সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জে জাতীয় শোক দিবস পালন নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্র“প। একপক্ষে রয়েছেন জেলা আ.লীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান ও অপরপক্ষে সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন।
শোক দিবস পালনের জন্য জেলা সদরের কেন্দ্রস্থলে কয়েকশ গজের ব্যবধানে পৃথক দুটি মঞ্চ তৈরির কাজ সম্পন্ন করেছে বিবদমান দুটি পক্ষ। ট্রাফিক পয়েন্টে মতিউর পক্ষের আর এর অদূরে উকিলপাড়ায় ইমন পক্ষ ১৫ আগষ্টের সভামঞ্চ তৈরি করেছে। এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মাঝে চাঁপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। পাশাপাশি দুই পক্ষের শোক দিবসে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ।
ইতোপূর্বে শোক দিবস পালনের জন্য পৃথক প্রস্তুতি সভা করেছে দুইপক্ষই। সভাপতি প্রস্তুতি সভা করেছেন রমিজবিপণির দলীয় কার্যালয়ে, সাধারণ সম্পাদক প্রস্তুতি সভা করেছেন উকিলপাড়ায় নতুন করে স্থাপিত অপর জেলা কার্যালয়ে।
দুই বলয়ের চরম দ্বিধাভিক্তির কারণে ১৫ আগষ্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু দিবসে মূল দল ও অঙ্গসংগঠনের কর্মীদের পাশাপাশি দ্বিধাবিভক্ত দলের সিনিয়র নেতারাও।
সভাপতির পক্ষে আছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নূরূল হুদা মুকুট, জাতীয় কমিটির সদস্য ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আয়ুব বখত জগলুলের মতো প্রভাবশালী নেতারা।
অপরদিকে, জেলার কয়েকজন এমপির আশির্বাদ রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক ইমরেন পক্ষে। তবে তার সঙ্গে প্রকাশ্যে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক হায়দার চৌধুরী লিটন, কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল, আ’লীগ নেতা দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী প্রমুখ। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান বলেন, আমার অনুমতি ছাড়া কোন সভাই জেলা আ’লীগের দলীয় সভা হতে পারে না।যে নব্য আওয়ামী লীগার সে ব্যক্তিগত সভাকে আওয়ামী লীগের সভা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। সে রমিজবিপণিতে আওয়ামী লীগের মূল দলীয় কার্যালয়ে আসে না। সে তার নিজের অফিসে গুটি কয়েক বন্ধু-বান্ধব নিয়ে যে সভার করছে সেই সভা কোনভাবেই আওয়ামী লীগের সভা হতে পারে না।
সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির ইমন সাংবাদিকদের বলেন, সভাপতি বলেছেন আমি রমিজ বিপণির আওয়ামী লীগের মূল দলীয় কার্যালয়ে যাই না। রমিজ বিপণির অফিস দলের মূল কার্যালয় হলো কী ভাবে? এটা জোরজবরদস্তি মূলকভাবে দখল করা বেআইনী সম্পত্তি। বেআইনীভাবে দখল করা সম্পত্তিতে কখনোও দলের কার্যালয় হতে পারে না।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ ১৯ বছর পর সুনামগঞ্জ শহরের বালুরমাঠে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে আলহাজ মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক পদে ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমনের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতার মধ্যে কমিটি ঐক্যমত না হওয়ায় দেড় বছরেও জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে ব্যর্থ হন তারা। ১৫ আগষ্টের মর্মান্তিক শোকও দূর করতে পারেনি এই দ্বিধাবিভক্তি।