ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
ওসমানীনগরে হিরা মিয়া হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১১ জন আসামীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। এই মামলার আসামীদেরকে গ্রেফতারে থানা পুলিশ ছিল তৎপর। এতে আসামীরা কোনো উপায়ন্তর না দেখে গতকাল রবিবার সিলেট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১ম আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালতের বিচারক নজরুল ইসলাম আসামীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন। জামিন নামঞ্জুর হওয়া আসামীরা হলেন- ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সৈয়দ মান্দারুকা গ্রামের মাসুদ আলী, একই গ্রামের বাসিন্দা লতিব উল্যাহ, আব্দুস শহিদ, আব্দুর রুপ, আব্দুর নুর, মাছুম মিয়া, মনসব উল্যা, মনু মিয়া, আহমদ আলী, বসর আলী, বাচ্চু মিয়া। আসামীদের কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদি পক্ষের আইনজীবী মনির উদ্দিন বলেন, হিরা মিয়া হত্যা মামলার আসামীদের মধ্যে ১১জন আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন চাইলে বিজ্ঞ বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সৈয়দ মান্দারুকা গ্রামের দুই গোষ্ঠির মধ্যে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জের ধরে গত ১০ জুন (রমজান মাসে ) ইফতারের পরে সৈয়দ মান্দারুকা গ্রামের জামে মসজিদে এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র) লাগানোকে কেন্দ্র করে গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে সৈয়দ হিরা মিয়াসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন। সংঘর্ষের ২৪ দিন পর ৪ জুলাই মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে সিলেটস্থ একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হিরা মিয়া মারা যান। এই ঘটনায় নিহতের ভাই সৈয়দ মতিন মিয়া বাদি হয়ে একই গ্রামের আব্দুল হামিদ, আব্দুল লতিব, হুমায়ুন আহমদ, সুরজান আহমদ ও হারুন আলীসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে গত ১৩ জুন ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। হিরা মিয়ার মৃত্যুর পর থানা পুলিশ অজ্ঞাতনামা আসামীদের মধ্যে ২জনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করে। এজহার ভুক্ত অনান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে থানা পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শহিদ উল্যা পলাতক আসামীদের আটক করতে গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে একাধিক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং দেশের সবক’টি থানায় ম্যাসেজ দেন। এমতাবস্থায় অভিযুক্তরা কোনো উপায়ন্তর না দেখে গ্রেফতার এড়াতে অবশেষে রবিবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এ মামলায় এজাহারভুক্তদের মধ্যে আরও ৭ জন এখনও পলাতক রয়েছেন।
নিহত হিরা মিয়ার ভাই সৈয়দ মতিন মিয়া জানান, সন্ত্রাসী হুমায়ুন, শহিদসহ তাদের সহযোগিরা একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে গ্রামবাসীকে অতিষ্ট করে তুলেছে। পবিত্র রমজান মাসে পরিকল্পিতভাবে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমার দিনমজুর ভাইকে তারা হত্যা করেছে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা তুলে নেয়ার জন্য সন্ত্রাসীরা নানাভাবে আমিসহ আমার পরিবারের লোকজনকে হুমকি দিয়ে আসছে। এছাড়া অভিযুক্তদের বাড়ির মালামাল থানা পুলিশের উপস্থিতে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা অন্যত্র সরিয়ে নিলেও আমাদের বিরুদ্ধে লুটপাটসহ নানা কাল্পনিক নাটক সাজানোর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের ভয়ে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।