হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানা এলাকায় বারো আওলিয়ার মাজার নামস্থানে একটি বাসায় নবীগঞ্জের ইকবাল নামে (১৮) যুবককে শ^াসরোধ করেছে নবীগঞ্জেরই সহকর্মী ৫ শ্রমিক। গত (২৭ ফেব্র“য়ারী) মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে নিহত ইকবালের মরদেহ নিজ বাড়িতে পৌঁছায়। (২৮ ফেব্র“য়ারী) বুধবার জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে গত (২৬ ফেব্র“য়ারী) সোমবার বিকেলে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক স্বীকারোক্তি দিয়েছে ঘাতক রুহুল আমিন।
জানা যায়, গত দেড় মাস পূর্বে নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের মাইজগাঁও গ্রামের আব্দুল মন্নানের পুত্র রুহুল আমিন (১৮) মমত উল্লাহর পুত্র ছুটন মিয়া (২০), শিপন মিয়া (১৮), মৃত আব্দুল মন্নাফ এর পুত্র আবু রায়হান (১৮) ও গন্ধা গ্রামের জুনু মিয়া (২০) এর সঙ্গে বিএসআরএম কোম্পানির কাজের উদ্দেশ্য চট্টগ্রাম যান বাউসা ইউনিয়নের মাইজগাঁও গ্রামের ছায়েদ মিয়ার পুত্র ইকবাল মিয়া (১৮)। (২৮ ফেব্র“য়ারী) বুধবার ঘাতক রুহুল আমিন স্বীকারোক্তিকালে বলে, হত্যাকান্ডের ৪দিন পূর্বে রুহুল আমিনের মোবাইল ফোনের সিম কার্ড চুরি হওয়াকে কেন্দ্র করে ইকবালের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয় রুহুল আমিনের। এ ঘটনার পর গত (২৬ ফেব্র“য়ারী) সোমবার বিকেলে রহুল আমিনের গেঞ্জিতে হাত মুছার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রুহুল আমিন ও ইকবালের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে রুহুল আমিন ইকবালের গলায় চেপে ধরে এক পর্যায়ে ইকবাল নিঃশ^াস বন্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে সাড়া শব্দ না পেয়ে আবু রায়হান ও জুনু মিয়া ইকবালের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং ছুটন মিয়া ইকবালের বুকে লাথি দেয়। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইকবালকে মৃত ঘোষণা করেন। ইকবালের স্বজনরা জানান, এ ঘটনার পর হত্যার কথা গোপন রেখে ইকবালের স্বজনের কাছে ফোন দিয়ে হদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইকবালের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর দেয় ছুটন। পরে চট্টগ্রাম থেকে ইকবালে চাচাতো ভাই তাহিদ মিয়া ও ছোটন মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথিমধ্যে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ এলাকায় খাবার খাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যায় ঘাতক ছুটন। এদিকে গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ইকবালের মৃতদেহ নিজ গ্রামে পৌঁছালে নিহত ইকবালের মায়ের আহাজারিতে বাউসা এলাকার আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে উঠে। ইকবালের পিতা ছায়েদ মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে জানান, আমার ছেলেকে যারা নির্মম ভাবে হত্যা করেছে তাদের আমি ফাঁসি চাই। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে। চট্টগ্রাম জেলার পাঁচলাস থানার এসআই পলাশ প্রতিদেককে জানান, আমরা মৃতদেহের ছুরতহাল তৈরি করে মৃতদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করেছি।