কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
চা শ্রমিকের সাথে মজুরি চুক্তি সম্পাদনে মালিক পক্ষের কালক্ষেপণের প্রতিবাদে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ২টি চা বাগানে চা শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ২ ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করে। পরে চা শ্রমিকরা প্রতিবাদ এই দুটি চা বাগান ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা ও চাম্পারায় চা বাগান প্রধান ফটকের সামনে প্রতিবাদ সভা করে বিক্ষুব্ধ চা শ্রমিকরা। শুক্রবার (৩০ মার্চ) সকাল থেকে এ দুটি চা বাগান কারখানার ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ কর্মবিরতি পালন করে। সবশেষে বিক্ষুব্ধ চা শ্রমিকরা প্রতিবাদ সভা করে।
শুক্রবার সকাল ১১টায় কুরমা চা বাগানের কারখানার প্রধান ফটকের সামনে এ বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি নারদ পাশীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলাই ভ্যালির (অঞ্চলের) সভাপতি গোপাল নুনিয়া, সহ-সভাপতি গায়েত্রী রানী রাজভর, বাঘাছড়া চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি রাখাল গোয়ালা, সাবেক ইউপি সদস্য নুরুর হক, নারী সদস্য কৃষ্ণা কায়েস্ত, শ্রমিক সর্দার বালক দাস পাইনকা, শ্রমিক নেতা রাজিক কৈরী।
একই সাথে চাম্পারায় চা বাগান প্রধান ফটকের সামনে এ বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি শঙ্কর বুনার্জির সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন চা শ্রমিক বিষাকা শুভ কর, লসমনিয়া কড়ি, লক্ষ্মী অলমিক, মুক্তা অলমিক প্রমুখ। আন্দোলনকারী চা শ্রমিকরা জানান,প্রতি দু’বছর অন্তর চা শ্রমিকদের মজুরি চুক্তির কথা থাকলেও ২০১৭ সনের জানুয়ারী মাসে চা শ্রমিকদের মজুরি চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্র্ণ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত না হওয়ায় দৈনিক ৮৫ টাকা মজুরিতে পাঁচ, সাত সদস্যের শ্রমিক পরিবার সদস্যরা দুঃখ-কষ্টে সংসার চালাতে হচ্ছে বলে শ্রমিকরা অভিযোগ তোলেছেন। মজুরি চুক্তির বাস্তবায়নের দাবীতে একটি স্মারকলিপির এ দুটি চা বাগান ব্যবস্থাপকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ সম্পর্কে জানতে চেয়ে ন্যাশনাল টি কোম্পানীর মালিকানাধীন কুরমা ও চাম্পারায় চা বাগান ব্যবস্থাপকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তারা কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল একটি সূত্র বলছে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদের সিদ্ধান্ত ছাড়া এ চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
উল্লেখ্য একই দাবিতে গত ২৩ মার্চ শুক্রবার কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নে ৫টি চা বাগানে ও ২৪ মার্চ শনিবার কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর চা বাগানে একই কর্মসূচী পালন করে চা শ্রমিকরা।