কাজিরবাজার ডেস্ক :
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মানসিক প্রতিবন্ধী স্বামীর হাতে স্ত্রী দেলোয়ারা বেগম (৩৫) খুন হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দেলোয়ারা দেবীপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার স্ত্রী।
মাধবপুরে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন
তারেক রহমানের ৫০তম জন্মবার্ষিকীতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নানা কর্মসূচি পালন ॥ অচিরেই জননেতা তারেক রহমান মানুষের কল্যাণে দেশে ফিরে আসবেন
আওয়ামী লীগ নিজের অজান্তেই এক ভয়ঙ্কর রক্ত পিপাসু দানবে পরিণত হয়েছে – আনওয়ার হোসাইন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা (উত্তর) আমীর হাফিজ মাওলানা আনওয়ার হোসাইন খান বলেছেন, আওয়ামী লীগের উচিত ইসলামের বিরুদ্ধে কার্যকলাপ বন্ধ করে নিজেদের চেহারার দিকে তাকানো। বিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করতে করতে আওয়ামী লীগ নিজের অজান্তেই এক ভয়ঙ্কর রক্ত পিপাসু দানবে পরিণত হয়েছে।
প্রজন্মদলের জেলা সভাপতি গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট জেলা তরুণ প্রজন্মদলের সভাপতি লায়েক আহমদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বুধবার রাত ১০টার দিকে নগরীর আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত লায়েক নগরী পূর্ব শাপলাবাগ এলাকার ২ নং রোডের ৫১ নং বাসার বাসিন্দা নজমূল হকের পুত্র। গতকাল পুলিশ গ্রেফতারকৃতকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে বলে জানা গেছে।
শাবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে নিহত ১
স্টাফ রিপোর্টার :
ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ ও হল দখলকে কেন্দ্র করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে এক বহিরাগত ছাত্র লীগ নেতা নিহত ও পুলিশসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে শাবি প্রক্টর প্রফেসর ড. হিমাদ্রি শেখর রায়সহ ৫জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শাবি কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার
ইসলাম ও পরিবেশে হেমন্তের উৎসব
॥ মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান ॥
বাংলাদেশের সর্বত্র সবুজ ধানের ক্ষেতে হলুদ আভার হাতছানি। একই সাথে শীতের আগমনী গান বাজছে প্রকৃতিতে। শিশির বিন্দু সাজিয়ে দিচ্ছে ধানের শীষকে। প্রকৃতি সেজেছে যেন নতুন রূপে। অগ্রহায়ণ ধান কাটার মৌসুম। সর্বত্র পাকা ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণ। দিগন্ত জোড়া পাকা ধানের হলুদ হাসি দেখে কৃষকের মনও আনন্দে নেচে ওঠে। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে সারা বছর যে পরিশ্রম করেছে মাঠভরা ফসলের দৃশ্য দেখে সে কষ্ট নিমেষেই ভুলে যায় কৃষক। বাংলার গ্রামে গ্রামে ধান কাটার ধুম পড়ে এ মাসে। দল বেঁধে কৃষকরা রাশি রাশি ভারা ভারা ধান কেটে করে ঘরে ফিরে। ধান ভানার গান ভাসে বাতাসে। ঢেঁকির তালে মুখরিত হয় বাড়ির আঙিনা। অবশ্য যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় ঢেঁকির শব্দ কিছুটা কমে গেলেও এখনো হারিয়ে যায়নি বটে। অগ্রহায়ণে বাংলার অপরূপ রূপে মাতোয়ারা হয়ে কবি জীবনানন্দ দাস লিখেন তার অমর পঙতি, ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়ির তীরে এই বাংলায়/হয়তো মানুষ নয়তো শঙ্খচিল শালিকের বেশে/ হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে। অগ্রহায়ণ মাসে শুরু হয় বাঙালির প্রাণের নবান্ন উৎসব। নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে ভরে ওঠে কৃষকের আঙিনা। কৃষাণীর কাজের কোন শেষ নেই। ধান মাড়াই করা, সিদ্ধ করা বা রোদে শুকানো। দিন-রাত কাজ। কিন্তু কোন ক্লান্তি নেই। অভিযোগ নেই। বরং আনন্দের হিল্লোল সবার মনে।
নতুন ধান ঘরে ওঠার পর শুরু হয় নবান্ন উৎসব। নতুন ধানের পিঠা উৎসব বসে ঘরে ঘরে। পাকন, চিতুই, ভাপা, পাটি সাপটাসহ বিচিত্র সব নকশি পিঠা তৈরি হয় গ্রামে গ্রামে। নতুন চালের সাথে খেজুর রস মিশিয়ে তৈরি হয় সুস্বাদু পায়েস। নবান্নের সময় বাড়ির জামাইকে নিমন্ত্রণ করা হয়। মেয়েকেও বাপের বাড়িতে ‘নাইওর’ আনা হয়। নতুন ধানের ভাত মুখে দেয়ার আগে মিলাদ পড়ানো হয়। মসজিদে শিন্নি দেয়ার রেওয়াজও আছে গ্রামে। হিন্দু পরিবারে চলে পূজোর আয়োজন। সর্বত্র ধ্বনিত হয়, ‘আজ নতুন ধানে হবে রে নবান্ন, সবার ঘরে ঘরে।’
কীভাবে এলো অগ্রহায়ণ? অঘ্রান বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির অংশ। ‘অগ্র’ অর্থ প্রথম আর ‘হায়ণ’ অর্থ মাস। আবুল ফজলের আইন ই আকবরী থেকে জানা যায়, সম্রাট আকবর ১৫৫৬ সালে যখন বাংলা সনের প্রবর্তন করেন তখন অগ্রহায়ণই ছিল প্রথম মাস। ধান কাটার মধ্যদিয়েই বাঙালি জাতি তাদের বছর শুরু করতো। পরবর্তীকালে হিজরী সালের সাথে বাংলা সালের মিল রাখতে গিয়ে বৈশাখ মাসকে প্রথম মাস ধরা হয়। হিজরী সাল শুরু হয় মহররম মাস দিয়ে। সে সময়টাতে বাংলায় হয় বৈশাখ।
এভাবে মাসের পরিবর্তন হলেও বাঙালির সত্যিকার বর্ষবরণের শুরু হয়; কিন্তু অগ্রহায়ণেই। কারণ, তখন কৃষকের ঘরে থাকে প্রাচুর্য-সুখ। নবান্ন উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আয়োজন হলো মেলা। হরেকরকম দোকান নিয়ে বসে গ্রামীণ মেলা। শুধু গ্রামের নয়, শহরেও ব্যাপকভাবে আয়োজন হয় মেলার। এই মেলায় পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের পিঠা, মিষ্টি, সন্দেশ, খেলনা পুতুল, মাটির জিনিসপত্র। কৃষক মেলা থেকে ফসল বিক্রির টাকায় বউয়ের জন্য তাঁতের শাড়ি, মেয়ের জন্য আলতা আর ছেলের জন্য কেনে বাঁশি। সেই সাথে মুড়ি-মুড়কি, সন্দেশ-মুড়ালি কেনা হয়। মেলাকে ঘিরে গ্রাম-গঞ্জে সব শ্রেণীর মানুষের ঢল নামে। মানুষে মানুষে মুখরিত হয় মেলাঙ্গন। দৃঢ় হয় মানুষের বন্ধন।
মজার ব্যাপার হলো, এতো কাল অগ্রহায়ণ ছিল গ্রামের উৎসব। কৃষকের উৎসব। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নগর সংস্কৃতিতেও নিজের শক্ত অবস্থান করে নিয়েছে অগ্রহায়ণ। ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোতে এখন বেশ জাঁকজমকের সাথে নবান্ন উৎসব পালন করা হয়। প্রতিবছর দেশের প্রথমসারির সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো একত্রে জাতীয় নবান্ন উৎসব উদযাপন পর্ষদের ব্যানারে আয়োজন করে নবান্ন উৎসব। মেলা বসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায়। বাঙালির পল্লীগীতি আর দেশজ গানের সুরে সুরে শিল্পীরা মাতিয়ে তোলে শহুরে শ্রোতাদের। চারুকলায় বসে পিঠামেলা। হরেক রকম পিঠা চেখে দেখে শহরের সংস্কৃতিমোদি নাগরিকরা। এভাবে অগ্রহায়ণ বিনি সুতোর মালা গেঁথে শহর আর গ্রামের মানুষকে নিয়ে আসে একই বৃত্তে। সবার প্রাণে ছড়িয়ে পড়ে বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির মাহাত্ম্য। একই সুর বাজে সবার মনে। ঐক্যের চেতনায় দীপ্ত হয় বাঙালির চিত্ত।
অগ্রহায়ণে কৃষকের গোলা ভরে উঠবে আমন, আউশ আর ইরি ধানে। নতুন হৈমন্তিক ধানের গন্ধে মৌ মৌ করা চারপাশে কেমন উৎসবের আমেজ। বাড়ি বাড়ি নতুন চালের পিঠা। রাত জেগে মা-চাচিদের উঠোন আলো করে পিঠা বানানোর আয়োজন। বাংলার প্রধান কৃষিজ ফসল কাটার ক্ষণ হেমন্ত। কৃষিজীবী সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যেসব আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হয়, নবান্ন তার মধ্যে অন্যতম। নবান্ন মানে নতুন অন্ন। অঘ্রাণে আমন ধান পাকার পর সাধারণত এ উৎসব পালন করা হয়। নবান্ন হেমন্তের প্রাণ। স্মরণাতীতকাল থেকে ১ অগ্রহায়ণকে বলা হয়ে থাকে ‘বাৎসরিক সুদিন’। ‘অগ্র’ অর্থ প্রথম। আর ‘হায়ণ’ অর্থ মাস। এ থেকেই ধারণা করা হয়, এক সময় অগ্রহায়ণই ছিল বাংলা বছরের প্রথম মাস। ইসলাম অবশ্য আমাদের শিখিয়েছে, আল্লাহ তায়ালার দেয়া প্রতিটি দিনই সুদিন। সময়ের কোনো ভালো-মন্দ নেই। ভালো-মন্দ আমাদের কর্মে।
অঘ্রাণ এলেই বাড়ির জামাইকে নিমন্ত্রণ করা হয়। মেয়ে বাপের বাড়িতে ‘নাইওর’ আসে। ঘরে ঘরে পিঠা, পুলি, পায়েস, ক্ষীর এবং আরও হরেক ধরনের মিষ্টান্নের মেজবানি। কুটুম আসে। এবাড়ি-ওবাড়ি পিঠা দেয়া-নেয়া হয়। উৎসবের আনন্দে মাতোয়ারা এ সময় পুরো গ্রামবাংলা। নতুন চালের ভাত মুখে দেয়ার আগে মসজিদে দোয়ার অনুষ্ঠান করা হয়। শিরনি হাতে বাড়ি ফেরে গ্রামের ছেলে-বুড়ো সবাই। প্রতিবেশীকে মিষ্টিমুখ করিয়ে নির্মল আত্মতৃৃপ্তিতে ভরে ওঠে কৃষকের মন। ইসলামে যে অতিথি আপ্যায়ন ও প্রতিবেশী তুষ্ট করার শিক্ষা দিয়েছে- এ যেন তারই প্রায়োগিক রূপ। নবান্নের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আয়োজন মেলা। এ সময় গ্রামে গ্রামে মেলা বসে। ছেলে-বুড়ো সবাই দল বেঁধে মেলায় যান। দাদা-নানার হাত ধরে অঘ্রাণের গ্রামীণ মেলায় যাওয়ার স্মৃতি আমাদের অনেকেরই আছে। এসব মেলায় নানা ধরনের নকশা করা পিঠা, বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি, মন্ডা-মিঠাই, সন্দেশ, নাড়ু, তক্তি, নারিকেলসহ কত কী যে পাওয়া যায়, তার ইয়ত্তা নেই। শখের মৃৎশিল্প; মাটির তৈরি তৈজসপত্র, কাঠ-বাঁশ-বেতের হস্তশিল্প কেনার হিড়িক পড়ে মেলাজুড়ে। নবান্নের মেলা গ্রামের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের পদভারে মুখরিত হয়।
নবান্ন আমাদের ঐতিহ্যের শস্যোৎসব। আল্লাহর নেয়ামত ভোগের উৎসব। আল্লাহর বাণী আমাদের স্মরণীয়, ‘হে আদম সন্তান, তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা গ্রহণ করো আর খাও এবং পান করো। তবে অপব্যয় করো না, তিনি অপব্যয়ীদের পছন্দ করেন না।’ (সূরা আরাফ : ৩১)। তেমনি হেমন্ত আমাদের অনুভবের ঋতু। এ সময় আল্লাহর নেয়ামত উপলব্ধি করে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞচিত্ত হতে হবে। তার নির্দেশানুযায়ী জীবন পরিচালনার শিক্ষা ও প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে। সব কিছুর নিপুণগ্রষ্টা দাতা ও দয়ালু আল্লাহ বলেন, ‘অতএব, আল্লাহ তোমাদের যেসব হালাল ও পবিত্র বস্তু দিয়েছেন, তা তোমরা আহার করো এবং আল্লাহর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদতকারী হয়ে থাকো।’ (সূরা নাহল : ১১৪)।
১২ মাসের ছয় ঋতু নিয়ে আমাদের এ বাংলাদেশ। কালের আবর্তনে, প্রকৃতির বিবর্তনে সবুজের চাদরে নেমে আসে ষড়ঋতুর অনুপম রূপবৈচিত্র্য। ছয়টি প্রকৃতির ক্যানভাসে ভেসে ওঠে ছয়টি অনিন্দ্য শিল্পকর্ম। সুন্দরপিয়াসী মনে নিয়ে আসে চঞ্চলতা। বোধের দিগন্তে হেসে ওঠে অনন্ত রূপের আধার ও রূপ-রস-ছন্দ-আনন্দের মালিকের অলোক সক্ষমতা। ঘোরলাগা অনুভবে ভাবুকের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়, ‘তোমার সৃষ্টি যদি হয় এত সুন্দর/না জানি তাহলে তুমি কত সুন্দর…’
এ সময়ের পালাবদলে প্রকৃতিতে আসে হেমন্তকাল। হেমন্ত হলুদের কাল, সবুজের কাল, মৌ মৌ আমন ধানের আগমনীর কাল। হলুদ চাদরে ঢাকা প্রকৃতির কাল। প্রভাতে সূর্যের কিরণে ধান গাছের সুচালো অগ্রে শিশির নামা হিরক দানার আনন্দ কাল। মায়াবি প্রকৃতির মনোলোভা রূপে পৃথিবীর সজীবতার কাল। ছয় ঋতুর অন্যতম সুন্দর ও আরামদায়ক একটি হলো হেমন্ত। কবির ভাষায় ঋতুরানী। শুভ্র শরতের পরেই প্রকৃতিকে দৃষ্টিসুখ আনন্দে হাসাতে মাটির প্রতিবেশে জেগে ওঠে সরষে হলুদ হেমন্ত। কার্তিক আর অগ্রহায়ণের এ সময় দিনের সূর্য ঢেলে দেয় মায়াবি রোদ। রাতের আকাশে শুভ্রসজাগ থাকে রূপালি তারকারাজি। শুক্লপক্ষের চাঁদের নীলাভ জোছনা দেয় মন ভালো করা অনুভূতি। পূর্ণিমা হয়ে ওঠে শিশির ধোয়া রূপার থালা। মৃদু ছন্দ তুলে শিশির নেমে আসে ঘাসের ডগায়। সবুজ ধানের ক্ষেতে শুরু হয় শিশির আর দুধ-সাদা জোছনার মাখামাখি ভালোবাসা। প্রভুর প্রেমিক পুরো প্রতিবেশে শুনতে পায় রব্বে আলার গুণগান। শিশিরের ছন্দ-শব্দে মূর্ত হয় সুরেলা জিকির। আল্লাহর গোলাম ছুটে যায় জায়নামাজে। অবনত কপাল নেমে আসে তাঁর উদ্দেশে শুকরিয়া সেজদায়। প্রশংসার অনিন্দ্য সঙ্গীত সুর তোলে যায় ইন্দ্রীয় থেকে ইন্দ্রিয়ান্তরে।
প্রভাতি সমিরণে শীতের আগমন ধ্বনি। ঘাসের ডগায় শিশিরকণা মুক্তাদানা হয়ে হেসে ওঠে। সবুজ ধানের ক্ষেত কুয়াশা স্পর্শে হয়ে ওঠে আরও সজীব সুন্দর। রকমারি ধানের নানা ঘ্রাণে মনের ভেতর শুরু হয় মোহঘোর আন্দোলন। পোলাও ধানের ক্ষেতের আলে দাঁড়ালেই পেটের ক্ষুধা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। কৃতজ্ঞ বান্দার মুখে ও মনে অজান্তেই উচ্চারিত হয় ‘আলহামদুলিল্লাহ’। মাঠের পর মাঠ সরিষার হলুদ ফুল দেখে মনে হয় প্রকৃতি তার হলুদ আঁচলের আদরে ঢেকে দিয়েছে পুরো বাংলাদেশ। সবুজ ধান আর সরষে হলুদ দিয়ে শুরু হওয়া হেমন্ত এক সময় হয়ে ওঠে ঐশ্বর্যের সোনালি রঙ সোপান। ধনী-গরীব সবার মুখে লেগে থাকে অকৃত্রিম হাসি। বাংলাদেশ জুড়ে নেমে আসে এক ঐশী সুখের সুবাতাস।
হেমন্তের শেষের দিনগুলোয় সবুজ মাঠ ক্রমে সোনালি রঙে আর হলুদ সরষে ধূসর রঙে বদল হতে থাকে। কাঁচা সবুজ ধান ও হলুদ সরিষার ফুলে ভর করে রিজিক। ধানের পেটে চালের বেড়ে ওঠা আর সরিষার পেটে তেলের বেড়ে ওঠায় কৃষকের আকর্ণ হাসির আড়ালে জেগে ওঠে মহামহিমের কৃতজ্ঞতা। কাস্তে হাতে কৃষকের ধান কাটার অপরূপ দৃশ্যে ছবি হয়ে ওঠে পুরো বাংলাদেশ। নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে সুবাসিত হয়ে ওঠে চারপাশ। বাদামি খড়ের বিচালিতে পথ-ঘাট-মাঠ হয়ে ওঠে কুদরতের বিছানা। আমনের ফলনে রিজিকের ফয়সালা হয় মানুষ, পশু আর পাখির। ভোরের নাশতায় হেসে ওঠে শুভ্র খই। সেই সঙ্গে খেজুর গুড় ও রসের শুরু হয় আগমনী গান।
হেমন্তের আবহাওয়া থাকে নাতিশীতোষ্ণ। শেষের দিকে শুরু হয় শীতের আগমন। রাত হতে থাকে দীর্ঘ। প্রেমিক বান্দার ঘুম ভেঙে যায় রাতের শেষে। গ্রীষ্মকালে রাত ছোট থাকায় অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়তে পারেন না। হেমন্ত আসতেই রাত দীর্ঘ হতে শুরু করায় তাহাজ্জুদের সুবর্ণ সুযোগ এটি। সমগ্র ভালোবাসার নৈবেদ্য নিয়ে হাজির হয় প্রভুর দরবারে। চোখের জলে নেমে যায় পাপের অতীত। মহান আল্লাহ বান্দাকে এমন নাতিশীতোষ্ণ প্রকৃতি দেয়ার একটা উদ্দেশ্য, বান্দা শান্তি ও আরামের সঙ্গে মশগুল হবে ইবাদতে।
যারা নিয়মিত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করেন, কোরআন তাদের মুহসেন ও মুত্তাকি নামে অভিহিত করে। তাদের আল্লাহর রহমত এবং আখেরাতে চিরন্তন সুখ সম্পদের অধিকারী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুত্তাকি লোক বাগ-বাগিচায় এবং ঝরনার আনন্দ উপভোগ করতে থাকবে এবং যে নিয়ামত তাদের পরোয়ারদিগার তাদের দিতে থাকবেন, সেগুলো তারা গ্রহণ করবে। (কারণ) নিঃসন্দেহে তারা এর আগে (দুনিয়ার জীবনে) বড় পুণ্যবান ছিল। তারা রাতের খুব অল্প অংশেই ঘুমাত এবং শেষ রাতে এস্তেগফার করত। (কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে মাগফিরাত চাইত)’। (সূরা জারিয়াত : ১৫-১৮)।
রাসূল (সা.) বলেছেন, রাতের শেষ সময়ে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার দিকে নাজিল হন এবং বলেন, ‘ডাকার জন্য কেউ আছে কি, যার ডাক আমি শুনব; চাওয়ার জন্য কেউ আছে কি, যাকে আমি দেব; গোনাহ মাফ চাওয়ার কেউ আছে কি, যার গোনাহ আমি মাফ করব?’ (বোখারি)।
হেমন্তের আগমনধ্বনি যখনই নেমে আসে বাংলাদেশের প্রকৃতিতে, তখনই অতিথি পাখিরাও আসতে থাকে। হাজার মাইল দূরের সেই পাখিদের আগমনীতে প্রতিভাত হয় আল্লাহর অনন্যতা। তিনি প্রকৃতিতে নিয়ে আসেন নানা অবস্থা। আবার সে অবস্থায় নিজের জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করে দেন তিনিই। তাই পাখিরাও তীব্র শীত থেকে বাঁচতে কম শীতের বাংলাদেশে চলে আসে। মুখর হয়ে ওঠে বাংলার বিল-ঝিল-সরোবর। ঋতুর পালাবদলে প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ, প্রাণী, পশুপাখির জীবনযাত্রায় আসে পরিবর্তন। এসব পরিবর্তনের একমাত্র ক্ষমতা মহান আল্লাহর হাতে। তিনি এসব পরিবর্তনের মধ্যেই বান্দার জন্য রাখেন প্রভূত কল্যাণ আর ইতিবাচক শিক্ষা। বান্দার অভিব্যক্তি হিসেবে ভাষা পায় তা কোরআনে করিমে, ‘আপনি রাতকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করান এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করান।’ (সূরা আলে ইমরান : ২৭)। কালের এমন বিবর্তনের ব্যাপারে আল্লাহ আরও বলেন, ‘নিশ্চয় আসমানগুলো ও জমিনের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের বিবর্তনের মধ্যে রয়েছে বিবেকসম্পন্নদের জন্য বহু নিদর্শন।’ (সূরা আলে ইমরান : ১৯০)।
হেমন্তের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশে শুরু হয় ওয়াজ মাহফিল। প্রতি রাতেই কোথাও না কোথাও বসে ইসলামী আলোচনার আসর। সূর্য পশ্চিমাকাশে হেলে পড়ার পরপরই শুরু হয় হালকা গরম কাপড় কাঁধে বয়স্কদের মাহফিলের দিকে হেঁটে চলা। চলতে থাকে কিশোর-যুবারাও। বৃষ্টি ও ঝড়ের সম্ভাবনা না থাকায় এ সময়ই আমাদের দেশে বসে নানা আনন্দ-উৎসবও। হেমেন্তের সমাপনী দিনগুলোতে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে নেমে আসে নবান্ন উৎসবের আনন্দ। রকমারি পিঠার আয়োজনে মেতে ওঠে পুরো দেশ। আল্লাহর গোলাম এসব আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি কৃতজ্ঞতায় নুয়ে যায়। সেজদায় অশ্র“পাতে দেয় শুকরিয়ার নজরানা। ষড়ঋতুর অন্যতম এ হেমন্ত আরাম-শান্তি-সুখ আর ইবাদতের ঋতু হয়ে ওঠুক আমাদের সবার মনে-অন্দরে।
লেখক : শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও কলামিষ্ট।
বাক স্বাধীনতা ও ইসলাম বিদ্বেষ
ওলীউর রহমান
বাকস্বাধীনতা একটি স্বাধীন দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু অধিকাংশ স্বাধীন দেশের মানুষ সে অধিকার থেকে এখন বঞ্চিত। তবে ‘বাকস্বাধীনতাকে’ ইসলামের বিপক্ষে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে ইঙ্গ মার্কিন এবং তাদের দোসর ইসলাম বিদ্ধেষী নাস্তিকরা। ‘মুসলমানদের স্বাধীনতা থাকতে নেই’ এই পুড়া মাটি নীতি যেসব দেশে ইঙ্গ মার্কিনীরা প্রয়োগ করতে পারছেনা অথবা যেসব দেশে সরাসরি কাস্টার বোমা ফেলা যাচ্ছেনা সেসব দেশে বাকস্বাধীনতাকে তারা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। তাদের সেই কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে তাদের খরিদ করা কিছু সেবাদাস। এই সেবাদাসগুলোর অধিকাংশ আবার পিতৃ পরিচয়ে মুসলমান, পিতৃপ্রদত্ত্ব ইসলামী নাম ধারন করেই নাস্তিকতার পোশাক পরে ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় কটুক্তি করে যাচ্ছে।
আমাদের দেশে কিছু লোক আছে যারা ইসলাম ধর্মের কোরআন হাদীস, নবী রাসূল, নামাজ, পর্দা, পরকাল, হজ্ব, তাবলীগ এমনকি মহান আল্ল¬াহ সম্পর্কেও আজে বাজে কথা বলে। এই শ্রেণীর লোকেরা নিজেদেরকে মুক্ত চিন্তার অধিকারী, অতি আধুনিক ও প্রগতিশীল হিসাবে জাহির করতে গিয়ে আঘাত করে ইসলামকে। আর আমাদের দেশের বাস্তব অবস্থাও হলো যে, ইসলাম সম্পর্কে কিছু উল্টা পাল্টা কথা বলতে পারলেই একে আধুনিক ও প্রগতিশীল মনে করা হয়। অথচ এদেশের শতকরা নব্বই ভাগ মানুষ মুসলমান এবং ধর্মপ্রাণ। ইসলামকে মনে প্রাণে এরা ভালবাসেন। এদের বিশ্বাসের ভিত্তি হচ্ছে তাওহীদ বা একত্ববাদ। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইলের এ ভূখন্ডে প্রায় তিন লক্ষ মসজিদ রয়েছে। প্রতিটি মসজিদের মিনার থেকে রোজানা পাঁচ বার দরাজ কন্ঠে আযান দেয়া হয়। ফজরের মনমুগ্ধকর আযানের সুরেই এদেশের মুসলমানদের ঘুম ভাঙ্গে। মসজিদ, মাদরাসা, আযান, ইকামত ইত্যাদি হচ্ছে আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির অংশ। এদেশের মানুষের কাছে কোরআন, হাদীস, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় গ্রন্থাদি, ধর্মীয় পোশাক সম্মানের পাত্র। ধর্মীয় ব্যক্তি, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও কৃষ্টি কালচারের প্রতি রয়েছে সীমাহীন শ্রদ্ধা ও ভক্তি। ধর্মীয় অনুভূতির বিশেষ একটি প্রভাব রয়েছে আমাদের জাতীয় রাজনীতিতেও। সঙ্গত কারণেই ইসলাম সম্পর্কে যখনই কোন কটুক্তি বা কটাক্ষ করা হয় এবং দেশের নব্বই ভাগ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি এবং বিশ্বাসে আঘাত হানা হয় তখন গোটা দেশ আন্দোলিত হয়ে উঠে, হরতাল, অবরোধ, মিছিল, মিটিং ইত্যাদির আহবান করা হয়। জাতীয় সংকট সৃষ্টি হয়। অথচ বার বার গায়েপড়ে ইসলাম সম্পর্কে কটুক্তি করা হচ্ছে, ধৃষ্টতা দেখানো হচ্ছে এবং দেশে সমস্যা সৃষ্টি করা হচ্ছে? আর বহির্বিশ্বেও আমাদের ধর্মীয় ভাবমূর্তিকে কলুষিত করা হচ্ছে। এসব কেন করা হচ্ছে?
১৯৭৪ সালে দাউদ হায়দার ইসলামকে কটাক্ষ করে কবিতা লিখলে গোটা দেশ জুড়ে তাওহিদী জনতাা ফুঁসে উঠে। অবশেষে দাউদ হায়দার দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় এবং এখনো তিনি নির্বাসিত অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছেন। বিগত দুই দশক ধরে এদেশে ইসলাম বিদ্বেষ প্রবণতা আশংকা জনক ভাবে বেড়ে চলেছে। এর একটা কারণও আছে। ১৯৯৩ সালে আমেরিকান প্রফেসর স্যামুয়েল হান্টিংটন “তার সভ্যতার সংঘাত” (ঈষধংয ড়ভ ঈরারষরুধঃরড়হং) তত্ত্বে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, “পৃথিবীকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হচ্ছে ইসলামী সভ্যতার জগৎ এবং অপরটি হচ্ছে অন্য সব সভ্যতার জগৎ। আর সভ্যতার সংঘাত এড়াতে হলে কোন সভ্যতাকেই প্রধান্য দেয়া যাবে না।” অর্থাৎ তিনি তার এই থিওরীতে ইঙ্গ-মার্কিন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইসলাম বিদ্বেষী অক্ষ শক্তিকে একথা বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন যে, এই মুহূর্তে যদি ইসলামী সভ্যতাকে কোনভাবে দমন ও প্রতিহত করা না যায় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে গোটা দুনিয়া ইসলামী সভ্যতার ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে যাবে। এর পর থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসলাম বিদ্বেষ প্রবণতা নতুন মাত্রা লাভ করে। আফগানিস্তান ও ইরাকে অন্যায় অভিযান চালিয়ে ইঙ্গ-মার্কিনীরা দেশ দুটির লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করে সভ্যতার লীলাভূমিকে তারা বধ্যভূমিতে পরিণত করে। এভাবে আরো বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। এ সময়ে ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, সুইডেন ইত্যাদি দেশে ইসলাম বিদ্বেষীরা রীতিমত উন্মাদের মত আচরণ শুরু করে। সেই সাথে ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশেও তসলিমা নাসরিন ইসলাম সম্পর্কে কটুক্তি করে। যার ফলে সারা দেশ উত্তাল হয়ে উঠে। তখন বিএনপি সরকার ছিল। বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালালে কিশোর গঞ্জের স্কুলছাত্র আরমান আহমদ শাহাদত বরণ করে। অবশেষে দাউদ হায়দারের মত তসলিমাও দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়। ২০০৫ সালে ডেনমার্কের একটি পত্রিকা মহানবী (সা.) সম্বন্ধে আপত্তিকর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে। ২০০৭ সালে সুইডেনের একটি পত্রিকা হযরত মোহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে অনুরূপ একটি আপত্তিজনক ব্যাঙ্গচিত্র প্রকাশ করে। এর প্রতিবাদে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে বিক্ষোভ শুরু হয়। এ ঘটনার মাত্র একমাস পরেই বাংলাদেশের ‘প্রথম আলো’ পত্রিকা এবং সাপ্তাহিক ২০০০ হযরত মোহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে আপত্তিকর ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশ করে। আর এভাবেই বাংলাদেশে স্যামুয়েল হান্টিংটনের “সভ্যতার সংঘাত” ফর্মূলার চর্চা শুরু হয়।
চলমান শতাব্দির দ্বিতীয় দশকের প্রথম দিকে বাংলাদেশে ইসলাম বিদ্বেষ প্রবণতা বিপদজনক আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন সময় ইসলাম সম্পর্কে যেসব লাগামহীন কথাবার্তা ও মন্তব্য করেছেন তা বার বার ধর্মপ্রাণ মানুষের হৃদয়ে আঘাত করেছে এবং ইসলাম বিদ্বেষ প্রবণতাকে উস্কে দিয়েছে। ২০০৯ সালে ২৮ মার্চ দেশের সর্ববৃহৎ সরকারী ইসলামী প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি শামীম আফজাল ইসলাম সম্পর্কে জঘন্যতম কটুক্তি করেন। তিনি একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, পৃথিবীতে যত সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ রয়েছে, তার সবই ইসলাম ও মুসলমানদের মধ্যে (!)। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের মধ্যে কোন জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস নেই। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত নয়। এই শামীম আফজাল ২০১০ সালে আরেকটি ঘৃণিত কাজ করেন। এ বছরের নভেম্বর মাসে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একটি ইমাম সম্মেলনে আমেরিকান তরুণ তরুণীদের দিয়ে অশ্লীল ব্যালে নৃত্য পরিবেশন করেন। দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এমন সব বক্তব্য শুধু দুঃখজনক নয় বরং জাতি হিসেবে আমাদের জন্য কলঙ্কজনকও বটে। শুধু বক্তব্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং ২০১০ সালের আগষ্ট মাসে পবিত্র কোরআনের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। আর সেই মামলা দায়ের করেছিল বিশ্ব শান্তি পরিষদের সভাপতি দেবনারায়ণ মহেশ্বর। সে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত পরিবর্তন করে দেয়ার জন্য আদালতের কাছে প্রার্থনা করেছিল। অবশ্য আদালত তার রিট খারিজ করে দিলে তার এ ধৃষ্টতার জন্য উপস্থিত আইনজীবীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন। অতঃপর পুলিশ প্রহরায় তাকে নিারাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে আর কোন প্রকার বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। শুধু এ ঘটনা নয় বরং এরূপ আর যতগুলো ইসলাম বিদ্বেষের ঘটনা ঘটছে কোন ঘটনারই সুষ্ঠু ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা না করায় একের পর এক নাস্তিক মুরতাদদের আবির্ভাব ঘটছে এবং এরা তাদের প্রভুদের খুশি করার জন্য ইসলামকে নিয়ে রীতিমত খেল তামাশা শুরু করেছে।
আজ কলেজ ইউনিভার্সিটিগুলোতে কোন ছাত্র বা ছাত্রী নিয়মিত নামাজ পড়লে, টুপি বা বোরকা পরলে, দাড়ি রাখলে, ইসলামী বই সাথে রাখলে তাকে নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রƒপ করা হয়, সন্দেহ করা হয় এবং জঙ্গী মৌলবাদী ইত্যাদি তকমা দিয়ে গ্রেফতার বা হয়রানী করা হয়। ্এসব ইসলাম বিরোধী তৎপরতা এবং বক্তব্যের নগদ ফলাফল হিসেবে আমরা ২০১৩ সালে শাহবাগে চরম ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিকতার নগ্ন উন্মাদনা দেখেছি। ২০১৩ সালে আদালতের একটি রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীর শাহবাগ কে কেন্দ্র করে যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল জানিনা ইতিহাস এই জাগরণকে কোন দৃষ্টিতে দেখবে কিন্তু এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্লগাররা ইসলাম সম্পর্কে যেসব কটুক্তি করেছে ইসলামপূর্ব জাহিলিয়াতের বর্বর সমাজেও এরূপ ইসলাম বিদ্বেষের নজীর পাওয়া যায়না। আরবের জাহিলী বর্বর সমাজের লোকেরা ইসলামের প্রচন্ড বিরোধীতা করা এবং মুসলমানদের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানোর পরও তারা হজ্ব, কাবাশরীফ, মহান আল্ল¬াহ এবং মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর চরিত্র নিয়ে কটুক্তি করে নাই। অথচ বাংলাদেশের মত একটি দেশে এই ঘৃণিত কাজগুলো অহরহ সংঘটিত হচ্ছে। সর্বশেষ লতিফ সিদ্দিকী টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী থাকা অবস্থায় একটু বেশি নগ্নভাবে ইসলামের উপর আক্রমণ করেছেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়ের্কে একটি অনুষ্ঠানে তিনি হজ্ব, তাবলীগ জামাত এবং মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটুক্তি করে বক্তব্য দিয়েছেন। অবশ্য তিনি এর আগে ২০০৯ সালে তৎকালীন পাটমন্ত্রী থাকা অবস্থায় বলেছিলেন, ধর্ম মদ ও তামাকের মত একটি নেশা। তার আপত্তিকর বক্তব্যে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত হয়েছেন। যার দরুণ তাকে মন্ত্রীত্ব সহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি এখন আমেরিকা থেকে দেশে না এসে শুনা যাচ্ছে তসলিমা নাসরিনের মত ভারতে অবস্থান করছেন।
তসলিমা নাসরিন ও লতিফ সিদ্দিকী সহ যারা ইসলাম সম্পর্কে কটুক্তি করেছেন তাদের অধিকাংশ পিতৃ পরিচয়ে মুসলিম এবং পিতৃপ্রদত্ত ইসলামী নাম ধারণ করেই ইসলাম সম্পর্কে কটাক্ষ করে চলেছেন। তাদের সকলের মধ্যে মতাদর্শগত একটা মিল থাকা সত্ত্বেও তারা কেবল বাক স্বাধীনতার খাতিরেই ইসলাম সম্পর্কে কটুক্তি করছেন তা নয় বরং তারা সবাই একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করে চলেছেন। আর তা হচ্ছে মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে দুর্বল করে ধর্মহীনতার ব্যাপক প্রসার ঘটানো। একাজে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মিডিয়া তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও চেতনাকে ইসলামের বিপক্ষে দাঁড় করানো এবং ইসলামের বিভিন্ন প্রতীক যেমন টুপি, দাঁড়ি, পাঞ্জাবী, বোরকা ইত্যাদিকে কলুষিত করে যুব সমাজের কাছে উপস্থাপন করার জন্য এদেশের কিছু কিছু মিডিয়া আদাজল খেয়ে লেগেছে। ইসলামপন্থীদের ধর্মান্ধ, মৌলবাদী, জঙ্গি ইত্যাদি বলে নানা অপপ্রচার চালিয়ে ইসলামকে কলুষিত করার কাজে নিয়েজিত আছে এই মিডিয়াগুলো। আর এরূপ নানা রকমের অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে এদেশের জনগণের বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশের ধর্ম বিশ্বাসকে দুর্বল করে দেয়া হয়েছে। ফলশ্র“তিতে আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মূল্যবোধের অবক্ষয় প্রতিনিয়ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এভাবে স্যামুয়েল হান্টিংটনের “সভ্যতার সংঘাত” তত্ত্বের কোন পরিকল্পনা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কি না এটাই হলো আশংকার বিষয়। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে নাস্তিকতা এবং ইসলাম বিদ্বেষ প্রবণতা বন্ধ করা প্রয়োজন এবং এ সংক্রান্ত যে আইন রয়েছে এই আইনকে যুগোপযোগী এবং আর কঠোর করা প্রয়োজন।
আজ জকিগঞ্জ মুক্ত দিবস ॥ একাত্তরের ২১ নভেম্বর শ্বাসরুদ্ধকর ১২ ঘণ্টা
জেড, এম, শামসুল
২১ নভেম্বর ১৯৭১ সালে এই দিনে জকিগঞ্জ থানা হানাদার মুক্ত হয় । দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্য দিয়ে ভারতীয় মিত্র বাহির সহযোগীতায় অসংখ্য আহত নিহতের মধ্য দিয়ে জকিগঞ্জ থানা সদর সহ আশ-পাশ এলাকা শত্র“ মুক্ত হয়। এই দিনের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার কথা স্মরণ হলে এখন আঁতকে উঠতে হয়। ঈদের দিন সন্ধ্যার পূর্বেই জকিগঞ্জে সুরমা ও কুশিয়ার নদী পার হয়ে মুক্তিবাহিনী বাংলার গ্রামে গ্রামে প্রবেশ করে। দীর্ঘ ২২৩ দিনের মধ্যে নদীর তীর কি ? নিজের বসত বাড়ীতে শান্তিতে ছিলাম না কোন মুর্হর্তে বিপদ আসবে। তা নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাতে হয়েছে মাত্র কিছু দিন পূর্বে স্থানীয় লোহার মহল গ্রামের ১২ জনকে ধরে নিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে ঘাতক বাহিনী। এর ২/৩ দিন পরেই এক জুম্মাবার আমার পিতাকে স্থানীয় রাজাকার ও পাঞ্জাবী সেনাবাহিনীর কুখ্যাত বশরাত ক্যাপন্টেন ও তার সহযোগিরা ভূঁইয়ার মোরা জামে মসজিদে প্রবেশ করে নামাজরত অবস্থায় আটক করে মুসল্লীদের সামনে চরম নির্যাতন চালায়। এ সময় স্থানীয় দালাল চক্রের কথা মত ১০ হাজার টাকা উৎকোচ দিয়ে ছাড়িয়ে আনলেও তবু শান্তি ছিল না। দালাল চক্র আমাকে বিচ্ছু নাম দিয়ে হত্যা করার চেষ্টা চালায়। তখন এলাকার কয়েক জন রাজাকার আমাদের জীবন রক্ষায় এবং পাঞ্জাবী ও দালাল চক্রের হাত থেকে লুকিয়ে রাখতে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। এ সময় অন্যান্য দিনের মত ঈদের দিন বাড়ীতে কিছু সময় কাটিয়ে সন্ধ্যার পূর্বেই বাড়ী থেকে পালিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে হঠাৎ আমার বাবার এক বিশ্বস্ত বন্ধুর ভাই জফি মিয়া, বাড়ীর উত্তর পাশে পেলে তিনি আমাদেরকে পালিয়ে না যাওয়ার জন্য উপদেশ দিলেন। এবং বললেন আজ যে ভাবেই হউক মুক্তিযোদ্ধারা জকিগঞ্জে অপারেশন চালাবে।
এই অপারেশন সফল হবে। সত্যি কিছুক্ষণ পর আমাদের বাড়ীর আশ-পাশে পরিচিত অপরিচিত ভিক্ষুক বেশি মুক্তি যোদ্ধাদের আনাগুনা দেখে বুঝতে দেরি হল না। যে মুক্তিযোদ্ধারা গ্রাম গঞ্জে প্রবেশ করে ফেলছে, তাই আমরা বাড়িতে ফিরে আসার পথে আমার পাশের গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ (হামিন্দ আলী), সহ কয়েক জন পেয়ে গেলাম। মনে অনেক সাহস হল। সন্ধ্যার সাথে সাথে বাড়ীতেই প্রবেশ করতেই দেখা হল স্থানীয় লোহার মহল, খাপনা, লামার গ্রামের, কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধা আমাদের নারিকেল গাছের নিচে বসে আমাদের অপেক্ষা করছেন।
রাত্রি ঘনার সাথে সাথে জকিগঞ্জের তিন দিক ভারত থেকে গুলি ও মর্টারের শব্দ ভেসে আসতে শুরু করল। নদীর তীরবর্তী বাড়ীগুলো থেকে লোকজন স্থাবর অস্থাবর জিনিসপত্র ফেলে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজতে শুরু করল। নদীর তীরে অবস্থিত ব্যাংকারগুলো ছেড়ে রাজাকার ও পাঞ্জাবীরা জকিগঞ্জ মুখি হয়ে স্থান ত্যাগ করতে শুরু করল। এ সময় জকিগঞ্জে ভিতর ও বাহির থেকে মরণ পণ যুদ্ধে ভোর ৫ টায় জকিগঞ্জ থানা সদর শত্র“ মুক্ত হয়। বিকাল ৫টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত এ ১২ ঘণ্টা হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের ডামাডোলে এবং জকিগঞ্জ এলাকা ভূমিকম্পের মত কম্পিত হয়ে উঠে ছিল। এ অবস্থায় জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধারা জকিগঞ্জ শত্র“ মুক্ত করে। এ সময় ভারতীয় মিত্রবাহিনী মেজর চমন লাল সহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা হতাহত হন। জকিগঞ্জ শত্র“ মুক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশ প্রেমিক জনতা ঘর ছেড়ে নদী তীরবর্তী অসংখ্য ব্যাংকারে হানা দেয়। এবং পাঞ্জাবী রাজাকারদের আটক করে। স্বাধীনতা প্রেমিক জনতার ভিড় জমে উঠে থানা সদরে এদিন আটগ্রামে হানাদার বাহিনীর সাথে মুখোমুখি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে অনেক হানাদার ও মিত্র বাহিনী মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণ হারান। ২২ নভেম্বর হানাদার বাহিনী কানাইঘাট এর দিকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। জকিগঞ্জ হানাদার মুক্ত হওয়ার পর ২২ নভেম্বর সকালে জকিগঞ্জ থানা সদরে প্রথম প্রবেশ করেন, তৎকালিন এম,পি, এম,এর লতিফ, ইছমত আহমদ চৌধুরী, আব্দুল মঈদ চৌধুরী, অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এদিন জকিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দাউদ হায়দারকে জকিগঞ্জের বেসামরিক প্রশাসক নিয়োগ করেন এবং শত্র“ মুক্ত এলাকায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে বীর মুক্তিযোদ্ধা স্পেশাল কমান্ডার এনাম চৌধুরী কে প্রধান করে মুক্তিযোদ্ধা স্পেশাল কমান্ডার মাসুক উদ্দিন আহমেদকে উপপাদান, ও খলিল উদ্দিনকে সহকারী কামান্ডার নিয়োগ করে প্রশাসনিক কর্মকান্ড শুরু করা হয়। এদিনে জকিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঘোষণা করা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধে জকিগঞ্জই প্রথম মুক্ত অঞ্চল। এদিন আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও প্রশাসক নিয়োগ এভাবে সম্পূর্ণ হয়েছিল। এদিনই জকিগঞ্জ হানাদার বাহিনীর সাথে লড়াইয়ের শেষ ঘণ্টা বাজল।
লেখক পরিচিতি : মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক মুক্তিদিবস উদযাপন পরিষদ সিলেটের আহবায়ক। বিশিষ্ট সাংবাদিক।
রিকাবীবাজারে সৈনিক ক্লাব থেকে ৮ জুয়াড়ী আটক ॥ সাড়ে ৫২ হাজার টাকা উদ্ধার
স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর রিকাবীবাজার থেকে ৮ জুয়াড়ীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় জুয়ার আসর থেকে সাড়ে ৫২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। গতকাল বুধবার পুলিশ আটককৃত ৮ জুয়াড়ীকে সিলেটের হাকিম আদালতে হাজির করে। পরে আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হচ্ছে- নগরীর ভাতালিয়ার ২
ইয়াবা ও জেনসিডিলসহ ২ বিক্রেতা গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর শিবগঞ্জ থেকে যৌন উত্তেজনা ইয়াবা ট্যাবলেট ও জেনসিডিলসহ ২ মাদক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- নগরীর শিবগঞ্জ সাদিপুর ৪২ নং বাসার মৃত আব্দুল খালিকের পুত্র লায়েক আহমদ (৫০) ও শাহপরান থানার মেজরটিলা ইসলামপুর পুরবী ৪১/১ নং বাসার মৃত বশার আলীর পুত্র নুর আলী (২৭)। গতকাল বুধবার পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের আদালতে হাজির করে। পরে আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।