সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় মালিকানাধীন একটি ডোবায় দুই শিশুর মাছ ধরার ঘটনার মীমাংসা করতে গিয়ে শনিবার সকালে প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলায় শাহীন আলম নামে এক ইউপি সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
আশংকাজনক অবস্থায় ইউপি সদস্য শাহীন আলম (৩৫) ও শাস্তু মিয়াকে (৫২) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহত ৫ জনকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদেরকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করলে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- শনিবার সকাল নয়টার দিকে উপজেলার আহম্মদপুর গ্রামের পাশের বন্ধে ওই গ্রামের ওয়াফিজ তালুকদারের(৬২) মালিকানাধীন একটি ডুবায় পাশের মুদাহপুর গ্রামের আলাল উদ্দিনের দুই ছেলে দীপু মিয়া (১৫) ও মিজানুর রহমান (১২) শখের বশে একটি ঠেলা জাল নিয়ে মাছ ধরতে যায়। পরে ওই দুই শিশুর মাছ ধরার বিষয়টি ডোবার মালিক ওয়াফিজ মিয়ার নজরে পরলে তিনি একটি লাঠি হাতে নিয়ে ওই ডোবায় যান এবং তিনি ওই দুটি শিশুকে ডোবা থেকে তুলে এনে তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে এলোপাথারীভাবে মারধর করতে থাকেন। মারধরের এক পর্যায়ে ওই দুইটি শিশু জাল ও মাছ রাখার পাত্রটি ফেলে রেখেই দৌড়ে বাড়ি চলে গিয়ে বিষয়টি তার পরিবারের লোকজনদেরকে জানায়। পরে বিষয়টি জানার জন্য আহত দুই শিশুর বড় ভাই শাজিবুর রহমান (২৩) ডুবার মালিক ওয়াফিজ তালুকদারের বাড়িতে যান। এ সময় ওয়াফিজ তালুকদারের ভাতিজা সাবেক ইউপি সদস্য সাদেক মেম্বারের নেতৃত্বে ৪-৫ লাঠি ও রড দিয়ে শাজিবুরকেও এলোপাথারী মারধর করে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। পরে ওইদিনই সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে বাড়ির পাশের আহম্মদপুর বাজারের একটি চায়ের দোকানে বর্তমান ইউপি সদস্য শাহীন আলমসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য একটি সালিশী বৈঠকে বসেন। সালিশী বৈঠকের এক পর্যায়ে সাবেক ইউপি সদস্য সাদেক মেম্বারের নির্দেশে তার লোকজন বর্তমান ইউপি সদস্যসহ প্রতিপক্ষের লোকজনের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় ইউপি সদস্য শাহীন আলম ও শাস্তু মিয়াসহ অন্তত আরো ১০ জন গুরুত্বর আহত হন। আশংকাজনক অবস্থায় ইউপি সদস্য শাহীন আলম (৩৫) ও শাস্তু মিয়াকে (৫২) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরই করা হয়েছে।
সেলবরষ ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযুদ্ধা নুর হোসেন নেক্কারজনক এ ঘটনাটির নিন্দা জানিয়ে বলেন- আমরা এ বিষয়টির চূড়ান্ত বিচার চেয়ে রবিবার সকালে জেলা প্রশাসকসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের জন্য আজ বিকেলেই পরিষদের সকল সদস্যদের নিয়ে সভা করেছি এবং সভায় রেজুলেশনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ধর্মপাশা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম কিবরিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তবে এ ব্যাপারে এখনো থানায় কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে এ বিষযে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। (খবর সংবাদদাতার)