(পূর্ব প্রকাশের পর)
(খ) সর্বক্ষেত্রে সম্ভাব্য উৎপাদন শক্তির পূর্ণ ব্যবহার। বর্তমানে প্রাপ্তব্য ভূমি সম্পদ সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার কার্যের দ্বারা তার পরিমাণ বৃদ্ধি, কৃষির জন্য পরিকল্পিত ও সমম্বিত ভিত্তিতে ভূমির সর্বাধিক সদ্ব্যবহার, উৎপন্ন দ্রব্যের আশু সদ্ব্যবহারের নিশ্চয়তা বিধান এবং প্রাথমিক কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য দানের মাধ্যমে কর্মক্ষমতার সম্ভাব্য সর্বাধিক সদ্ব্যবহার ।
(গ) সুষ্ঠু এবং অভিজ্ঞ পরিচালনা ব্যবস্থা (প্রয়োজন বোধে ব্যবস্থাপনা এবং কারিগরি দক্ষতা আমদানি করে) এবং নির্ধারিত নীতি ও লক্ষ্য, নিয়মিত পরীক্ষা ও অডিট সাপেক্ষে সুবিবেচনা সঙ্গত বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্পে সম্ভাব্য সর্বাধিক পরিচালনামূলক দক্ষতা এবং উৎপাদন অর্জন ।
(ঘ) দক্ষতা এবং নির্ধারিত মূলনীতির সাথে যথাসম্ভব সঙ্গতি রক্ষা করে সকল প্রকার জাতি গঠনমূলক কাজ এবং অর্থনৈতিক তৎপরতায় জনসাধারণের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত অংশ গ্রহণ।
(ঙ) বেসরকারী পুঁজি বিনোয়গ এবং অতঃপর বর্ণিত অনুমোদনযোগ্য বেসরকারী সেক্টরের আওতায় পুঁজি বিনিয়োগকে রাষ্ট্রায়াত্তকরণ এবং একতরফা আচরণের বিরুদ্ধে নিশ্চয়তা দান।
(চ) বেসরকারী খাতের উন্নয়নের স্বার্থে ‘মনোপলি’ এবং ‘কার্টেল’কে প্রশ্রয় না দেওয়া
(ছ) শিল্প উন্নয়নের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলিকে অগ্রধিকার প্রদান করাঃ-
১। যে সব শিল্পে কৃষি উন্নয়নে সরাসরি সাহায্য করবে এবং যেগুলো কৃষি উৎপাদন ভিত্তিক।
২। পল্পী অঞ্চলের যে সব শিল্পে আমাদের পল্পী আঞ্চলের শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণীর জন্য কর্মসংস্থান এবং আয়ের উৎস হিসাবে কাজ করবে এবং পল্পী এলাকায় ন্যায়সঙ্গত মূল্যে ভোগ্যপণ্য সরবারাহের ব্যবস্থা করবে।
৩। দেশে প্রাপ্ত খনিজ সম্পদ ও কাঁচামাল ভিত্তিক শিল্প ।
৪। যে সব শিল্প দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরিস্থিতির উন্নয়ন সাধন করবে।
৫। যে সব দ্রব্য জাতির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের জন্য অথবা উপ-অনুচ্ছেদে বর্ণিত শিল্প সমূহের অব্যাহত ও সুদক্ষ পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেই সব দ্রব্যের উৎপাদনের মাধ্যমে বহির্দেশীয় উৎসের উপর যে সব শিল্প নির্ভরশীতা দূর করবে।
৬। বাংলাদেশের সকল অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে এবং উন্নয়নলব্ধ কল্যাণকে দেশের সকল অঞ্চলে বসবাসকারী জনসাধারণের মধ্যে সমান ভাবে বন্টনের উদ্দেশ্যে শিল্প সমূহকে উৎপাদন খরচ এবং বাজারজাত করণের সুবিধার পরিপ্রেক্ষিতে যথাসম্ভব দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হবে। দেশের কয়েকটি মাত্র শহরে বিভিন্ন শিল্প কেন্দ্রীভূত হওয়ার যে সামাজিক অর্থনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তা পরিহারের জন্যও এই ব্যবস্থা করা হবে। যেসব এলাকায় অল্প কয়েকটি শিল্প আছে বা আদৌ কোন শিল্প নেই এক্ষেত্রে সেইসব এলাকাকেই অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে।
(জ) চোরাচালান এবং পুঁজি পাচার বন্ধের জন্য কঠোর এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরকারী এবং বেসরকারী খাত
৯। মোটামুটিভাবে নিম্নলিখিত বিষয় সমূহ সরকারী ও বেসরকারী খাতের অন্তর্ভুক্ত হবেঃ-
সরকারী খাত
১। খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ এবং তার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত শিল্প।
২। ভারী এবং মৌলিক শিল্প যথা ধাতু, মেশিন-টুল, অস্ত্র ও গোলাবারুদ উপাদন, জাহাজ নির্মাণ এবং জাহাজ ও যন্ত্রচালিত আভ্যন্তরীণ নৌযান প্রভৃতির জন্য কারখানা ইত্যাদি এবং জাতীয় স্বার্থে সুদূর প্রসারী গুরুত্বপূর্ণ শিল্প সমূহ।
৩। হেসিয়ান ও চট প্রস্তুতসহ পাট শিল্প। তবে পাটের সুঁতা ব্যবহারকারী গ্রামীণ হস্তচালিত তাঁত এবং কৃষকদের অথবা গ্রামীণ সমবায় প্রতিষ্ঠান সমূহের মালিকানাধীন অনুরূপ বিদ্যুৎ চালিত তাঁত সরকারী খাতের আওতা থেকে মুক্ত থাকবে।
৪। ব্যাকিং এবং বীমা। তবে বাংলাদেশের আগে থেকেই যেসব বিদেশী ব্যাংক ও বীমা কোম্পানী আছে বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি না করলে সেগুলি রাষ্ট্রায়ত্ব করা হবে না। কিন্তু বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করলে কেবলমাত্র পারস্পারিকতার ভিত্তিতেই সে গুলো চালু রাখতে দেওয়া হবে। বাংলাদেশের ঋণ প্রদানের উদ্দেশ্যে স্থাপিত বিদেশী ব্যাংক স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হবে।
৫। যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম সমূহ যথা জাহাজ ভাড়া করার দায়িত্বসহ জাহাজ চলাচল; বিমান ভাড়া করার দায়িত্বসহ বিমান চলাচল ও বিমান পথ; রেলপথ; ইতিপূর্বে সরকারী মালিকানায় ন্যস্ত সড়ক ও আভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন এবং বেসরকারী খাতে অনুমোদিত (নিম্নের উপ-অনুচ্ছেদ ‘খ’ দ্রষ্টব্য) যোগাযোগ মাধ্যম সমূহ বাদে অপর সকল যেগাযোগ মাধ্যম।
৬।পল্লী অঞ্চলের হস্তচালিত তাঁত এবং পল্লী অঞ্চলের কৃষক ও সমবায় প্রতিষ্ঠান সমূহ মালিকানাধীন বিদ্যুৎ চালিত তাঁত ব্যতিরেকে বস্ত্র শিল্প।
বেসরকারী খাত
নিম্নলিখিত শর্ত সাপেক্ষে যেসব শিল্প সরকারী খাতের জন্য সংরক্ষিত নয়, সে সব শিল্প :-
১। সাধারণ বেসরকারী খাতে উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা দপ্তর যে সব শিল্পের তালিকা নির্দিষ্ট করে দেবেন তার সাথে সঙ্গতি রেখে শিল্প প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে পূর্বাহ্নে শিল্প দপ্তর এবং অর্থ ও পরিকল্পনা দফতরের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। এর জন্য একটি সহজ এবং সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে এবং নিয়মিতভাবে সে পদ্ধতির পর্যালোচনা ও তার উন্নয়ন সাধন করা হবে।
২। পুঁজি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা- পুঁজি বিনিয়োগের কোন ঊর্ধ্বসীমা থাকবে না। কিন্ত কোন ব্যক্তি বা কোম্পানীকে এমনভাবে কোন শিল্প এবং / অথবা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে অর্থ বিনিয়োগ করতে দেয়া হবে না যাতে ‘কার্টেল’ সৃষ্টি হতে পারে বা ‘কার্টেল’ গঠনে সাহায্য করে।
৩। আভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন ১০০০ টনের অধিক এবং সমুদ্রগামী জাহাজ বেসরকারী খাতের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
৪। সড়ক পরিবহন-যানবাহন সমূহের ধরণ-সেগুলি যাতে একই রকমের খুচরা যন্ত্রপাতি ব্যবহার যোগ্য হয় তদরূপ নির্ধারণ করা হবে। বাংলাদেশে তৈরি, সংযোজিত বা যে সব যানের অধিকাংশ খুচরা অংশ বাংলাদেশে তৈরি সেই সব যানবাহনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে। কোন সেকশনে সর্বাধিক কতগুলি সড়ক যান চলতে দেয়া হবে তা নির্ভর করবে জনসাধারণের প্রয়োজন এবং রাস্তার ক্ষমতার উপর। এই ভাবে অনুমেদিত সর্বাধিক সংখ্যক যানকে কোন নির্দিষ্ট সেক্টরে কাজ করতে ইচ্ছুক বিভিন্ন কোম্পানীর মধ্যে সমভাবে বন্টন করে দেয়া হবে। কোন জেলার এলাকার মধ্যে স্থানীয় যানবাহন মালিকদেরকেই অগ্রধিকার প্রদান করা কবে।
গ্রামীণ ও কুটির শিল্প
১০। গ্রামীণ ও কুটির শিল্প উন্নয়নের প্রতি সর্বাধিক অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে, কারণ এই শিল্পে পল্লীর কৃষক এবং শ্রমিক শ্রেণীর জন্য সরাসরি কর্মসংস্থানের এবং উপার্জনের ব্যবস্থা হয়ে থাকে। এর উদ্দেশ্য হবে পল্লীর বেকার সমস্যা দূরীকরণ এবং কৃষক ও পল্লীর জনসাধারণের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন। এই প্রসঙ্গে ঋণদান ও পণ্যের বাজারজাত করণের সুবিধাদি নিশ্চয়তা বিধান করা হবে। গ্রামীণ অথবা কৃষি সমবায়ের মাধ্যমে পল্লী এবং কুটির শিল্পের উন্নয়নের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দান করা হবে।
ক্ষুদ্রায়তন শিল্প
১১। গ্রামীণ ও কুটির শিল্পের সঙ্গে ক্ষুদ্রায়তন শিল্প প্রতিষ্ঠার উপরেও সর্বাধিক গুরুত্বদান করা এবং এই শিল্পকে পল্লী অঞ্চলের দূর-দূরান্তে বিস্তার করার নীতি অবলম্বন করা হবে।
এক্ষেত্রে বিদেশে বসবাসরত এবং তথায় বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনরত প্রকৃত ’বাঙ্গালীরা’ যদি তাদের নিজেদের উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রায় আমদানীকৃত যন্ত্রপাতি এবং মূলধন সামগ্রীর সাহায্যে ক্ষুদ্রাকার শিল্প প্রতিষ্ঠা করতে ইচ্ছুক হন তবে তাদেরকে অগ্রাধিকার এবং বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে। গ্রামীণ সমবায়ের মাধ্যমে সংগঠিত শিল্পসমূহকেও এ ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা ও অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
সুসংহত এবং আত্মনির্ভশীল পল্লী সমাজ
১২। বহুমুখী কৃষি সমবায়ের ভিত্তিতে সুসংহত এবং আত্মনির্ভরশীল পল্লী সমাজ গঠনের প্রতিও সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে এবং এই ধরণের পল্লীসমাজ যাতে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীল হতে সক্ষম হয় সেজন্য তাদেরকে বিপুল পরিমাণে সরকারী সাহায্য প্রদান করা হবে। যথাঃ পানি সংরক্ষণ, পানি নিষ্কাশন এবং কৃষির জন্য জমি পুনরুদ্ধার (অন্তত মৌসুমী), বন্যার পানি প্রতিরোধের এবং পানি সংরক্ষণের জন্য বাঁধ নির্মাণ (এই বাঁধ যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবেও ব্যবহার করা যেতে পারে), উন্নত এবং আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ এবং তজ্জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম, গ্রামীণ ও কুটির শিল্প এবং মৎস্য চাষ।
কৃষি সম্প্রসারণ
১৩। পরিকল্পিত ভিত্তিতে বন সৃষ্টি এবং বন্য ও গাছপালার উন্নয়ন এবং বন্য পশুপক্ষীর আশ্রয়স্থল সংরক্ষণের প্রয়োজনীতা সাপেক্ষে কৃষির উদেশ্যে ভূমির সর্বাধিক সদ্বব্যবহারের জন্য চূড়ান্ত প্রচেষ্টা নেওয়া হবে এবং ভূমিহীন কৃষকদিগকে পুনরুদ্ধার করা ভূমিসহ খাস জমি বন্টন করা হবে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় ভূমিহীন কৃষকদের দাবীকে সর্বাধিক অগ্রধিকার দেওয়া হবে। বর্তমানে কোন পরিবারের দখলীভুক্ত ভূ-সম্পত্তির ঊর্ধ্বসীমা ১০০ বিঘা পর্যন্ত নির্দিষ্ট আছে। বর্তমানে যারা এই পরিমাণ ভূ-সম্পত্তির মলিক তাদের বেলায় এই নিয়ম রক্ষা করা হবে। কিন্তু ভবিষ্যতে কোন ব্যক্তি বা পরিবারকে কৃষি জমি বরাদ্দের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র নিয়ম অনুসরণ করা হবে। এবং সেক্ষেত্রে প্রাপ্ত ভূ-সম্পদের পরিমাণ এবং ভূমিহীনকৃষকদের সংখ্যা অনুপাতে বরাদ্দকৃত ভূমির ঊর্ধ্বসীমা নির্দিষ্ট করা হবে। উচ্চ উৎপাদনশীল এবং দানাদার শ্রেণীর ধানের উন্নয়ন ছাড়াও তুলা, গম, আখ, তামাক এবং ফলমূল চাষের উন্নয়নের চেষ্টা করা হবে যাতে দেশ এসব দ্রব্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে এবং সম্ভব হলে এক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত ফসল রফতানী করতে পারে।
পাট
১৪। বাংলাদেশের পাট সর্বোৎকৃষ্ট শ্রেণীর এবং আন্তর্জাতিক সুনাম রয়েছে। নমুনা অনুযায়ী সময়মত উৎকৃষ্ট পাট সরবরাহের নিশ্চয়তা দিতে পারলে বাংলাদেশের পাটে বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে। এক্ষেত্রে সুনিশ্চিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এবং পাট চাষী ও ব্যবসায়ীদেরকে উৎসাহদানের নিমিত্ত নিম্ন লিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেঃ
(ক) পাট উৎপাদনকারীরা যাতে তাদের প্রয়োজন (অথবা প্রয়োজনের বৃহদাংশ) মিটাতে পারে তার জন্য তাদেরকে উপযুক্ত মূল্য প্রদানের প্রচেষ্টা চালানো হবে। এই জন্য রাষ্ট্রীয় ক্রয় ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা হবে এবং গুদামজাতকরণের উন্নত ব্যবস্থাসহ একর প্রতি উৎপাদন বৃদ্ধি ও গুণগত উন্নয়নের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(খ) উৎপাদনকারীদেরকে সহজ শর্তে ঋণদান করা হবে।
(গ) পাট রপ্তানী ব্যবস্থাকে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যবস্থামুক্ত করা হবে ও পাট রপ্তানীর মাধ্যেমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য উৎসাহ প্রদানমূলক বোনাস দওয়া হবে।
(ঘ) উৎপাদন বৃদ্ধি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাটের ব্যবহার এবং গুণগত উন্নয়নের জন্য গবেষনা চালিয়ে যাওয়া হবে।
চা
১৫। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন চা বিশেষজ্ঞরা আমাদের চা বাগান, চা-শিল্প এবং চা ব্যবসা সম্পর্কে ব্যাপক জরিপ চালিয়ে (১৯৭৩সালে) কতগুলি সুপারিশ পেশ করেন। চা শিল্পের আধুনিকরণ উৎপাদনের পরিমাণ ও উন্নয়ন এবং প্রাপ্ত জমি ও উদ্বৃত্ত চা শ্রমিকদের কাজে লাগাবার জন্য উক্ত রিপোর্ট যাকে সি,ডি,সি (কমনওয়েথ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন) রিপোর্ট বলা হয় তা কার্যকারী করা হবে। স্টালিং অর্থাৎ বৃটিশ মালিকানাধীন চা বাগান সমূহ থেকে বাংলাদেশের মোট উৎপাদনের অধিকাংশ অথাৎ শতকরা আটান্ন ভাগ চা উৎপন্ন হয় কিন্তু তাদের অধীন চা চাষের জমির পরিমাণ মোট জমির মাত্র শতকরা সাত চল্লিশ ভাগ। এগুলি রাষ্ট্রয়ত্ব করা হবে না। কিন্তু উৎপাদনের কোন অবনতি হলে রাষ্ট্র চা বাগানের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। ইতিপূর্বে বি,টি,এম,সি. নামক যে সংস্থা রাষ্ট্রায়ত্ব চা বাগান পরিচালনা করে তার কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে। চা গবেষণার সুবিধার প্রতি অব্যাহত দৃষ্টি রাখা হবে। (অসমাপ্ত)