কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সরকারী ঔষধ চুরির ঘটনা নিয়ে তুলকালাম

68

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক পূর্বে কয়েকবার সরকারী ঔষধ চুরির Hospital Newsঘটনা ঘটলেও এবার হাসপাতালের কর্তব্যরত সিনিয়র একজন স্টাফ নার্স কর্তৃক একজন পরিচ্ছন্ন কর্মীকে ৫০০ এম.এল দু’টি হার্টসল স্যালাইন ও একটি ওরাডেকশন ইনজেকশন দেওয়ার পর স্থানীয় জনতা পরিচ্ছন্ন কর্মী নেহার বেগমকে আটক করেন। এ নিয়ে গতকাল শনিবার সরকারী ঔষধ চুরির ঘটনায় হাসপাতালের ভিতরে ও বাহিরে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে উঠলে তুলকালাম কান্ড ঘটে। খবর পেয়ে কানাইঘাট থানার সেকেন্ড অফিসার এস.আই হুমায়ুন কবির হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাসপাতালের দায়িত্বরত পরিচ্ছন্ন কর্মী নেহার বেগম গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতাল থেকে দু’টি হার্টসল ৫০০ এম.এল স্যালাইন ও একটি ওরাডেকশন ইনজেকশন নিয়ে তার বাসায় যাওয়ার সময় হাসপাতালের বাহিরে অবস্থানরত স্থানীয় লোকজন তা দেখে নেহার বেগমকে আটক করেন। এ সময় নেহার বেগম জানায় সে অসুস্থ, তাই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সালমান চৌধুরী তাকে এ দু’টি স্যালাইন ও ১টি ইনজেকশন দিয়েছেন। পরে নেহার বেগমকে নিয়ে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শহিদুল ইসলামের চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে এলাকার বিপুল সংখ্যক লোকজন জড়ো হয়ে হাসপাতাল থেকে সরকারী ঔষধ চুরি সহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতির সাথে সিনিয়র স্টাফ নার্স সালমান জড়িত রয়েছে বলে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাকে হাসপাতাল থেকে অন্যত্র বদলী এবং সরকারী ঔষধ চুরির ঘটনায় বিচার দাবী করেন। পরে হাসপাতালে গিয়ে থানার এসআই হুমায়ুন কবির ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে মর্মে উপস্থিত লোকজনকে আশ^স্ত করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, পরিচ্ছন্ন কর্মী নেহার বেগমকে কোন ধরনের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই সিনিয়র স্টাফ নার্স সালমান হাসপাতালের ভর্তিকৃত রোগীদের জন্য রাখা হার্টসল স্যালাইন দেওয়ার বিষয়টি সিলেটে একটি ট্রেনিং এ অবস্থানরত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সাঈদ এনাম স্যার আসার পর তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সাঈদ এনামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পরিচ্ছন্ন কর্মী নেহার বেগমকে কোন ধরনের সরকারী ব্যবস্থাপত্র ছাড়া দু’টি হার্টসল স্যালাইন ও একটি ওরাডেকশন ইনজেকশন দেওয়ার ঘটনায় সিনিয়র স্টাফ নার্স সালমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন উপজেলার ৩ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য নিয়োজিত ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসা রোগীরা পান না। বিভিন্ন সময় অসাধু কর্মকর্তারা সরকারী দামী বিনামূল্যের ঔষধপত্র অন্যত্র বিক্রি করে থাকেন। পূর্বে এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। রোগীরা বাহির থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্যালাইন ও ইনজেকশন কিনে থাকেন। সরকারী ঔষধ রোগীদের না দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর হাসপাতালের অভ্যন্তরে ধ্বংস করা হয়, এ ধরনের নজির ও রয়েছে। তবে সিনিয়র স্টাফ নার্স সালমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পরিচ্ছন্ন কর্মী নেহার বেগম ঔষধ চুরি করেছে তিনি তাকে কোন ধরনের ঔষধ দেন নি।