শ্রীমঙ্গলের হাজিপুরে ৭ দিন ধরে পুলিশী পাহারা অব্যাহত, আবারো সংঘর্ষের আশংকা

64

শ্রীমঙ্গল থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাজীপুর এলাকায় ৭ দিন ধরে পুলিশী পাহারা অব্যাহত রয়েছে। যেকোন সময় আবারো রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটতে পারে।
জানা যায়, শনিবার (২৪ জুন) সন্ধ্যার দিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আরিফ আলী (১৮) নামের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবক খুন হয়।
সেই ঘটনায় আহত হয়েছে অরো ৯ জন। গ্রেফতার করা হয়েছে আব্দুল খালিক ও তার ভাই খালেদ মিয়াকে।
ঘটনা পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ পাহারা অব্যাহত রয়েছে।
প্রত্যেক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, বাড়ির ভেতর যৌথ পুকুরে রাস্তা ব্যবহার ও পুকুরে বাসন পরিষ্কারকে কেন্দ্র করে বাড়ীর মহিলাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
জানা যায়, মহিলাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির জের ধরে ওই বাড়ির পুকুরের একটি অংশের মালিক আরবেস আলী ও আব্দুল খালিক মেম্বার মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
সরেজমিনে গেলে শেবলু, রাসেল আহমদ, কাউসার মিয়া, সোনাম মিয়াসহ অনেকেই জানান, খালিক মেম্বারের ইফতার পার্টিতে আসা মনির মিয়া, দুলাল মিয়া, কনু মিয়া, আনার উদ্দিন, মোজ্জেফরসহ অর্ধ শাতাধিক লোকজন ইফতারের পরপরই আরবেশ আলীর বসত ভিটায় ইট পাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়।
নিহত আরিফের মা ফুয়ারা বেগম জানান, হামলাকারীরা তার স্বামীকে মারধর করতে থাকলে, ছেলে আরিফ বাবাকে রক্ষা করতে যায়। যাওয়ামাত্রই তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে রক্তাত্ত জখম করে এবং গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে।
তিনি আরোও জানান, হামলাকারীরা আমাকে, আমার স্বামী আরবেশ আলী, ছোট ছেলে আশিক, মেয়ে পপি ও লাভনী, শ্বশুর হাজি আজমত আলী, এবং একই বাড়ির আলেক মিয়া, ঈদন মিয়া, রিমন মিয়াকে মারাত্মকভাবে আহত করেন। গুরুতর আহত আরবেশ আলীকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এছাড়াও হামলাকারীরা তার বসত গৃহে প্রবেশ করে ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে এবং ভাংচুর করে আলমারীতে থাকা নগদ এক লাখ টাকা এবং এক লাখ ষাট হাজার টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
আরবেশ আলীর লোকজনকে আহত করেই শান্ত হয়নি, হাসপাতালে যেতেও বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেন আহত হাজি আজমত আলীসহ এলাকার লোকজন।
এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে আরিফকে কর্মরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় আরবেশ আলী বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ্যপূর্বক আরোও ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
সোনাম মিয়া জানান, খালিক মিয়ার গোষ্ঠির লোকজন আমার ফুফু সরাজের মাকে মনির মিয়ার বাড়িতে নিয়ে রেখেছে। তারা আবারও পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে সরাজের মাকে খুন করে আমাদের উপর চাপাতে পারে। খাবল্লার (মনির মিয়ার) গোষ্ঠির মানুষ অত্যন্ত নিষ্ঠুর। এছাড়াও তারা হাইলহাওর এলাকা থেকে একটি প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে খাবল্লার বাড়িতে নিয়ে রেখেছে, তাকেও খুন করতে পারে। এবং আমাদের উপর চাপাতে পারে।
শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম নজরুল জানান, মামলার এজাহারভুক্ত আসামী আব্দুল খালিক ও খালেদ মিয়াকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরোও জানান, পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য এলাকায় পুলিশ পাহারা অব্যাহত রয়েছে। যতদিন পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত হবেনা, ততদিন পর্যন্ত পুলিশী পাহারা থাকবে।