তাহিরপুর থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে কমে আসছে সরকারী, বেসরকারী ত্রাণ সহায়তা, বন্ধ হয়ে গেছে খোলা বাজরে চাল বিক্রি, বন্ধের পথে ভিজিএফ এ অবস্থায় অন্ধকার দেখছে হাওরবাসী।
চলতি বছর অসময়ে বাঁধ ভেঙ্গে ফসল ডুবিতে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর, দিরাই, শাল্লা, জগন্নাথপুর, ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর সহ ১১টি উপজেলায় বোরো ফসলি হাওরের বোর ধান পানিতে তলিয়ে যায়। তলিয়ে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারদের পুনর্বাসনের জন্য খোলা বাজারে চাল বিক্রি, স্পেশাল ভিজিএিফ এর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় সরকারীভাবে। পাশাপাশি বেসরকারী ভাবে ব্যক্তি উদ্যোগ ও সংগঠনের উদ্যোগে অনেকে এগিয়ে আসেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারদের সাহায্যার্থে। ইতি মধ্যে খোলা বাজারে চাল বিক্রি বন্ধ, বেসরকরাী সহায়তা নেই, সেই সাথে জুলাই মাসে বন্ধ হয়ে যাবে স্পেশাল ভিজিএফ। সব মিলিয়ে এখন অন্ধকার দেখছে হাওরাঞ্চলে অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবার। তাদের দাবী আগামী ফসল ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত ভিজিএফ ও ওএমএস চালু থাকলে কোন রকম বেঁেচ যাবে কৃষক পরিবার।
জানা যায়, ফসল ডুবিতে জেলার সবকটি বোরো ফসলী হাওর ডুবে জেলায় ৯০শতাংশ বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যায়। তারপর সরকারীভাবে গত ১০ এপ্রিল থেকে জেলায় ৪২টি পয়েন্টে ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আরো ৬৮টি ওএমএস কেন্দ্র চালু করে ডিলারদের মাধ্যমে চাল বিক্রয় করা হয়। এসব কেন্দ্রে সাপ্তাহে ৬দিন শনিবার ছাড়া প্রতিদিন চাল বিক্রি করা হত। ১৫ টাকা কেজি ধরে ২’শ মানুষের মধ্যে ১টন চাল বিক্রি করতেন প্রতি ডিলার। গত ৩০জুন হঠাৎ করে ওএমএস চাল বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি গত ২৩ এপ্রিল থেকে ৩ মাসের জন্য সরকারী ভাবে চালু হওয়া বিশেষ ভিজিএফ নগদ ৫শ টাকা ও ৩০ কেজি চাল এই সহায়তাও বন্ধ হবে আগামী ৩০ জুলাই। এক সাথে সব ধরনের সরকারী-বেসরকারী সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে হাওরপারের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক।
জেলার তাহিরপুর উপজেলার মহালিয়া হাওরপার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের দূর্লভপুর গ্রামের কৃষক কয়েস মিয়া তিনি বলেন, খোলা বাজারে কমদামে চাল বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে, ভিজিএিফ ও বন্ধ হওয়ার পথে, সবগুলো সহায়তা বন্ধ হলে হাওরপারের কৃষক পরিবার মারাত্মক খাদ্য সংকটে পরবে। শুধু কয়েছ মিয়া নন এ বক্তব্য হাওরপারে হাজারো মানুষের। দুঃখ একটাই ভাতের দেশে ভাতের কষ্ট।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, ওএমএস বন্ধ, ভিজিএফ কার্ডের সময়ও শেষের পথে এই সুবিধাগুলো বন্ধ হলে চরম দুভোর্গে পড়বে হাওরবাসী। হাওরপারের কৃষকদের বাচিঁয়ে রাখতে ওএমএস ও ভিজিএফ কার্ডের মেয়াদ ও সহায়তা বাড়ানো খুবেই প্রয়োজন।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলাম জানান, সরকারী সহায়তার মেয়াদ শেষ হলেও আমরা সহায়তা বাড়ানোর জন্য আবেদন জানিয়েছি। আমরা সব সময় হাওরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে আছি।