ক্রান্তিকালে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্যে সময়োপযোগী দূরদর্শী পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে। অন্তরে দেশপ্রেম ও রাষ্ট্রপরিচালনায় অঙ্গীকারবোধ সক্রিয় থাকলেই কেবল একজন রাষ্ট্রনায়কের পক্ষে তা অনুধাবন করে কার্যকর সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়। দেশে কোভিড-১৯ এর প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনস্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপোযোগী বক্তব্য দিয়ে এসেছেন। এমনকি তাৎপর্যপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত নির্দেশনাও তিনি বারবার নিজের মুখেই উচ্চারণ করেছেন, জনতাকে সতর্ক ও সচেতন করেছেন। এসবের মধ্য দিয়ে দেশবাসী আশ্বস্ত হয়েছিলেন যে জাতির দুঃসময়ে তাদের প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিকভাবে সব দিকে নজর রাখছেন এবং যখন মানুষের যে প্রত্যাশা তা পূরণ করছেন। এই ধারাবাহিক জনকল্যাণমুখী তৎপরতায় বর্তমান সরকারের অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ হলো দফায় দফায় প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা। স্মরণযোগ্য এর আগে গতবছর দেশে করোনা সংক্রমিত প্রথম ব্যক্তি শনাক্তের পরপরই প্রধানমন্ত্রী রফতানিমুখী শিল্পের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। সম্প্রতি গার্মেন্টস খাতের বিপুল পরিমাণ ক্রয়াদেশ প্রমাণ করে অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন সঠিক পদক্ষেপই গ্রহণ করেছিলেন। বুধবার আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে ‘করোনাকালীন শিল্প ও বাণিজ্য উন্নয়নে শেখ হাসিনার ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা অনুরূপ অভিমতই ব্যক্ত করেছেন।
করোনাভাইরাস বিশ্বে শুধু এক মহামারী হিসেবেই দেখা দেয়নি, বিশ্ব অর্থনীতির জন্যও তা এক অশনিসংকেত হয়ে দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার লক্ষণগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতি কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। অর্থনীতির বড় ধরনের বিপর্যয় রোধে প্রায় প্রতিটি দেশ নিজের মতো করে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। বৃহৎ অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রাথমিক পর্যায়েই এই প্যাকেজের পরিমাণ ছিল দুই লাখ কোটি ডলার। সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবেলায় বাংলাদেশেও বিশাল প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।
দেশবাসীর অভিজ্ঞতা হলো বঙ্গবন্ধুকন্যার বিচক্ষণ পদক্ষেপসমূহ অর্থনীতিতে গতিময়তা এনে দিয়েছে। ফলে আগামী দিনগুলোয় অর্থনীতির ইতিবাচক বাঁক বদল দেখার প্রত্যাশায় অদম্য বাংলাদেশ।