জগন্নাথপুরে রাস্তার বেহাল দশায় জন ভোগান্তি চরমে

56

জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুরে একটি গ্রামীন রাস্তার বেহাল দশার কারণে জন ভোগান্তি চরমে পৌছেছে। রাস্তা থাকলেও নৌকায় potoযাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এ নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের চিলাউড়া (রৌয়ারকান্দি) গ্রামটি অত্র অঞ্চলের একটি অবহেলিত গ্রাম। এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ স্থানীয় মইয়ার হাওর ও নলুয়ার হাওরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। গ্রামের সব মানুষই প্রায় দিন মজুর। মইয়ার হাওরের বুক ছিঁড়ে গড়ে উঠেছে গ্রামটি। এক সময় এ গ্রামের মধ্য দিয়ে জগন্নাথপুর-চিলাউড়া বাজার পর্যন্ত সড়ক হওয়ার কথা ছিল। পরে সড়কটি স্থানীয় শেরপুর-যাত্রাপাশা, হলদিপুর ও কবিরপুর হয়ে গুড়িয়ে গেছে। গ্রামের দক্ষিণ দিকে মইয়ার হাওর ও উত্তর দিকে রৌয়া বিল। বর্ষা মৌসুমে ঢেউয়ের কবলে পড়ে গ্রামের বাািড়ঘর। ভেঙে যায় বাড়ির বসত ভিটা। এরপরও যুগযুগ ধরে ঢেউয়ের সাথে লড়াই করে বসবাস করছেন গ্রামে প্রায় শতাধিক পরিবার। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ হত দরিদ্র। দেশ স্বাধীনের ৪৬ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত এ গ্রামে লাগেনি উন্নয়নের ছোয়া। যদিও অত্র অঞ্চলে অনেক নামিদামি রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধির জন্ম হয়েছে।
শুক্রবার সরজমিনে দেখা যায়, এ গ্রামের বুক ছিড়ে ছোট একটি কাচা মাটির রাস্তা রয়েছে। জগন্নাথপুর-চিলাউড়া প্রধান সড়কের মাদ্রাসা পয়েন্ট থেকে পূর্ব দিকে এ রাস্তাটি গ্রামে ঢুকেছে। প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাটির বেশির ভাগ পানির নিচে ডুবে আছে। বাকি রাস্তা কাদা মাটিতে পরিণত হয়ে মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কারণে রাস্তা থাকা সত্ত্বেও গ্রামবাসী নৌকা যোগে চলাচল করছেন। এতে গ্রামের লোকজনের ভোগান্তির শেষ নেই।
এ সময় গ্রামের প্রবীণ মুরব্বি ইস্তাব উল্লাহ, চন্দন আলী, তখলুছ মিয়া, দবির মিয়া, কনর মিয়া, আবদুস শহিদ, বাচ্চু মিয়া, কনু মিয়া, জায়ফর আলী, ছুরুক মিয়া, ইকবাল হোসেন সহ গ্রামের আবাল-বৃদ্ধ বণিতা ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা কি মানুষ! আমরা কোন দেশের নাগরিক। আমরা নিজেরাই বুঝতে পারছি না। দেশ স্বাধীনের ৪৬ বছর অতিবাহিত হলেও আমাদের গ্রামে কোন উন্নয়ন হয়নি। গ্রামের একটি মাত্র কাচা মাটির রাস্তা, তাও চলাচলের অনুপযোগী। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার ধর্ণা দিলেও কোন কাজ হয়নি। বন্যার পানিতে রাস্তাটি তলিয়ে গেছে। বাকি রাস্তা গহব্বর। গহব্বরে হাটতে গেলে হাঁটু পর্যন্ত দেবে যায়। রাস্তারটির বেহাল দশার কারণে গ্রামের কোন মানুষ চলাচল করতে পারছে না। যে কারণে নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হয়। রাস্তাটির খারাপ হওয়ার কারণে গ্রামের কোন ছাত্রছাত্রী স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় যেতে পারছে না। যে কারণে তাদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে রাস্তায় মাটি ভরাট করতে তারা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদ জানান, আগামিতে এ রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজ করার চেষ্টা করবো।