সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ‘খ’ ইউনিটে উত্তীর্ণ হয়েছেন পিতৃহীন এবং দিনমজুর মায়ের সন্তান সুনামগঞ্জ শহরতলীর আলমপুরের মোজাহিদুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে ভর্তি হবেন, কোথায় থাকবেন, লেখাপড়াসহ থাকা-খাওয়ার খরচ কোথা থেকে আসবে-এই চিন্তায় যখন দিশে হারা মোজাহিদ। তখনই তার আকাশে উদিত হলো নতুন এক তারা। তিনি হলেন সুনামগঞ্জ সদর সার্কেলের এএসপি তাপস রঞ্জন ঘোষ। ঢাবিতে ভর্তি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া হতদরিদ্র মোজাহিদুল ইসলাম এর ভর্তির দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। মোজাহিদুল কে নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি তাঁর দৃষ্টিগোচর হয়। পরে মোজাহিদুল এর সাথে সরাসরি কথা বলে তাকে ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।
জানা যায়, চার বোন এক ভাইয়ের সংসারে ২ নম্বর সন্তান মোজাহিদুল। সাত বছর আগে বাবা মতিউর রহমান মারা গেছেন। সে থেকেই মা জাকিয়া বেগম ইটভাটার শ্রমিক। ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় মোজাহিদুল ১৮৫তম স্থান অর্জন করে। আলমপুর দারুল হুদা মাদ্রাসা থেকে দাখিলে গোল্ডেন জিপিএ ৫ এবং শহরতলীর মাইজবাড়ি আলহেরা মাদ্রাসা থেকে আলিম পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে পাস করে মোজাহিদ। দাখিল-আলিম কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার পর ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ‘খ’ ইউনিটে উত্তীর্ণ হয় সে।
মোজাহিদুল জানায়, দাখিল পাসের আগে লজিং থেকে টিউশনি করেছেন। দাখিল পাসের পর সবকিছুর দায়িত্ব নিয়েছিলেন সনাকের সুনামগঞ্জের সভাপতি। একটি ব্যাংক থেকেও মাসে ২ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। কিছু জমিয়ে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়া-আসার খরচ চালিয়েছেন। তিনি অ্যাডমিন ক্যাডার হতে চান। এমন দুশ্চিন্তায় থাকা মোজাহিদুরের পাশে দাাঁড়িয়েছেন সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন। তিনি মোজাহিদুল এর ভর্তিসহ যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করার আশ্বাস দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তাপস রঞ্জন ঘোষ জানান- মেধাবীরা আমাদের দেশের সম্পদ, তাদের পাশে দাঁড়ানো সকলের নৈতিক দায়িত্ব। হাওরে ভেসে যাওয়া অসহায় মানুষগুলোর সাথে যেন মেধাবীদের স্বপ্নও যেন পানিতে না ভেসে যায় সেজন্য মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে এগিয়ে এসেছি।