মৌলভীবাজারে তালামীযের ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) র‌্যালি ও আলোচনা সভা ॥ নতুন প্রজন্মের কাছে নবীর আখলাক তুলে ধরতে হবে

37

হাতে হাতে প্লে-কার্র্ড, ফেস্টুন। তাতে খচিত রাসূলের প্রশংসায় লিখিত কালজয়ী কবিতার পংক্তি। মাথায় সবুজ পাগড়ি। এগিয়ে চলছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর র‌্যালি। মাইকে বাজছে শিল্পীদের দরদমাখা কণ্ঠে নাত। ‘তালায়াল বাদরু আলাইনা, মিনছানি ইয়াতিল বিদায়ি’, ‘সকল ঈদের সেরা ঈদ, ঈদে মিলাদুন্নবী’ ‘মারহাবা মারহাবা বলে উঠলো পৃথিবী, ঈদে মিলাদুন্নবী আজ মিলাদুন্নবী’। মুখে মুখে উচ্চারিত এসব গজলের সুরে মুখরিত মৌলভীবাজারের অলি-গলি, রাজপথ। চৌমূহনী পয়েন্ট থেকে কুসুমবাগ-এক লাইন, এক সারি। এটি ছিল গতকালের তালামীযে ইসলামিয়া মৌলভীবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে শহরে র‌্যালির দৃশ্য।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে শহরের টাউন ঈদগাহ সংলগ্ন মাঠে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে দুপুর ২টায় এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাহ মোস্তফা সড়কে গিয়ে শেষ হয়।
সকাল থেকেই নবীপ্রেমিক মুসলিম জনতা, ছাত্র-শিক্ষক, আলেম-উলামা র‌্যালিতে যোগ দিতে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে মৌলভীবাজার টাউন ঈদগাহ মাঠে জড়ো হতে থাকেন।
মৌলভীবাজার জেলা তালামীযের সভাপতি নিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম এ জলিলের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও হাইকোর্ট মসজিদের ইমাম, আল ইসলাহর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি রেদ্বওয়ান আহমদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা শামসুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এম এ আলিম, সহ-সাধারণ সম্পাদক হাফিয এনামুল হক, কাজী সিরাজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় তালামীযের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাছুম আহমদ, প্রচার সম্পাদক হাফিয কাওছার আহমদ, মৌলভীবাজার জেলা তালামীযের সাবেক সভাপতি মাওলানা শফিকুল আলম সুহেল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) কে প্রশ্ন করা হয়েছিলো আপনি সোমবারে কেন বেশি বেশি রোজা রাখেন। তখন তিনি বলেন, এদিনে আমার জন্ম হয়েছিলো এবং এইদিনে আমার উপর কোরআন নাযিল হয়েছিলো। রাসূল (সা.) এর দ্বারা প্রমাণ হয় তিনি নিজেই তার জন্মের শুকরিয়া আদায় করেছেন। ইতিহাসের কিতাবে পাওয়া যায় রাসূলের জন্মের সাত দিনের দিন তাঁর দাদা আব্দুল মুত্তালিব দুটি খাসি দিয়ে তাঁর আকিকা করেছেন। হাদীসের কিতাবে আরও উল্লে¬খ আছে আল্লাহর রাসূল নিজেও খাসি কুরবানী দিয়ে নিজের আকিকা করেছেন।
মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী আরো বলেন, আমাদের বড় ব্যর্থতা হলো আমরা রাসূলকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পারি নাই। আর সেখানে মিডিয়াগুলোও চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। মিডিয়ার কল্যাণে আজ আলেমরাও পাঁচজন খেলোয়াড়ের নাম জানে। আমাদের ছেলেরা অমুক তমুক খেলোয়ারের ভক্ত। তারা খেলোয়াড়ের স্টাইলে চুল কাটে। অথচ জীবনে ও মরনে যে নবীর প্রয়োজন আমাদের সে নবীর ভক্ত হতে হবে। লেখালেখি, আলোচনা অনুষ্ঠান ও র‌্যালির মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে নবীর আখলাক তুলে ধরতে হবে। বর্তমানে নবীর সাথে আমাদের শিশুদের, সমাজের মানুষের পরিচয় করিয়ে দেয়ার সহজ মাধ্যম হলো আলোচনা সভা ও র‌্যালি করা।
আলেচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ হাফিয মাওলানা আলাউর রহমান টিপু, মৌলভীবাজার জেলা আল ইসলাহর সহ-সভাপতি মাওলানা মুহিবুর রহমান, মাওলানা মকবুল হোসেন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ ইউনুছ আলী, প্রচার সম্পাদক মুফতি রুহুল আমিন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সিরাজুল ইসলাম মাসুক, রাজনগর উপজেলা আল ইসলাহর সভাপতি নজরুল ইসলাম, জেলা আল ইসলাহ নেতা হাফিয মীর্জা শামীম আহমদ, হাফিয বজলুর রহমান, মাওলানা এম ফয়জুল ইসলাম, ইসলামি সংগীত শিল্পী মুজাহিদুল ইসলাম বুলবুল, তালামীযের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ওয়ালিউর রহমান সানী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক জায়েদ আহমদ চৌধুরী, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার ওজিউর রহমান আসাদ, সদস্য বেলাল উদ্দিন কামরান, মৌলভীবাজার জেলা তালামীযের সাংগঠনিক সম্পাদক কাদের আল হাসান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিয জিল্লুর রহমান প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি