সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন : সিলেটে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া স্ত্রী সন্তান পরিচয়ে ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

নগরীর সুবিদবাজার বনকলাপাড়া নুরানী আবাসিক এলাকার এক বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী-সন্তান পরিচয় দিয়ে ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর ৩১ বছর পর এক মহিলা নিজেকে স্ত্রী দাবি করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার সৈয়দ তছির আহমদের পুত্র সৈয়দ আবু শাহিন আজাদ খোকন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, জনৈক রবই মিয়ার মেয়ে শিমলি বেগম ও তার মা সামসুন তার মৌরসী সম্পত্তি গ্রাস করার উদ্দেশ্যে জাল দলিলসহ কাগজাদি তৈরি করে বিভিন্ন দফতরে জমা দেয়। এসব কাগজাদি ভ‚য়া ও জাল উল্লেখ করে তিনি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে মামলাও দায়ের করেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনেও তাদের কাগজপত্র ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। এছাড়া হয়রানির উদ্দেশ্যে সামসুন নাহার সমছুন বাদী হয়ে মিথ্যা অভিযোগে সৈয়দ আবু শাহিন আজাদ খোকনসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করলে পিবিআই তদন্ত করে সেটিরও কোন সত্যতা পায়নি মর্মে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সৈয়দ আবু শাহিন আজাদ খোকন আরো জানান, তার বীর মুক্তিযোদ্ধা পিতা মারা যাওয়ার ৩১ বছর পর সমছুন তার পিতার স্ত্রী দাবি করছেন। এমনকি শিমলি বেগম নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে বলে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এসব কাজে তাদের সহযোগিতা করছেন বিয়ানীবাজারের চন্দরপুর গ্রামের কলমদর আলীর ছেলে ময়না মিয়া, মৃত ওয়াতির আলী কুটি মিয়ার ছেলে মজির উদ্দিন লেদন, বেদন মিয়া ও সিরাজ মিয়া।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের সম্পত্তিতে অংশীদার হওয়া এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে নাম তালিকাভুক্তির জন্য এ ধরনের ভ‚য়া উত্তারাধিকারী সনদ তৈরি করেছেন সমছুন চক্র। বিশেষ করে শিমলি তার সঠিক পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন কাগজাদিতে একেকবার একেকজনকে পিতা হিসেবে উল্লেখ করে আসছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই সমছুন চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।

জনগণ যাতে সকল ক্ষমতার মালিক হতে পারেন তেমন দেশ গড়তে চাই

কাজির বাজার ডেস্ক

অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা বৈষম্যহীন, শোষণহীন, কল্যাণময় এবং মুক্ত বাতাসের যে স্বপ্ন নিয়ে রাষ্ট্রকে স্বাধীন করেছিলেন, আমি তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা এখন থেকে বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে চাই যেখানে সত্যিকার অর্থে জনগণই হবে সকল ক্ষমতার মালিক।
বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো ওপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না; এই ধারনা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
বিশ্ব দরবারে মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখব। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হবে পারস্পরিক সম্মান, আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা। জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলা এবং বৈশ্বিক শান্তি ও অর্থনীতি সুসংহতকরণে আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ফলে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও পরিচিতি লাভ করেছে। দেশ স্বাধীন করার মহান ব্রত নিয়ে ‘৭১ এর ২৫ মার্চ কাল রাত থেকে বাঙ্গালী সেনারা সেনানিবাস ত্যাগ করে সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। একই সাথে এই দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র জনতা সাধারণ মানুষ সকলেই যার যা কিছু আছে তাই নিয়েই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি। পরবর্তীতে যা একটি জনযুদ্ধে রূপ নেয়। আমাদের মা বোনেরা মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণসহ বিভিন্নভাবে যুদ্ধে সহযোগিতা করেছেন।’
সরকার প্রধান বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া সকল বাহিনীকে ‘বাংলাদেশ ফোর্সেস’ নামে সাংগঠনিক রুপ দেয়া হয়। সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে যুদ্ধ পরিচালিত হয়। মাত্র ২টি গান বোট ‘পদ্মা’ ও ‘পলাশ’ নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জলপথে যুদ্ধ শুরু করে। এছাড়াও পাকিস্তান নৌবাহিনীতে কর্মরত বাংলাদেশি সাবমেরিনার এবং নাবিকদের সমন্বয়ে গড়ে তোলা অকুতোভয় নৌ কমান্ডোদল ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামক দুঃসাহসিক অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন নদী বন্দরে খাদ্য ও রসদ বোঝাই শত্রæ জাহাজ ডুবিয়ে দিতে সক্ষম হয়।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন, ‘বিমান বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত ‘কিলো ফ্লাইট’ চট্টগ্রাম ও নারায়নগঞ্জের জ্বালানি ডিপোসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সফল অভিযান পরিচালনা করে। মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর এই অবদানকে সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগের সঙ্গে একীভ‚ত করার উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ২১ নভেম্বর পালিত হয় সশস্ত্র বাহিনী দিবস।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অকুতোভয় সদস্য এবং বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ সম্মিলিতভাবে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ সূচনা করে। সেই আক্রমণের ফলে আমাদের বিজয় ত্বরান্বিত হয় এবং ফলশ্রæতিতে আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করি।
স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী বীর শহিদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আজ গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সকল বীর শহিদদের এবং মহান আল্লাহর দরবারে আমি তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আমি সকল শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য এবং সম্মানিত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের এই আয়োজনে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে যে সকল খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীগণ উপস্থিত আছেন তাদের জন্যেও রইল আমার বিনীত শ্রদ্ধা।’
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা চলমান রয়েছে। সময়ের আবর্তে অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা আজ বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদ্যাপনকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী যে উদ্যোগ প্রতিবছর নিচ্ছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এ জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
ড. ইউনূস বলেন, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত ও অনুপ্রাণিত। নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যত গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদেরকে দিয়েছে তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি। অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে
আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের উত্তরাধিকারীদের কল্যাণার্থে যা কিছু প্রয়োজন তা করার জন্য আমরা দৃঢ় প্রত্যয়ী এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

নারীদের স্বাবলম্বী করতে ইকরার উদ্যোগ প্রশংসনীয় : বিভাগীয় কমিশনার

বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ সিদ্দিকী এনডিসি বলেছেন, ইকরার উদ্যোগে সেলাই মেশিন ও হুইল চেয়ার বিতরণ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। মানুষকে স্বাবলম্বী করে তোলার চেষ্টাই প্রকৃত মানবসেবা। ইকরা ইন্টারন্যাশনাল নারীকে স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে এই সংস্থা মানবতার কল্যাণে বিশেষ করে প্রতিবন্ধী মানুষের সেবায় কাজ করছে জেনে আমি আনন্দিত।
তিনি বলেন, এ ধরনের মানবহিতৈষী কাজে সরকারের পক্ষ থেকেও সহযোগিতা করা প্রয়োজন। তিনি এই বিশাল কার্যক্রমের কর্ণধার মুকতাবিস-উন-ন‚র এর ভ‚য়সী প্রশংসা করে বলেন, তাঁর সাথে আমার পরিচয় স্বল্প দিনের। আমার মনে হয়েছে তিনি অতি সহজেই যে কাউকে আপন করে নিতে পারেন। অসাধারণ সম্মোহনী শক্তি তাঁর।
২০ নভেম্বর বুধবার দুপুরে ইকরা প্রতিবন্ধী হাসপাতাল সিলেটে আয়োজিত সেলাই মেশিন ও হুইল চেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
ইকরা ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ চ্যাপ্টার এর চেয়ারম্যান মুকতাবিস-উন-ন‚রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইকরা ইন্টারন্যাশনাল ইউকে’র ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ, লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম বাসন, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও প্রভাতবেলা সম্পাদক কবীর আহমদ সোহেল, ইকরা’র পাবলিসিটি সেক্রেটারি ও চ্যানেল এস এর সিলেট ব্যুরো প্রধান মঈন উদ্দিন মনজু প্রম‚খ। অনুষ্ঠানে ৫০ টি সেলাই মেশিন ও ৭ টি হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে বিভাগীয় কমিশনার ইকরা প্রতিবন্ধী হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে যুক্তরাজ্য থেকে আগত ইকরার ট্রেজারার রোকেয়া বেগমও উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত সেলাই মেশিনপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যে ৭ জন অমুসলিম সুবিধাভোগী রয়েছেন। বিজ্ঞপ্তি

ছাতকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে গৃহবধূ আত্মহত্যা

ছাতক সংবাদদাতা

সুনামগঞ্জের ছাতকের কৈতকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আছমা বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। নিহত আছমা রাজনপুর গ্রামের কাতার প্রবাসী মিলাদ হোসেনের স্ত্রী। তার পিতার বাড়ি উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের চেচান মাঝপাড়া গ্রামে। বুধবার দুপুরে উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের কৈতক এলাকার রাজনপুর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, দুপুরে পরিবারের লোকজনের অজান্তে বসতঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন আছমা। তাৎক্ষণিক তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। খবর পেয়ে জাউয়াবাজার তদন্ত কেন্দ্রের এসআই শফিকুর রহমান মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন।

 

 

 

দক্ষিণ সুরমায় এক ব্যক্তির সাড়ে ৮ লাখ টাকা ছিনতাই

স্টাফ রিপোর্টার

দক্ষিণ সুরমায় এক ব্যক্তির সাড়ে ৮ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে ছিনতাইকারীরা। বুধবার বেলা ১১ টার দিকে মোগলাবাজার থানার বটেরতল এলাকায় এ ছিনতাইর ঘটনা ঘটে। ছিনতাইর শিকার হুমায়ূন আহমেদ (২৫) বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের মুকুট মিয়ার ছেলে। তিনি কানাডা যাওয়ার জন্য নগরীর আম্বরখানায় একটি এজেন্সিতে ওই টাকাগুলো জমা দিতে আসছিলেন। জানা যায়, বুধবার সকালে নগরীর আম্বরখানা এলাকায় একটি এজেন্সিতে কানাডার যাওয়া জন্য সাড়ে ৮ লাখ টাকা জমা দিতে একটি সিএনজি অটোরিকশায় যোগে বাড়ি থেকে রওনা দেন হুমায়ূন। বেলা ১১দিকে মোগলাবাজার থানার বটেরতল এলাকায় গাড়িটি পৌঁছলে একটি মোটরসাইকেলে থাকা দুই জন গাড়ীর গতিরোধ করে তার কাছ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি। পরে টাকা উদ্ধারে মোগলাবাজার থানার দ্বারস্থ হন ভুক্তভোগী হুমায়ূন। মোগলাবাজার থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনায় হুমায়ূন নামের এক ব্যক্তি থানায় অভিযোগ করেছেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমরা সিএনজি চালকসহ আশপাশের লোকজনের সাথে কথা বলছি। বিস্তারিত পরে জানানো যাবে।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি এন্ড মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, আম্বরখানায় একটি এজেন্সিতে টাকা জমা দিতে আসার সময় হুমায়ূন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ এসেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। কিভাবে ছিনতাই হয়েছে, টাকার পরিমান তা আমরা বের করার চেষ্টা করছি।

খাসদবিরে ৬ লক্ষাধিক টাকার চোরাই চিনি জব্দসহ আটক ২

স্টাফ রিপোর্টার

নগরীর খাসদবির থেকে ৬ লক্ষাধিক টাকার চোরাই চিনিসহ দুজনকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চিনিসহ তাদেরকে আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- গোয়াইনঘাট উপজেলার পাতনী (রুস্তমপুর) গ্রামের মো. বিলাল উদ্দিনের ছেলে মো. রুবেল আহমদ (২০) ও একই উপজেলার বিছনাকান্দি গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে সাইদুল ইসলাম (২৪)।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) মিডিয়া অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান- মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে এয়াপোর্ট থানার খাসদবির এলাকা থেকে ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার ১০৫ বস্তা (৫২৫০ কেজি) চিনি জব্দ করে। এসময় রুবেল ও সাইদুলকে আটক করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরপূর্বক আদালতে প্রেরণ করা হয়।

তিন মাসে প্রায় ২ হাজার মামলা

 

কাজির বাজার ডেস্ক

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত তিন মাসে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় দুই হাজার ২০০ মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, পতিত সরকারের সহযোগী হিসাবে চিহ্নিত আমলা, ব্যবসায়ী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক-বর্তমান সদস্যদের আসামী করা হয়েছে। এদের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ২৫ পুলিশসহ ১১০ হাই প্রোফাইল ব্যক্তিকে। এছাড়া বিভিন্ন মামলায় আরও প্রায় ১৫ হাজার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অক্টোবরেই গ্রেফতার করা হয় প্রায় ছয় হাজার আসামীকে। অপরদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অভিযানে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে গত তিন মাসে চার হাজার ৭১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে আগস্টে ৯১১, সেপ্টেম্বরে এক হাজার ১৪২ এবং অক্টোবরে দুই হাজার ৬৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, গ্রেফতারের জন্য শতাধিক পুলিশ সদস্য ও কয়েকশ আওয়ামী লীগের হাই প্রোফাইল নেতাকে খুঁজছে পুলিশ। যাদের খোঁজা হচ্ছে তাদের নামে বেশ কয়েকটি করে মামলা আছে। এদের কেউ কেউ ইতোমধ্যেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে এ পর্যন্ত যেসব পুলিশ সদস্য গ্রেফতার হয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন-সাবেক আইজিপি একেএম শহিদুল হক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ হিল কাফি, ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, ডিএমপি ডিবির সাবেক উপকমিশনার মশিউর রহমান, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, গুলশানের সাবেক ওসি মাজহারুল ইসলাম, গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার ইফতেখার মাহমুদ, ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) তানজিল আহমেদ, এসপি শাহেন শাহ, অতিরিক্ত এসপি রফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন হোসেন, এসআই শাহাদাত আলী, কনস্টেবল শোয়াইবুর রহমান, নায়েক সজিব সরকার, কনস্টেবল বায়েজিদ বোস্তামী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল রানা, অতিরিক্ত ডিআইজি মহিউদ্দিন ফারুকী, মিরপুর বিভাগের সাবেক ডিসি জসিম উদ্দিন, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অলেপ উদ্দিন প্রমুখ।
গ্রেফতার তালিকায় থাকা পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে আছেন-সাবেক অতিরিক্তি আইজিপি (সাবেক এসবি প্রধান) মনিরুল ইসলাম, সাবেক র‌্যাব ডিজি হারুন অর রশীদ, ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার, ডিএমপি ডিবির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, সাবেক যুগ্ম-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, এসএম মেহেদী হাসান, ওয়ারী বিভাগের সাবেক ডিসি ইকবাল হোসাইন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, সিআইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া, সাবেক অতিরিক্ত আইজি লুৎফর কবির, জামিল আহম্মেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন, ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সিটিটিসির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান, সিটিটিসির সাবেক যুগ্ম-কমিশনার কামরুজ্জামান, সাবেক ডিআইজি রিপন সরদার, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জেয়াদ্দার, সাবেক যুগ্ম-কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মারুফ হোসেন সরদার, ডিএমপি ডিবির সাবেক যুগ্ম-কমিশনার সঞ্জিত কুমার রায়, ডিএমপি ডিবি রমনা বিভাগের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, সাবেক ডিসি (হেডকোয়ার্টার্স) তানভির সালেহীন ইমন, ডিবির সাবেক ডিসি রাজিব আল মাসুদ, উপকমিশনার মাহফুজুল আল রাসেল, জাহিদুল হক তালুকদার, হায়াতুল ইসলাম, আশরাফুল আজিম, এইচএম আজিমুল হক, হাফিজু আল ফারুক, মাহাবুব-উজ-জামান, জাফর হোসেন, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নুরুল আমিন, গোবিন্দ চন্দ্র, শাহেন শাহ, হাফিজ আাল আসাদ, মুহিত কবির সেরনিয়াবাত, শহিদুল ইসলাম, হাসান আরাফাত, নাজমুল ইসলাম, সাব্বির রহমান, আফজাল হোসেন টুটুল, ফজলে এলাহী, রওশানুল হক সৈকত, শাকিল মোহাম্মদ শামীম, সহকারী কমিশনার (এসি) রেফাতুল ইসলাম রিফাত, শাহীনুর রহমান, শহীদুল হক, মিজানুর রহমান, তানজিল আহমেদ গোলাম রুহানী, সাবেক ওসি আমিনুল ইসলাম, শাহীনুর রহমান শাহীন, খন্দকার হেলাল উদ্দিন, মাহাবুব রহমান, ফরমান আলী, মাহফুজুল হক ভ‚ঁইয়া, শিকদার মো. শামীম হোসেন, সেলিমুজ্জামান, পলয় কুমার সাহা, আতিকুর রহমান মসিউর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক নাজমুল হাসান রনোজিত রায়, মেহেদী হাসান, ফায়োত উদ্দিন রক্তিম, জাকির হোসেন, আতিকুল হক, রবিউল ইসলাম, মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, আবুল বশার, এসআই অমিতাভ দর্জি, মামুন মাতব্বর, আশরাফুল সিকদার, শাহাদাৎ আলী, কাউসার আহম্মদ খান, নূরে আলম মিয়া, মাসুম বিল্লাহ, মো. বশির, রাজিব চন্দ্র সরকার, মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম, এএসআই শাহরিয়ার আলম প্রমুখ।
তিন মাসে গ্রেফতার হওয়া ভিআইপিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান, সাবেক এমপি সাদেক খান, জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহায়েল, সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, দেশ টিভির এমডি আরিফ হাসান, সাবেক এমপি ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভু, অভিনেত্রী শমী কায়সার, গান বাংলা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান কৌশিক হোসেন তাপস, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, আব্দুস শহীদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ পরিবারের সদস্য হাসনাত আব্দুল্লাহর ছেলে মঈন আব্দুল্লাহ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম মিলন, সাবেক মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও উপদেষ্টা কামাল নাসের চৌধুরী, সাবেক সচিব মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ, বিএবির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, বসুন্ধরা গ্রæপের কো-অর্ডিনেটর নাসিম আদনান, সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল জ্যাকব, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক এমপি এমএ আউয়াল, সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী, সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।
পুলিশ মহাপরিদর্শক ময়নুল ইসলাম বলেন, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল তাদের অনেককেই আমরা ইতোমধ্যে আইনের আওতায় এনেছি। যেসব আসামীকে এখনো গ্রেফতার করা যায়নি, তাদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

সড়ক সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়নে সিসিক পেল মাত্র দুই কোটি টাকা

কাজির বাজার ডেস্ক

২০২২ সালের বন্যায় পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল সিলেট মহানগরীর বেশিরভাগ সড়ক। সেই ক্ষততে প্রলেপ লাগার আগেই ২০২৪ সালে ফের বন্যায় আক্রান্ত হয় সিলেট। বন্যায় ক্ষতবিক্ষত সড়ক সংস্কারে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ৫৮৮ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দিয়েছিল মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু বরাদ্দ মিলেছে মাত্র ২ কোটি টাকা। অর্থ সংকটে মহানগরের বেহাল সড়কে লাগেনি সংস্কারের ছোঁয়া। ফলে খানাখন্দ আর ভঙ্গুর সড়কের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। সিসিক সূত্র জানায়, ২০২২ সালের এপ্রিল ও জুন মাসে দুইদফা বন্যায় আক্রান্ত হয় সিলেট নগরী। দীর্ঘমেয়াদী বন্যায় সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকার সড়ক অনেক দিন ধরে পানিতে নিমজ্জিত ছিল। বন্যার পানি নেমে গেলে বেহাল হয়ে পড়ে প্রায় ২১০ কিলোমিটার সড়ক। উপরের পিচ ওঠে গিয়ে কোথাও কোথাও পাথর বের হয়ে আসে। কোন কোন সড়কে তৈরি হয় বড় বড় খানাখন্দ। ফলে ওইসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। গর্তে পড়ে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটতে শুরু করে। সড়ক মেরামতের জন্য বন্যার পর সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রথমে ৪২২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই প্রকল্পের মধ্যে ২০১ কিলোমিটার সড়ক ছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া কুশিঘাট পানি শোধনাগারের দেড় কিলোমিটার আরসিসি ওয়াল, ৩০ কিলোমিটার ফুটপাতের বøক ও ৫ হাজার বৈদ্যুতিক খুঁটি মেরামতের কাজ অন্তভর্‚ক্ত ছিল। পরবর্তীতে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পেলে রি-শিডিউল করে পুনর্মূল্যায়ন করে ৫৮৮ কোটি টাকার সংশোধিত প্রকল্প জমা দেওয়া হয় মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ মিলে মাত্র ২ কোটি টাকা।
এদিকে, ২০২৪ সালের বন্যায় ফের ক্ষতিগ্রস্থ হয় নগরীর সড়ক। নতুন করে ৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে পাঠানো হয় প্রকল্প। ৪৮ কোটি টাকার এসপল্ট ও সমপরিমাণ টাকার আরসিসি সড়ক সংস্কারের জন্য এই টাকা চাওয়া হলেও কোন বরাদ্দ পায়নি সিসিক।
নগরী ঘুরে দেখা গেছে কালিঘাট, কদমতলী বাসটার্মিনাল, পাঠানটুলা, শিবগঞ্জ, শিববাড়ি, হুমায়ূন রশিদ চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে। কোন কোন সড়কের পিচ ওঠে গ্রামীণ সড়কে রূপ নিয়েছে। খানাখন্দে ভরা সড়ক দিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। পথচারীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই বেহাল সড়কগুলোর কারণে।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, বরাদ্দ না পাওয়ায় সড়কগুলো মেরামত করা সম্ভব হয়নি। নগরবাসীর সুবিধার্থে ক্ষতিগ্রস্থ সড়কগুলোর খানাখন্দ ভরাট ও যৎসামান্য সংস্কার করা হয়েছে। ঠেকসই মেরামত করতে না পারায় সংস্কারকৃত সড়কগুলো কয়েকদিন পর পর ফের বেহাল হয়ে পড়ছে। ফলে জনদুর্ভোগ লাঘব করা সম্ভব হচ্ছে না। মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ না দেওয়ায় নিজস্ব খাতের অর্থায়ন থেকে ‘ঠুকঠাক’ সংস্কার করা ছাড়া কিছুই করার নেই সিটি করপোরেশনের।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, সিলেট সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন নগরীর ১০৬৮ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২০১ কিলোমিটার। ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক, ফুটপাতের বøক, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও পানি শোধনাগারের আরসিসি ওয়াল মেরামতের জন্য মন্ত্রণালয়ে ৫৮৮ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দেওয়া হলেও বরাদ্দ মিলেছে মাত্র ২ কোটি টাকা। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক মেরামত সম্ভব হয়নি।

নির্বাচনি বিধি-বিধানের সীমাবদ্ধতা দূর করা দরকার : বদিউল আলম

কাজির বাজার ডেস্ক

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, একটা বিষয় সুস্পষ্টভাবে এসেছে। সেটা হলো আমাদের আইনকানুন, বিধিবিধানের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেগুলো দূর করা দরকার। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রয়োগ।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ড. বদিউল আলম মজুমদার এসব কথা বলেন। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, নির্বাচন কমিশনকে সংবিধান ও আদালতের মাধ্যমে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আপিল বিভাগের একটা রায়ে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা আছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের খাতিরে তারা বিধি-বিধানের সংযোজনও করতে পারে। অগাধ ক্ষমতা দেওয়া ছিল। তবে এটার প্রযোগে সমস্যা ছিল। এই সমস্যাটা দূর করতে হবে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিবের নেতৃত্ব কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা মতবিনিময় করেছি। উনারা আগে নির্বাচন করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন। উনারা অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। কী বিষয়ে আমাদের মনোযোগ দেওয়া দরকার এবং অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার, সে মতামত নিয়েছি। খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। উনারা অনেকগুলো বিষয় আলোকপাত করেছেন। সুস্পষ্ট বিষয়ে আমাদের তারা লিখিত দেবেন। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।
ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেন, একটা হাইপ্রোফাইল সংস্কার কমিশন এখানে কাজ করছে। এজন্য সম্মান বোধ করছি। সহকর্মীরা আমাদের সহায়তা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। কারণ এটা আমাদের অঙ্গীকার। সংবিধানেরও অঙ্গীকার হলো গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ নিশ্চিত করা। এটা নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানই দায়িত্ব দিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। এটা মনে রাখতে হবে এটা সংস্কার… এখানে অনেকগুলো ভালো জিনিস আছে। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে যে দুর্বলতা আছে আমরা সেগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। মাঠের অভিজ্ঞতা থেকে গণমাধ্যমসহ অংশীজনের কী অভিজ্ঞতা আছে, আমরা সেগুলো নিয়েও আলোচনা করেছি। হস্তক্ষেপ কোত্থেতে কীভাবে হয় এবং আইনগত কর্তৃত্বের বাইরে নির্বাচনকে কেউ হস্তক্ষেপ করে, এগুলো নিয়ে আমরা খোলামেলা আলোচনা করেছি। কোনো ধরনের রাখঢাক করিনি, যাতে সংস্কার কার্যক্রম ফলপ্রসূ হয়। আলটিমেটলি মানুষের আশা যেটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য যা যা করা দরকার, সে সমস্ত সুপারিশ আমরা করেছি। আমরা আশা করি কমিশন যদি সদয় হয়, আমরা আমাদের সুপারিশগুলো আরো কংক্রিট আকারে দিতে পারবো।
নির্বাচন কমিশন সচিব বলেন, সুনির্দিষ্টভাব আমরা যেটা বলেছি, নির্বাচন কমিশন তো নির্বাচন একা করে না। সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রের সমস্ত অর্গান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করে। নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে সংবিধান ও আইনে; সেই ক্ষমতা যেন পুরোপুরি প্রয়োগ করা যায়। আইনের প্রয়োগ কিন্তু পুরোপুরি হয় না। আইনের প্রযোগ করার ক্ষেত্রে যাতে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশনাররা, নির্বাচন কর্মকর্তারা কোনো ধরনের কোনো কর্তৃপক্ষ দ্বারা বাধাগ্রস্ত না হন, অন্য কেউ যাতে এখানে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, আমাদের সেই সুপারিশ আছে।

সিলেট সীমান্তে ৭০ লাখ টাকার পণ্য জব্দ

স্টাফ রিপোর্টার

বিজিবি সিলেট সেক্টরের অধীনস্থ সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) এর পৃথক অভিযানে ৭০ লাখ টাকার চোরাই পণ্য আটক করা হয়েছে।
বুধবার সকালে সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮-বিজিবি) এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। চোরাই পণ্যের চালান জব্দের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান, পিএসসি। বিজিবি’র প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২০ নভেম্বর) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮-বিজিবি) এর দায়িত্বাধীন সিলেট এবং সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশী রসুন, সুপারি, ভারতীয় মোটরসাইকেল এবং অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী নৌকাসহ অন্যান্য ভারতীয় পণ্য আটক করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৭০ লাখ ৩ হাজার ৯০০ টাকা। সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান, বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি’র অভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চোরাচালানের মাধ্যমে আনা মালামাল জব্দ করা হয়।