স্টাফ রিপোর্টার :
মাদক ব্যবসার জের ধরেই নগরীতে খুন হয় শ্রমিক সোহাগ মিয়া (১৭)। পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে বন্ধু শাকিল। মাদক ব্যবসা নিয়ে দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিনের আক্রোশ ছিল। পূর্ব অনেকবার তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। গতকাল বুধবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (তৃতীয়) হরিদাস কুমারের আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির আইনের ১৬৪ ধারায় এভাবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় গ্রেফতারকৃত শাকিল আহমদ (২০)। আদালতের বিচারক তার খাসকামরায় বেলা ২ টা থেকে ৫টা পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘণ্টা শাকিল আদালতে জবানবন্দী প্রদান করে। এরপর আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এর আগে পুলিশ গ্রেফতারকৃত শাকিল আহমদকে সিলেট চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজির করে। পরে আদালতের বিচারক মো: সাইফুজ্জামান হিরো তাকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (তৃতীয়) হরিদাস কুমারের আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। গ্রেফতারকৃত শাকিল নগরীর ঘাসিটুলার মঈন উদ্দিনের পুত্র।
শাকিলের জবানবন্দীর বরাত দিয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন জানান, সোহাগের কাছ থেকে চাকু কেড়ে নিয়ে তার গলা কাটে শাকিল। এরপর তার শরীরে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। এক সময় সোহাগ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরে বন্ধুরা এসে দেখে সোহাগ মারা গেছে। এরপর পরিকল্পনা করে তার লাশ বস্তায় ভরে ঘাসিটুলার গাভিয়ার খালে ফেলে দেয়া হয়। গোয়েন্দা সোর্সের মাধ্যমে পুলিশ গতকাল বুধবার দুপুরে ঘাসিটুলা এলাকা থেকে শাকিলকে গ্রেফতার করে। ঘটনার দিন শুক্রবার রাতে ঘাসিটুলা এলাকার বালুর মাঠে আসে সোহাগ। আগে থেকেই সেখানে বন্ধুদের নিয়ে অবস্থান করছিলো শাকিল। এরপর জরুরী কথা বলার জন্য শাকিল ও সোহাগ চলে আসে এলজিইডি অফিসের কাছে। তাদের বন্ধুরাও পিছু পিছু আসে। মাদক বিক্রির ভাগ-বাটেয়ারা নিয়ে প্রথমে নিহত সোহাগের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় শাকিলের। এরপর সোহাগ পকেট থেকে চাকু বের করে শাকিলকে মারতে আসে। এ সময় শাকিল চাকু কেড়ে নিয়ে সোহাগের গলায় আঘাত করে। তিনি আরো জানান, সিলেট – মাদক ব্যবসার দ্বন্ধের জের ধরে সোহাগকে খুন করা হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে শাকিল। খুনের ঘটনার সময় তার সঙ্গে আরো কয়েকজন ছিল। তাদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল থেকে সোহাগের খোঁজ পাচ্ছিলেন না তার স্বজনরা। ১৬ এপ্রিল সকালে স্থানীয় শিশু-কিশোররা এলজিইডি অফিসের পাশে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে ঘাসিটুলার গাভিয়ার খালে সোহাগের বস্তাবন্দি লাশ দেখতে পায়। এ ঘটনায় সোহাগের মা ফুলবানু বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। সোহাগ মিয়া নগরীর মজুমদারপাড়ার ময়না মিয়ার কলোনীর বাসিন্দা কাজিরবাজারে মাছের আড়তে দিনমজুরের কাজ করতো। তাদের মূল বাড়ি বড়গুনা সদরে।