গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস পালিত ॥ সিলেটসহ দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে গুমের সংখ্যা

32

গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে র‌্যালী পরবর্তী সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে উদ্বেগজনক হারে গুমের সংখ্যা বাড়ছে। সম্প্রতিক সাড়ে ৮ বছরে দেশে প্রায় ৪শ মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। কিন্তু আইন শৃংখলা বাহিনী ফিরিয়ে দিতে পারেনি এসব গুম হওয়া মানুষকে। ফলে এসব পরিবারে আর্তনাদ ও হাহাকার বয়ে চলছে। বক্তাগণ আমাদের আইন শৃংখলা বাহিনীর নানা সফলতা উল্লেখ করে বলেন, র‌্যাব সহ বিভিন্ন চৌকষ বাহিনী জঙ্গী ও সন্ত্রাস দমনে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করলেও কেন তারা গুমের শিকার ব্যক্তিদের উদ্ধার করতে পারে না? তারা এ ক্ষেত্রে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং বলেন, তাহলে গণতন্ত্র  ও সুশাসনের কথা অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার সিলেটের উদ্যোগে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে র‌্যালী পরবর্তী সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
মানবাধিকার সংগঠন অধিকার সিলেটের কো-অর্ডিনেটর সাংবাদিক মো. মুহিবুর রহমানের সভাপতিত্বে র‌্যালী পরবর্তী সমাবেশে আলোচনায় অংশ নেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সময় টিভির ব্যুরো প্রধান ইকরামুল কবির, সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সিলেট জেলা বিএনপির  সাধারণ সম্পাদক মো. আলী আহমদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক জালালাবাদের নির্বাহী সম্পাদক আবদুল কাদের তাপাদার, গুম হওয়া ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনারের পিতা ডা. মঈন উদ্দিন আহমদ, জুনেদ আহমদের ভাই হাসান মঈন উদ্দিন আহমদ (মঈনুল)। সমাবেশে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে ঘোষণা পত্র পাঠ করে শুনানো হয়। ঘোষণা পত্রে উল্লেখ করা হয় গুম একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। যা আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত। ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গুম হওয়া থেকে সমস্ত ব্যক্তিদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সনদটি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত  হয়। গুম হওয়া থেকে সমস্ত ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন এমন একটি চুক্তি করে। যা অনু স্বাক্ষর করার ক্ষেত্রে প্রতিটি রাষ্ট্রের আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে দেশে গুমের ঘটনা ঘটছে। ২০০৯ সালের ১লা জানুয়ারী থেকে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৩৮৮ জন গুমের শিকার হয়েছে।
র‌্যালী ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ রেনু, আনোয়ার হোসেন, দিনারের মামা মো. এহছানুল হক তাহের, মানবাধিকার কর্মী কাজী জসিম উদ্দিন, মো. মাহমুদ হোসেন, মো. দিলোয়ার খান, জুনেদ আহমদ, সজিব তাসবীর, আহসান মেহেদী প্রিন্স, মনজুর হোসাইন আরিফ, ফটো সাংবাদিক এটিএম তুরাব, নাসির খান, শাহ আলম, জিয়া আহমদ প্রমুখ।
র‌্যালীটি সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনারের সামনে এসে শেষ হয়। সমাবেশে অধিকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উপর বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি