স্টাফ রিপোর্টার :
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও আনন্দ খুশির মধ্যদিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উদযাপিত হয়েছে। সারাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সাথে বিপুল উৎসাহে, উল্লাসে আর পুতঃপবিত্র ও পরিতৃপ্ত ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সিলেটেও উদযাপিত হলো ধর্মীয় উৎসবমুখর এ দিনটি। এদিন সকাল হতেই চিরচেনা নগরীর চিত্রে যোগ হয় বাড়তি মাত্রা। উৎসবমুখর মুসলিম জনতার ঢল নামে পথে পথে। নতুন জামা-কাপড় পরিহিত ঈদ-জামাতমুখি মুসল্লিদের সারিতে একাকার যেনো শিশু-বৃদ্ধ-যুবক সব বয়েসি মানুষেরা। ঈদ জামাতের মহাসম্মিলনে এক সারিতে মিলেছিলেন এদিন গরীব-ধনী, শত্র“-মিত্র, জাত-পাত, শ্রেণী-বৈষম্য ভুলে গিয়ে সকলেই। কোথাও কোথাও প্রতিবন্ধী, অসুস্থ কিংবা অশীতিপর পৌঢ়দেরও দেখা মিলেছে ঈদের জামাতে। বিশেষ ব্যবস্থায় হুইল চেয়ারে চড়ে বা স্বজনের কাঁধে ভর করেও এসেছিলেন অনেকেই ঈদের জামাতে। বৎসরের এই একটি দিনের বিশেষ আয়োজনে যোগ দিতে উৎসাহে বিন্দুসম ভাটা নেই যেনো বিশেষ ব্যবস্থায় ঈদ-জামাতে আসা এসব মুসল্লিদেরও।
নগরীতে সবচেয়ে বড় ঈদ-জামাত অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহি শাহী ঈদগায়। সকাল সাড়ে আটটায় শুরু হওয়া ঈদ-জামাতের পূর্বেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মূল চত্বর। সময় বাড়ার সাথে সাথে শাহী ঈদগাহ’র বৃহৎ মাঠ ছাড়িয়ে মুসল্লিরা জায়গা করে নেন আশপাশের রাস্তাঘাটেও। যে যেখানে সুযোগ পান সেখানেই সেজদার ও দাঁড়ানোর জায়গা করে নেন, পেতে দেন জায়নামাজ। শাহি ঈদগাহ সংলগ্ন মূল রাস্তাঘাট ছাড়িয়ে যায় মুসল্লিদের দীর্ঘ লাইন। নগরীর বৃহৎ এ জামাতে সকলের সাথে অংশগ্রহণ করেন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা। পেশাগত ও রাজনৈতিক ব্যস্ততা স্বত্ত্বেও প্রতিবারের ন্যায় এবারও ঈদ জামাতে শরিক হতে নগরীর শাহী ঈদগাহে ছুটে আসেন সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। একই জামাতে অংশগ্রহণ করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সদস্য সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীসহ অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ। সকলের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণে ঈদ-জামাত সম্পন্ন করে পারস্পারিক বিভেদ ভুলে মুসল্লিরা জড়িয়ে ধরেন একে অপরকে। সার্বজনিন কোলাকুলির এই নান্দনিক দৃশ্য উৎসবের মাহাত্ম্যের সাথে জুড়ে দেয় আরো কিছু বাড়তি আনন্দ। উৎসবের সকালে পরম ¯িœগ্ধতা আর বাড়তি আনন্দের রেশ নিয়ে বাড়ির পথ ধরেন মুসলিম জনতা। উদ্দেশ্য এবার পশু কোরবানি দেয়া। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ি পশু কিনে রাখা ছিল আগে থেকেই। এবার শুধু ধর্মীয় আবেগ ভাবাপন্ন এক মাহেন্দ্রক্ষণ স্মরণে পরম ¯্রষ্টার উদ্দেশ্যে বিসর্জনের পরীক্ষা দেবার কথা। নগরীর ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পশু কোরবানি, পশুর মাংস বণ্টন ও সুহƒদ-স্বজনদের সাথে কুশল বিনিময় করেই পালন করেছেন পবিত্র ঈদ-উল-আযহার উৎসবমুখর এ দিনটি।