ডলার সংকট, পুরোনো উদ্যোগেই নতুন বছরের আশা

4

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিদায়ী বছরজুড়ে ডলারের বাজার অস্থির ছিল। বছর শেষে ডলারের প্রধান জোগান রেমিট্যান্স প্রবাহে টান পরিস্থিতিকে নাজুক করে দেয়।
পরিস্থিতি উন্নয়নে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়ায় ইতিবাচক ফল পাওয়া শুরু হয়। নতুন বছরে এসব উদ্যোগ অর্থনীতিকে পুরোপুরি স্থিতিশীল করবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থনীতিবিদরা।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বৈশ্বিক মূল্য পরিস্থিতি অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে আমদানি ব্যয়। যুদ্ধের আগের একই পণ্য যুদ্ধের দুই মাসের মাথায় আমদানি করতে ব্যয় বেড়ে যায় ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত। যা প্রবাসী আয়, রপ্তানি আয় ও বৈদেশিক সাহায্যের মাধ্যমে আসা ডলারে যোগান দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। সঙ্গে কমতে থাকে প্রবাসী আয়। দেশের অভ্যন্তরীণ মূল্যস্ফীতি জীবনযাত্রাকে অসহনীয় করে তোলে। বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চায়ন (রিজার্ভ) ছেড়ে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। এতে হিতে বিপরীত হয়। বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চায়ন নামে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে, যা কয়েক মাস আগেও ৪৮ বিলিলন ডলার ছিল।
এ সময় বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। নাভিশ্বাস ওঠে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের। স্মরণকালের মূল্যস্ফীতির ঘটনা ঘটে। অতিক্রম করে যায় ৯ শতাংশ। নিত্যপণ্যের বাজারকে অস্থির করে তোলে কালোবাজারি ও মজুতদাররা। আর হুন্ডি ও পাচারকারীদের কারণে উত্তপ্ত হয় আর্থিক বাজার।
পরিস্থিতি সামাল দিতে এ সময় অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে লাগাম টানে বাংলাদেশ ব্যাংক। শুরু হয় পণ্য আমদানিতে খোলা এলসির পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা এবং প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে নানামুখী উদ্যোগ। একই সঙ্গে চলতে থাকে ডলারের কারসাজি রোধে সমন্বিত উদ্যোগ। কিছু উন্নতি হলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি ডলারের বাজার। এ সময় পাঁচ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল ও প্রায় অর্ধ শতাধিক প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এরই মধ্যে শুরু হচ্ছে নতুন বছর। পরিস্থিতির উন্নতি নতুন বছরে অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, পরিস্থিতির উত্তরণে যে সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে। নতুন বছরে মাঝামাঝির আগেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে সতর্ক প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের।