বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
তাহিরপুরে বোরো ধান রোপণ মৌসুম শুরু হলেও বিশেষ কৃষি পুনর্বাসনের টাকা পাচ্ছে না ২৯ হাজার ৯শ ৪৮জন কৃষক। স্থানীয় দু’ব্যাংক সোনালী ও কৃষি তাহিরপুর শাখার কর্মকর্তারা ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কৃষকদের টাকা দেই দিচ্ছি করেও দিচ্ছেন না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন তিনি কৃষকদের প্রয়োজনীয় সকল কাগজ পত্র ঠিকঠাক করে মাস খানেক পূর্বেই কৃষি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক এর তাহিরপুর সদর ও বাদাঘাট শাখায় কৃষকদের তালিকা পাঠিয়েছেন।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ ব্যাংক কর্মকর্তারা ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কৃষকদের টাকা দেই দিচ্ছি করেও দিচ্ছেন না। অথচ হাওরে হাওরে ইতিমধ্যে বোরো ধান রোপণ মৌসুম শুরু হয়ে গেছে।
জানা যায়, বিগত বছর অকাল বন্যায় বাঁধ ভেঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার সবক’টি বোরো ফসলি হাওর তলিয়ে যায়। পরবর্তীতে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনবার্সনের জন্য চলতি বছর বীজ, সার ও নগদ অর্থ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় তাহিরপুর উপজেলায় ২৯ হাজার ৯শ ৪৮ জন কৃষককে জন প্রতি ৫ কেজি বীজ ধান, ৩০ কেজি সার ও নগদ ১ হাজার করে টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। মাস খানেক পূর্বে বীজতলা তৈরী করার সময় উপজেলার ৭ ইউনিয়নে ২৯ হাজার ৯শ ৪৮ জন কৃষক কে বীজ ধান ও সার সরবরাহ করে তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস। এরই সাথে সাথে কৃষকদের নগদ অর্থ জন প্রতি ১ হাজার টাকা প্রদানের জন্য সকল প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র তৈরী করে কৃষি অফিস সোনালী ও কৃষি ব্যাংক তাহিপুর শাখায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রেরণ করে। প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র প্রেরণের পর মাস খানেক সময় অতিবাহিত হলেও সেই সাথে হাওরে বোরো ধান রোপণের মৌসুম শুরু হলেও স্থানীয় ব্যাংক দু’টির তাহিরপুর ও বাদাঘাট শাখায় এখন পর্যন্ত কৃষকদের পুনর্বাসনের টাকা প্রদান করেনি। অন্যদিকে বোরো ধান রোপণের যথাযথ মৌসুম শুরু হওয়ায় কৃষকরা পুনর্বাসনের টাকা পেতে প্রায়ই উপজেলা কৃষি অফিসে কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
অনেক কৃষক স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছেও জানতে চাইছেন কখন পুনর্বাসনের টাকা পাবেন, রোপণ মৌসুম শেষ হয়ে গেলে কি তবে কৃষি পুনবার্সনের টাকা পাবেন তারা।
উজান তাহিরপুর গ্রামের শনির হাওরের কৃষক নাজমুল হুদা বলেন, এমনিতে কৃষকরা ধার দেনা করে জমি রোপণ করছেন, যথাসময়ে পুনর্বাসনের টাকাটা পেলে কৃষকদের কিছুটা সহায় হত।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সবুজ মিয়া বলেন, বোরো ধান রোপণ মৌসুম, কৃষকদের টাকাটা তাদের হাতে দ্রুত তুলে দিলে তাদের অনেক উপকার হত। কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তা দেই দিচ্ছি করে শুধু সময় নিচ্ছেন।
শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্বজিত সরকার বলেন, বোরো রোপণ মৌসুম চলছে, যথা সময়ে টাকাটা পেলে কৃষকদের অনেক উপকার হত। টাকার জন্য কৃষকরা প্রতিদিন আমাদের কাছে ভিড় করছেন।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুছ ছালাম বলেন, আমি অনেক পূর্বে কাগজ পত্র পাঠিয়েছি ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেছিলেন জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহেই কৃষকদের টাকা প্রদান করবেন।
এ বিষয়ে কথা হয় সোনালী ব্যাংক তাহিরপুর শাখা ব্যবস্থাপক পুলক রঞ্জন চক্রবর্ত্তীর সাথে তিনি জানান, আগামী ২৫ জানুয়ারী থেকে কৃষকদের পুনর্বাসন কার্যক্রম চলবে।