বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আইন মেনে চলতে হবে

5

 

দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়মের মধ্যে আনতে ২০১০ সালে পাস হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন। কিন্তু দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কি এই আইনটি মেনে চলছে? আইন মেনে চললে তো ২০১০ সালের আইনটি নিয়ে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করতে হতো না। বরং এমন অভিযোগ রয়েছে যে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদ ফাঁকা রেখে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, নিয়োগে স্বজনপ্রীতি এবং প্রশাসনিক অনিয়ম বাড়ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব অনিয়ম রোধে আইনের প্রয়োগ কঠোর ও দ্রæততম করতে আইনটি সংশোধন করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানালে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির পক্ষ থেকে সংশোধনীর একটি খসড়া প্রস্তুত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে সুপারিশের জন্য পাঠানো হয়েছে। খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে হবে। এসব পদ ফাঁকা রাখা যাবে না। দেরি হলে বা গড়িমসি করলে এসব পদে নিয়োগ দেবে সরকার। খসড়া আইন অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগে আচার্যের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে প্রস্তাব পাঠাতে হবে। আচার্যের কাছে এই প্রস্তাব পাঠাবে ইউজিসি।
দেশে প্রতিবছর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে যে হারে যোগ্য শিক্ষার্থী বেরিয়ে আসেন, তাঁদের সবার জায়গা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় না। আবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেলেও অনেকে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বিষয়ে লেখাপড়া করার সুযোগ পান না। এই শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই চলে যান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীদের চাহিদা সন্নিবেশ করে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠা শুরু হয় ১৯৯২ সাল থেকে। দেশের মোট অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখন ১১১টি। এর মধ্যে ১০৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পাঠদান কার্যক্রম চলছে ১০২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩১টির উপাচার্য নেই, ৩৬টিতে কোষাধ্যক্ষ নেই।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনীহা যে মূল কারণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর গবেষণার তেমন সুযোগ নেই। শিক্ষা এখানে বাণিজ্যÑএমন অভিযোগ অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে।
আমরা মনে করি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই আইন মেনে চলা উচিত। আইন অমান্যকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে।