাকার মানহানী মামলা দায়ের করেন সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তফা কামাল আজাদ রাসেল। গত ১০ এপ্রিল ওই মামলায় তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। সোমবার দুপুরে তিনি অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রহিমের আদালতে হাজির হয়ে উক্ত জামিননামা জমা দেন। বিচারক শুনানীর জন্য আগামী ৮ মে মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন।