কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট ৫নং বড়চতুল ইউপি আ’লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুবশ্বির আলী চাচাই’র উপর গত বৃহস্পতিবার সন্দ্যায় কতিপয় ছাত্রলীগের নেতা কর্মী কর্তৃক হামলার ঘটনায় চতুল এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ছাত্রলীগের কিছু কর্মীদের হাতে হামলার শিকার আ’লীগ নেতা মুবশ্বির আলীর পক্ষ নিয়ে ঘটনার পরই বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে চতুল পরগনার লোকজন কানাইঘাট-দরবস্ত সড়কের গড়াখাই ব্রীজের পাশে লাঠিসোটা নিয়ে জমায়েত হয়ে কানাইঘাট বাজারের দিকে আসার পথে কানাইঘাট থানা পুলিশ সেখানে তাদের ব্যারিকেড দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। কিন্তু তার পরও চতুল পরগনার লোকজন এতে থামেনি। তারা মুবশ্বির আলীর উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে চতুল ইউনিয়ন ও চতুল পরগনার ২/৩ হাজার লোকজন দেশীয় লাঠিসোটা ও দারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চতুল বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে জমায়েত হয়ে সকাল ৭ টার দিকে কয়েক কিলো: রাস্তা পায়ে হেঁটে কানাইঘাট বাজারের উদ্দেশ্যে মিছিল সহকারে রওয়ানা দিলে পুরো এলাকা জুড়ে জনমনে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে উপজেলা সদর অতিক্রম করার সময় কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ থানার অদূরে মিছিলকারীদের গতিরোধ করার চেষ্টা করলে মিছিলকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে সকাল ১০ টার দিকে কানাইঘাট বাজারে ঢুকার আগেই আতংকিত ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান-পাট বন্ধ করে দেন। আ’লীগ নেতা মুবশ্বির আলীর উপর হামলা কারীদের বিরোদ্ধে নানা ধরনের শ্লোগান দিয়ে মিছিলকারীরা বাজার প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চতুল এলাকার হকারাই পয়েন্টে সমবেত হয়ে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এ সময় চতুল-দরবস্ত সড়কে যান চলাচল প্রায় ঘন্টা খানিক বন্ধ ছিল। সমাবেশে চতুল পরগনার মুরব্বীদের উপস্থিতে চতুল ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি মুবশ্বির আলী তাঁর বক্তব্যে বলেন চতুল পরগনার হাজার হাজার লোকজন আজ দেখিয়ে দিয়েছে তারা যে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে জানেন। পরিকল্পিত ভাবে গত বৃহস্পতিবার সন্দ্যা ৭ টার দিকে কানাইঘাট উত্তর বাজারে দলীয় অস্থায়ী কার্যালয়ে তাঁর উপর হামলা করা হয়েছে উলে¬খ করে তিনি বলেন, চিহ্নত হামলাকারীদের আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। বড়চতুল ইউপির চেয়ারম্যান মাও: আবুল হোসাইন চতুলী তাঁর বক্তব্যে বলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুবশ্বিও আলীর উপর যে ন্যাক্কার জনক সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না। চতুল পরগনা বাসী যে কোন অন্যায় কাজের এক সঙ্গে প্রতিবাদ করতে জানেন। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে চতুল বাসীর পক্ষ থেকে বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহন করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন। এদিকে দলীয় কিছু কর্মীদের হাতে মুবশ্বির আলীর উপর হামলার ঘটনা নিয়ে চতুল পরগনার লোকজন কানাইঘাট বাজারে লাঠি মিছিল করায় অন্যান্য পরগনার লোকজনদের মধ্যে নানা ধরণের প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। চতুল পরগনার মিছিলকে কেন্দ্র করে যাতে কোন ধরণের অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্য কানাইঘাট সার্কেলের এএসপি আমিনুল ইসলাম সরকার ও কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদের নেতৃত্বে উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। থানার ওসি আব্দুল আহাদ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আ’লীগ নেতা মুবশ্বির আলীর উপর হামলার তুচ্ছ এ ঘটনাটি নিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। তবে এ ঘটনায় থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন। পুলিশ কয়েক জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বাড়িতে হানা দিয়েছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, মুবশ্বির আলী চাচাই তাঁর উপর যে হামলার অভিযোগ এছেন, এটি ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধকে কেন্দ্র করে ঘটেছে। স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা দেলওয়ার হোসেন দুলাল কর্তৃক তার ফেইসবুক আইডিতে প্রতিপক্ষ গ্র“পের নেতা কর্মীদের নিয়ে পোস্ট করলে গত বৃহস্পতিবার সন্দ্যার দিকে ছাত্রলীগের কিছু কর্মী কানাইঘাট উত্তর বাজারে তার উপর হামলা চালালে সে নিজেকে বাঁচাতে উপজেলা আ’লীগের প্রস্তুতি মূলক সভায় ঢুকে পড়ে। সেখানে হামলাকারীরা চড়াও হয়ে দুলালের উপর হামলা চালালে সভায় উপস্থিত উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক লুৎফুর রাহমান, বড় চতুল ইউপি আ’লীগের সভাপতি মুবশ্বির আলী, দীঘিরপার ইউপি আ’লীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন কাজল ও হামলাকারীদেও হাতে আক্রান্ত হন। মুবশ্বির আলীকে পরিকল্পিত ভাবে মারধর করা হয় বলে চতুল পরগনার লোকজন দাবী করেছেন। তবে এ তুচ্ছ ঘটনাটি নিয়ে পরগনা ইজম তুলায় সচেতন মহল ভাল চোখে দেখছেন না।