ছাতক থেকে সংবাদদাতা :
ছাতকে গ্রাম্য পঞ্চায়েত কর্তৃক যুক্তরাজ্য এক প্রবাসী পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা না দেয়ায় পঞ্চায়েত থেকে বাদ দিয়ে এক ঘরে করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় প্রবাসী পরিবারসহ পঞ্চায়েত পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফলে যে কোন সময় এ দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, ছাতক উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের বুরাইয়া গ্রামের মৃত আবদুল আলীর ছেলে আবদুল হাসনাত স্ব-পরিবারে দীর্ঘদিন যাবত যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন। তার অনুপস্থিতিতে বাড়ি-ঘর-জমি জামা দেখা শুনা করে আসছেন একই গ্রামের আশিক আলী ও তার স্ত্রী সূর্যবান বিবি। প্রবাসী আবদুল হাসনাত গ্রাম এবং এলাকায় বিভিন্ন সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদরাসাসহ গরিব-অসহায় মানুষদের আর্থিক সাহায্য ও সহযোগিতা করে থাকেন। তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাঙালী কমিউনিটিতে সুনামের সাথে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েত নামে কতিপয় লোক মসজিদের ওযুখানা বাবদ ৩ লক্ষ টাকাসহ মোট ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসলে তাদের দাবিকৃত টাকা এককালিন পরিশোধ করতে অপারগতা প্রকাশ করায় প্রবাসী আবদুল হাসনাতের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে পঞ্চায়েত নামধারি গ্রামের কতিপয় লোকজন। এরা বুরাইয়া হাই স্কুল এন্ড কলেজ নামক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে চাঁদাবাজির মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছেন। তারা এ চাঁদাবাজিকে তাদের রোজগারের অবলম্বন হিসেবে বেচে নিয়েছে। চাঁদা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত নামধারিরা প্রবাসীর বসতবাড়ি, পুকুরের মাছ, বৃক্ষরাজি, জায়গা-জমি আত্মসাতের অপচেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় ২৭ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে গ্রামের কিছু সংখ্যক সহজ-স্মরল মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে স্বার্থান্বেষী মৃত মদরিছ আলীর ছেলে রইছ আলীর নেতৃত্বে ও তার সভাপতিত্বে মসজিদের দোকানের সামনে এক বৈঠক করে। বৈঠকে প্রবাসী পরিবারকে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বাদ দিয়ে একঘরে করে দেয়া হয়। তারা আরো সিদ্ধান্ত নেয়, প্রবাসী আবদুল হাসনাত বা তার পরিবারের কেউ গ্রামে আসলে গ্রামের আবাসিক এলাকা গেইটে গাড়ি রেখে জুতা হাতে নিয়ে খালি পায়ে প্রবেশ করতে হবে। এ পরিবার পঞ্চায়েত পুনরায় অন্তর্ভুক্ত হতে চাইলে ওযুখানা বাবদ ৩ লক্ষ টাকাসহ মোট ১০ লক্ষ টাকা পরিশোধ সাপেক্ষে আলোচনা করা যেতে পারে। এমন কি প্রবাসীর বাড়িতে দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা কেয়ারটেকার আশিক আলী ও তার স্ত্রী সূর্যবান বিবিকে ১৫ দিনের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে যেতে নির্দেশও দেয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত নামধারি কিছু ব্যক্তির স্বাক্ষরিত নির্দেশ ও সিদ্ধান্তনামায় আরো উল্লেখ করা হয়, প্রবাসী আবদুল হাসনাতের অবর্তমানে তার সহায় সম্পত্তি মৃত আবদুল আজিজের ছেলে প্রবাসীর চাচাতো ভাই আলী আহমদ ভোগ দখল করবে। এ ঘটনায় প্রবাসী আবদুল হাসনাতের ভগ্নিপতি ও উপজেলার ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নের শেখপুর সিংগুয়া গ্রামের মৃত নসিব আলীর ছেলে ফয়ছল আহমদ বাদি হয়ে রইছ আলী (৫৮) কে প্রধান আসামি করে ১৩জনের নাম উল্লেখ করে ৮ ডিসেম্বর ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ (সি: ১০৮৭) দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে থানার এস আই শাহিনুর রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে ছাতক-দোয়ারা সার্কেলের এএসপি মো. দুলন মিয়া জানান, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।