দাপুটে জয় ॥ আজ ফাইনালে সাকিবের মুখোমুখি মাশরাফি

47

স্পোর্টস ডেস্ক :
জনসন চার্লস আর ব্রেন্ডন ম্যাককালামের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের পর ফিল্ডিংয়ে নেমে দুর্দান্ত টিম পারফর্মেন্স। পুরো ম্যাচে পাত্তাই পেল না চলতি সিরিজে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে জয় পাওয়া তামিম ইকবালের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। দ্বিতীয় কোয়লিফায়ার ম্যাচে ৩৬ রানে জয় তুলে নিয়ে ফাইনালের টিকিট পেয়ে গেল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল রংপুর রাইডার্স। ১৯৩ রানের টার্গেটে মাত্র ১৫৭ রানে অল-আউট হয়ে গেল কুমিল্লা। সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে আজ ১২ ডিসেম্বর শের-ই-বাংলার গ্র্যান্ড ফাইনালে মুখোমুখি হবে রংপুর রাইডার্স।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৯৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রংপুর ফিল্ডারদের সৌজন্যে বিপদ থেকে বেঁচে যায় কুমিল্লা। দলীয় ৫৪ রানে অধিনায়ক তামিম ইকবালকে সোহাগ গাজীর তালুবন্দি করেন রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি। ১৯ বলে ৩৬ রানের ছোটখাট একটা ঝড় তুলে ফিরেন দেশসেরা ওপেনার। ২ রানের ব্যবধানে সোহাগ গাজীর বলে ইমরুলক কায়েসকে (০) স্টাম্পড করে দেন উইকেটকিপার মোহাম্মদ মিথুন।কুমিল্লার দূর্গে তৃতীয় আঘাত হানেন নাজমুল ইসলাম। আজ মোটেও সুবিধা করতে পারেননি শোয়েব মালিক।
রুবেল হোসেনে তালুবন্দি হওয়ার আগে করলেন ১৪ বলে ১০ রান। ওপেনিংয়ে নেমে একপ্রান্ত আগলে দারুণ খেলছিলেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান লিটন দাস। তার ২৮ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৩৯ রানের ইনিংসটি থামে উদানার বলে মিথুনের গ্লাভসবন্দি হয়ে। ব্যক্তিগত ১৪ রানে ক্যাচ দিয়েও নো বলের কল্যাণে বেঁচে যান স্যামুয়েলস।
জীবন পেয়ে বাটলারকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন স্যামুয়েলস। ১৬ বলে ২৬ করা ইংলিশ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানকে নাজমুল ইসলামের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করে ব্রেক থ্রু এনে দেন রবি বোপারা। বিধ্বংসী স্যামুয়েলসকেও (২৭) প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান এই ইংলিশ অল-রাউন্ডার। হাসান আলী (৬) এবং সাইফ উদ্দিনকে (০) যথাক্রমে আউট করেন রুবেল হোসেন এবং উদানা। রুবেলের দ্বিতীয় শিকার হন মেহেদী হাসান (০)। ৩৬ রানের জয় তুলে নিয়ে বিজয়োল্লাসে মেতে ওঠে রংপুর রাইডার্স।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯২ রান তোলে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। গতকাল রবিবার ব্যাটিংয়ে নেমে ক্রিস গেইল এবং জনসন চার্লস ভালোই শুরু করেছিলেন। তবে গত ম্যাচের মত ক্যারিবিয়ান দানবের ইনিংসটি বড় হয়নি। মাত্র ৩ রান করে মেহেদী হাসানের শিকার হয়েছেন তিনি। কুমিল্লার বোলারদের ওপর চড়াও হন অপর ওপেনার চার্লস। তারপর বৃষ্টিতে ম্যাচ বন্ধ হয়ে যায়।
গত রবিবার ম্যাচ বন্ধ হওয়ার সময় ৪৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। সোমবার ম্যাচের শুরুতেই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। গতকাল ভয়ংকর রূপে দেখা দেন ম্যাককালামও। দুজনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে তরতর করে এগিয়ে যেতে থাকে রংপুরের রান। এক সময় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন গোটা টুর্নামেন্টে অনুজ্জ্বল ম্যাককালামও। দুজনেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে।
১৯তম ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত ৭৮ রানে হাসান আলীর বলে ম্যাককালাম বোল্ড হলে ভাঙে ১৫১ রানের বিধ্বংসী জুটি। ৪৬ বলের ইনিংসে মাত্র ১টি চার এবং ৯টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন এই কিউই হার্ডহিটার। শেষ ওভারে বলের সঙ্গে সেঞ্চুরির প্রতিযোগিতা শুরু হয় চার্লসের। এর মধ্যেই সাইফ উদ্দিনের বলে আউট হয়ে যান রবি বোপারা। পরের বলেই তিন অংকে পৌঁছান চার্লস। ৬৮ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৯টি চার এবং ৭টি ছক্কা। ইনিংস শেষে অপরাজিত ১০৫ রানে। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯২ রান তুলে রংপুর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রংপুর রাইডার্স : ২০ ওভারে ১৯২/৩ (চালর্স ৬৩ বলে ১০৫*, গেইল ৩, ম্যাককালাম ৪৬ বলে ৭৮; মেহেদী হাসান ১/৪৪, হাসান আলী ১/২৩, সাইফুদ্দিন ১/৩৮)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ২০ ওভারে ১৫৬/১০ (তামিম ৩৬, লিটন ৩৯, ইমরুল ০, শোয়েব মালিক ১০, স্যামুয়েলস ২৭, বাটলার ২৬ ; উদানা ২/২৪, বোপারা ২/১৭, সোহাগ গাজী ১/১৫, রুবেল ৩/৩৫, মাশরাফি ১/৪০, নাজমুল ১/২৫)
ফল : রংপুর রাইডার্স ৩৬ রানে জয়ী।