বিয়ানীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
বিয়ানীবাজার উপজেলার বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে চিকনগুনিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের বড়ুউধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে এক কিশোরী চিকগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। আরেক মহিলার একই রকম জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। এতে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা অন্যান্য মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতংক বিরাজ করছে।
অনাকাংক্সিক্ষত বন্যায় বাড়ি-ঘর তলিয়ে যাওয়ায় অন্যদের মতো বাড়উধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে বাড়ুউধা গ্রামের আজির উদ্দিন পরিবার নিয়ে আশ্রয় নেন। গত রবিবার থেকে তার মেয়ে লিলি বেগম জ্বরে আক্রান্ত হন বলে জানান আজির উদ্দিনের স্ত্রী রানু বেগম। এ পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রের ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিমের ডাক্তার লিলিকে দেখেছেন।
সরেজমিনে আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, চিকগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কিশোরী লিলি বেগম (১৭) কেন্দ্রের অস্থায়ী বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন। চোখ মুখ ফানসে হয়ে গেছে, শরীর থেকে ঘাম ঝরছে। আক্রান্ত লিলি বেগম জানান, তিনি তিন-চারদিন থেকে প্রচন্ড জ্বরের সাথে শরীরে ব্যাথা অনুভব করছেন। এমনিতে অসুস্থ এ উপর আশ্রয় কেন্দ্রের এক কক্ষে ৬ পরিবারের মানুষের থাকা-খাওয়া ও চেচামেচিতে অসহ্য লাগছে।
আজির উদ্দিন অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসার জন্য ডা. ফয়জুল আজিজের (এমবিবিএস) পরামর্শ নিতে গেলে তিনি লিলি বেগমের চিকনগুনিয়া হয়েছে বলে শনাক্ত করেন। মুড়িয়া ৩নং ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারি আব্দুল কাদিরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে লিলিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন।
চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত লিলির মা রানু বেগম জানান, ‘মরার উপর খাড়ার ঘাঁ- এমনিতে বাড়ি-ঘরে ঠাঁই নায় । এরবাদে পুরির (মেয়ে) বেমার। পানি তুরা নামছে ঘর-বাড়ি টিক করতাম না তাইরে (মেয়ে) লইয়া ডাক্তরের গেছে দৌড়াইতাম। ডাক্তর দেখাইয়া ঔষধ আনছি, খাওয়াইয়ার। তিনি বলেন, এখন হাসপাতাল লইয়া যাইয়ার না, বাড়ি-ঘর কাম করিয়া তান-তিত লইতে অইবো’।
আশ্রয় কেন্দ্রের অবস্থানকারী কয়েছ আহমদ বলেন, পুটি বেগম নামের এক মহিলা অসুস্থ। গত সোমবার ডাক্তার দেখানো হয়েছে। ডাক্তার জানিয়েছে নতুন এক রোগ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে সর্তক থাকার জন্য। এ কারণে এখানকার সবাই আতংকে আছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা সাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান জানান, বন্যা পরবর্তী নানা রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে। ভয়ের কিছু নেই। আমাদের মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছেন চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য। প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে চিকনগুনিয়ার রোগের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে বলেন- এটা ভাইরাস জ্বর হতে পারে। এ পর্যন্ত উপজেলায় কোন চিকনগুনিয়া রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি।