ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
ওসমানীনগরে মসজিদে এসি লাগানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত সৈয়দ হিরা মিয়া (৫৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের সৈয়দ মান্দারুকা গ্রামের সৈয়দ মনোহর আলীর ছেলে। সংঘর্ষের ঘটনার ২৪ দিন পর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে সিলেট শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। খবর পেয়ে সিলেট কোতোয়ালী থানা পুলিশ ও সংঘর্ষের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার এসআই অনুজ কুমার হাসপাতালে গিয়ে লাশের সুরতাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এদিকে ঘটনার ২৪দিন পর হিরা মিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারসহ গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা যায়, গত ১০ জুন ইফতারের পরে উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের সৈয়দ মান্দারুকা গ্রামের জামে মসজিদে শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র (এসি) লাগানোকে কেন্দ্র করে গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে সৈয়দ হিরা মিয়াসহ উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হন। এই ঘটনায় সৈয়দ হিরা মিয়ার ভাই সৈয়দ মতিন মিয়া বাদি হয়ে একই গ্রামের আব্দুল হামিদ, আব্দুল লতিব, হুমায়ুন আহমদ, সুরজান আহমদ ও হারুন আলীসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে গত ১৩ জুন ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে ৬জন জামিনে রয়েছেন। একই ঘটনায় গ্রামের নোমান রুশিদ বাদি হয়ে নিহত হিরা মিয়ার পক্ষের ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় পাল্টা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় এজাহারভুক্তদের মধ্যেও ২০ জন বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। নিহত হিরা মিয়ার ভাতিজা সৈয়দ রাহাত আহমদ জানান, সন্ত্রাসী হুমায়ুন, শহিদ ও সুরজান তাদের সহযোগীদের নিয়ে গ্রামে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে গ্রামবাসী লোকজন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। সন্ত্রাসী নোমান ও হুমায়ুন তাদের সহযোগীদের নিয়ে পবিত্র রমজান মাসে অতর্কিত হামলা করে আমার চাচা হিরা মিয়াসহ ১০/১২জন মারাত্মক আহত করে। এই ঘটনায় আমরা মামলা দায়েরের পর গ্রামের সাধারণ মানুষদের হয়ারণী করার জন্য কল্পকাহিনী বানিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে থানায় পাল্টা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। সন্ত্রাসীরা আমাদের ক্রমাগত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তাদের এসব অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে কেউ প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসী নোমানরা নানা ভাবে প্রতিবাদকারীদের নাজেহাল করে যাচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার এসআই অনুজ কুমার দাশ আহত সৈয়দ হিরা মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়েরকৃত মামলায় হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করে আদালতে দ্রুত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হচ্ছে।